অবশেষে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সেই মুক্তিযোদ্ধার কন্যা লয়লা বেগমের পরিবারের। ঝড়ের তাণ্ডবে ঘর ভেঙে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা। অবশেষে ঘর হারানোর ৭ দিনের মধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরানের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যই স্বামী-সন্তানদের নিয়ে নতুন ঘরে উঠেছেন প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করা এই নারী।
বুধবার (২৪ জুন) সকালে সরেজমিনে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর গ্রামের বসতবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ঘরে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে স্বস্তিতে বসবাস করছেন লয়লা বেগম। নবনির্মিত টিনশেডের এ ঘরের ফ্লোর পাকা, পাকা বারান্দা ও বাথরুম রয়েছে। নতুন ঘর পাওয়ায় স্বস্তিতে রয়েছেন তারা।
স্থানীয় সাংসদ, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লয়লা বেগম বলেন, কখনো ভাবিনি এত তাড়াতাড়ি কেউ আমাদের ঘর বানিয়া দেবে। এ ঘরটা হওয়াতে খুব উপকার হইছে, থাকা নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করা লাগবে না। আমার ঘর ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও স্যার চাল-ডাল ইত্যাদিসহ ৫ হাজার টাকাও নিয়ে আসেন। এরপর অতি সত্বর ঘর বানানোর ব্যবস্থা করেছেন। নষ্ট হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ নতুন করে করে দিয়েছেন। এ ছাড়াও আমার পরিবারের খোঁজখবর রেখেছেন। এটা চিরদিন স্মরণে থাকবে।
জানা গেছে, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত করমপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাকন্যা লয়লা বেগমের জীর্ণ ঘর ছিল। প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে কোনোমতে চলছিল অভাবের সংসার। গত বুধবার (৩ জুন) প্রচণ্ড ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে সেই বসতঘরটি লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে পরিবার নিয়ে প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নেন লয়লা বেগম।
এ খবর পেয়ে পরদিন দুপুরে খাদ্য সহায়তা ও ৫ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান। এ সময় তিনি লয়লা বেগমের পরিবারের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরদিন, শুক্রবার (৫ জুন) প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান সার্বক্ষণিক তদারকি করে ৭ দিনের মধ্যেই সেই ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এরপর নির্মাণ করা নতুন ঘরে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন লয়লা বেগম।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ঘর ভেঙে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লয়লা বেগমের পরিবার। ঘর বানানোর সামর্থ্য তাদের ছিল না। তাই পরিবেশমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনায় দুর্গত এই পরিবারটির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ ২ প্রকল্প থেকে দ্রুততম সময়ে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।