বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) প্রচন্ড গরম পড়ায় বোর্নমাউথ সী-বীচ ভরে যায় সমুদ্র বিলাসী মানুষে। মানুষের উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে পুলিশের রীতিমত বেগ পেতে হয়।মাতাল হয়ে মারামারির ঘটনাও ঘঠেছে সেখানে।
করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্য-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের বোর্নমাউথ শহরের জনপ্রিয় একটি সমুদ্র সৈকতে হাজার হাজার মানুষের সমাগমের পর কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে ‘মেজর ইসেডেন্ট’ বা ‘বড় অঘটন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বোর্নমাউথ, ক্রাইস্টচার্চ ও পুল (বিসিপি) পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছরের সবচেয়ে উষ্ণতম দিনটি উপভোগের জন্য বোর্নমাউথ ও স্যান্ডব্যাঙ্কসের সৈকতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছে।
করোনা মহামারির কারণে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হলেও তা উপেক্ষা করে বোর্নমাউথ শহরে প্রচুর গাড়ি ও সূর্যস্নানকারী জড়ো হয়। এর ফলে সেখানে অবৈধ গাড়ি পার্কিং, অসামাজিক আচরণ দেখা যায় এবং তৈরি হয় অচলাবস্থার। সৈকত এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ৪০ টনের বেশি বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
বিসিপি পরিষদের প্রধান ভিক্কি স্লেইড বলেছেন, তিনি এই দৃশ্য দেখে একেবারে হতবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, এতসংখ্যক মানুষের দায়িত্বহীন আচরণ এবং কর্মকাণ্ড একেবারে বেদনাদায়ক। প্রত্যেককে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করতে গিয়ে আমাদের পরিষেবাগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
বিসিপির এই কর্মকর্তা বলেন, সৈকতের এই ঘটনাকে বড় অঘটন হিসেবে ঘোষণা দেয়া ছাড়া আমাদের হাতে এখন আর কোনও পথ খোলা নেই। আমরা জরুরি মোকাবিলা তৎপরতা শুরু করছি। তিনি বলেন, আমাদের সৈকতগুলো- বিশেষ করে বোর্নমাউথ এবং স্যান্ডব্যাঙ্কসের গত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার দৃশ্য থেকে আমরা একেবারে হতভম্ব।
ব্রিটেনে নতুন করোনাভাইরাসের বিস্তারের গতি ধীর করতে গত মার্চ থেকেই সামাজিক দূরত্বের বিধান কার্যকর রয়েছে। তবে আগামী ৪ জুলাই থেকে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ শিথিল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।
বার এখনও বন্ধ থাকলেও অনেক মানুষ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে কিংবা মদ্যপান করতে দেশটির পার্ক এবং সৈকতে যাচ্ছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২ মিটার সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭ হাজার ৯৮০ জন এবং মারা গেছেন অন্তত ৪৩ হাজার ২৩০ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার পর তা বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা কোটি ছুঁতে চলেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৯৬ লাখ ২৩ হাজার এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৭ হাজারের বেশি।
সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স।