করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি সরকারের দেয়া বিভিন্ন বিধি-নিষেধ শিথিল হচ্ছে। ভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় এবং নাগরিকদের জীবন স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি কতৃপক্ষ । এ ছাড়া মক্কা মসজিদুল হারাম সহ এই অঞ্চলের দেড় হাজারের বেশি মসজিদ খুলবে ফজরের সময় থেকে।
২১ জুন রবিবার দেশটিতে সকাল ছয়টা থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২০ জুন শনিবার সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
ফলে সৌদিতে সমস্ত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম আগের মতো স্বাভাবিক ভাবেই পরিচালিত হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। না হয় গুনতে হবে জরিমানা। ঘর থেকে বের হলেই যথাযথ নিয়মে মাস্ক পরা, জনদূরত্ব ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, শারীরিক তাপমাত্রা পরীক্ষায় বাধ্য থাকা। এবং জনসমাগম থেকে বিরত থাকা। এক স্থানে সর্বোচ্চ ৫ জনের বেশি জড়ো হতে পারবে না।
পৌর, সামাজিক ও পল্লী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামীকাল থেকে সেলুন ও বিউটি পার্লারগুলো কাজ করতে পারবে। তবে মুখে মাস্ক ও হেন্ড গ্লাভস পরিধান করতে হবে এবং শুধুমাত্র চুল কাটা এবং সেভ করা যাবে একবার ব্যবহার যোগ্য উপকরণ দিয়ে। অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে ৭০% ভাগের বেশি উপস্থিতি না রাখা। এছাড়াও পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ওমরা ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু থাকবে। এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে আসা যাওয়ায় বাধা নেই।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নির্দেশনা গ্রহণের জন্য সৌদিতে বসবাসরত সকল নাগরিকদের জন্য দুইটি এ্যাপস চালু করা হয়েছে। “তাবাউদ” এবং “তাওয়াক্কালনা” এই দুইটি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ।
মন্ত্রণালয় ৫০ জনেরও বেশি লোকের জমায়েত করা নিষিদ্ধ করেছে। তবে সকল মসজিদে সালাত আদায় করতে পারবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। নিজ জায়নামাজ নিয়ে মসজিদে প্রবেশ এবং মুখে মাষ্ক অবশ্যই পরিধান করতে হবে। মন্ত্রনালয় এর পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একে অন্যের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলা এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, যে বা যারা এই প্রতিরোধমূলক যে কোনও পদক্ষেপ লঙ্ঘন করবে তাদের জরিমানা ও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে ।
২০ জুন সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সৌদি আরবে নতুন করে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ৩,৯৪১ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১,৫৪,২৩৩ জন। মারা গেছে ৪৬ জন, এই নিয়ে দেশটিতে মৃত্য হয়েছে ১,২৩০ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৩,১৫৩ জন, দেশটিতে সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ৯৮,৯১৭ জন।
সৌদি সরকারের দেয়া বিভিন্ন বিধি-নিষেধ শিথিল প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-আবদ আল-আলি বলেন, বিধি-নিষেধ তুলে নেয়া মানেই করোনাভাইরাস এখান থেকে চলে যায়নি। ভাইরাসটি এখনো সংক্রমণ ঘটিয়ে চলছে। মহামারিও আছে। এখনো আমাদের কাছে কোনো ভ্যাকসিন নেই।
তিনি বলেন, এত প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও আমরা এমন একটি পর্যায়ে এসেছি যে, জনজীবন স্বাভাবিক করার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে আমাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে সেদিক এগুতে হবে।
এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সৌদি আরবের সমস্ত স্হল ও নৌ সীমান্ত পথ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটির কতৃপক্ষ।