করোনাকালীন পরিস্থিতিতে চারদিকে এত ভয়, আতঙ্ক, হতাশা বিরাজ করছে; তাই বিষয়টি সবাইকে জানাইনি। স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়াতে চাইনি। ঈদের ঠিক আগে ২২ মে রাত থেকে আমার জ্বর, সর্দি ও ঠান্ডা ভাব দেখা দেয়। মনে করেছিলাম সিজনাল সমস্যা। ডাক্তারদের পরামর্শ নেই। অফিস করেছি, কলিকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে এটা জানার পর সবাই আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেয়।
সেভাবেই থাকতে শুরু করি। স্ত্রীও আইসোলেশনে থাকে। বাড়তি সতর্কতার কারণ, বাসায় বয়োবৃদ্ধ মা আছেন। দুইটি সন্তান ও একটি মেয়ে আছে আমাদের সঙ্গে। এ অবস্থায় আমাদের বাসায় এবার ঈদ আসেনি। জীবনে এই প্রথম ঈদে গ্রামের বাড়ির বাইরে থাকা। কি হয় না হয়, একটা ভয়ের মধ্যে সময়টা কাটে। করোনা টেস্ট করাই ২৯ মে। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তার পর ৬ ও ১৩ জুন টেস্ট করিয়েছি তাতে নেগেটিভ এসেছে।
সংকটে কাছে পাবো এমন কয়েকজন মাত্র স্বজনকে অসুস্থতার খবর জানিয়েছিলাম। তারা প্রতিনিয়ত খোঁজ নিয়েছেন, সাহস যুগিয়েছেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। অসুস্থ এ খবরটা শুনে ছোটভাই সায়েম সুদূর আমেরিকা থেকে যখন Pulse Oximiter, Spirometer,
N 95 মাস্ক, ভিটামিন সি, জিন্ক পাঠিয়ে দিল; এই ভালোবাসার প্রতিদান কিভাবে দেব?
ভরসা ছিল, জীবনে করো ক্ষতি করিনি, কখনো হারাম স্পর্শ করিনি, আল্লাহ আমাকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবেন না।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া, তিনি রক্ষা করেছেন।
সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। তার পরও সংক্রমিত হলাম। একটা উপলব্দি হলো, একা ভালো থাকার উপায় নেই, সবাইকে নিয়েই ভালো থাকতে হবে। মানুষ, পরিবেশ-প্রকৃতি, জীবজন্তু সবাইকে বাঁচিয়েই পৃথিবীটাকে ভালো রাখতে হবে।
সবার জীবন মঙ্গলময় হোক। সবাই আশির্বাদ রাখবেন।
আরেকটা বিষয় : করোনা সংক্রমন মানেই মৃত্যু না। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নিয়ম মানতে হবে আর সতর্ক থাকতে হবে।
ছবি : আইসোলেশনে থাকার সময়ের। সন্তানদের করুন চাহনী কি সহ্য করা যায়?
আজিজুল পারভেজ: বিশেষ প্রতিনিধি;দৈনিক কালেন কণ্ঠ