শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
গ্রেটার বড়লেখা এসোশিয়েশন ইউকে নতুন প্রজন্মদের নিয়ে কাজ করবে  » «   স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল  » «   কানাডা যাত্রায়  ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা এড়াতে সচেতন হোন  » «   ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন ক্যানসারে আক্রান্ত  » «   যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের অনুদান  » «   বড়লেখায় পাহাড়ি রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এলো শিলাখণ্ড  » «   মাইল এন্ড পার্কে ট্রিস ফর সিটিস এর কমিউনিটি বৃক্ষরোপণ  » «   রয়েল টাইগার্স স্পোর্টস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  » «   গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সভা ও নির্বাচন সম্পন্ন  » «   যুক্তরাজ্যবাসি  সাংবা‌দিক সাইদুল ইসলামের পিতা আব্দুল ওয়াহিদের ইন্তেকাল  » «   ইউকে বাংলা রিপোটার্স ইউনিটি‘র নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক  » «   রোটারিয়ান মোহাম্মদ খতিবুর রহমান বার্লিন যাচ্ছেন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের নতুন বাজেটে হাউজিং, শিক্ষা, অপরাধ দমন, তরুণ, বয়স্ক ও মহিলাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচিতে বিপুল বিনিয়োগ প্রস্তাব  » «   আজীবন সম্মাননা পেলেন সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই  » «   লন্ডন বাংলা স্কুলের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

কাফনের কি পকেট আছে ?



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

পৃথিবীর ৭৮০ কোটি মানুষের প্রত্যেকেই এ মুহূর্তে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশে দেশে মৃত্যুর মিছিল। কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণের শংকায় বিহ্বল, শোকে মূহ্যমান সারা বিশ্ব। চারিদিকে নিরূপায় আর্তি- আহাজারি। দিন-দিনান্তে সংকট আরও ঘনিভূত হচ্ছে। আর্থিক বিপত্তি ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের নেতিবাচক প্রভাব ২০০২-২০০৯ এর বিশ্ব মহামন্দাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

আমরা সকলেই দিনের পর দিন, বছরের পর বছর পৃথিবীকে আরো বেশি ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি সভ্যতার অগ্রগতির নামে। করোনা নিয়ে এই পৃথিবীতে অনেক বড় বড় গ্ৰন্থ রচিত হবে, তাহাতে অনেক ইতিহাস থাকবে,যে ইতিহাসের পাতায় আমার দাদা, আমার বাবা,আমি, আমার ছেলে, এরপর ছেলের ছেলে পর্যন্ত গড়াবে।আর এ সবের অনেক গুলো কারণ থাকবে।
আমরা যদি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে দৃষ্টি দেই খুব সহজেই এই ইতিহাস রচনা করার মতো কিছু উদাহরণ খুঁজে নিতে পারি যেমন, যে পরিবারের দখলে রয়েছে ৮টি ব্যাংক,৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান,২টি বিমা কোম্পানি সহ সর্বমোট ৩৪টি প্রতিষ্টান। শেষ নয় আরো আছে, সিংগাপুর ও কানাডার মতো দেশে ধনিদের তালিকায় এঁরা শীর্ষ স্থানে। কিন্তু করোনা এই কোম্পানির মালিক কে পৃথিবীতে বাঁচার অধিকার টুকু কেড়ে নিলো।

যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তাঁর জন্য একটি বেডের ও ব্যবস্থা করা গেল না। অস্তিম সময়ে  ছোট ভাইয়ের মুখ থেকে খুলে ভেন্টিলেশন বড়ো ভাই কে দিতে দিতে বড়ো ভাইয়ের সময় ফুরিয়ে গেল, বড় নিষ্ঠুর এই পৃথিবী। যদি এই এস আলম গ্ৰোপ টি ইচ্ছে করে দেশের স্বাস্থ খাতকে পাল্টে দিতে পারত। তাদের যে সামর্থ্য আছে দেশের হাসপাতাল গুলোতে হাজার হাজার ভেন্টিলেশন বেড দান করা কোন ব্যাপার না। যে পরিবারের সদস্যদের সামান্য সর্দি কাশির জন্য উন্নত বিশ্বের বড় বড় হাসপাতাল বুকিং থাকত।কিন্তু এমন এক সময় তাদের জন্য সব দরজা বন্ধ হয়ে গেল ‌, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হল নিজের দেশে। করোনা প্রমান করল আমার কাছে টাকা কোন মুখ্য বিষয় নয়।
লন্ডন শহরের ফিনসলি এলাকায় বাস করতেন বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার মিঃ চৌধুরী। ভদ্রলোকের সাথে কয়েক বার সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। লন্ডনে ৮ মিলিয়নের বাড়ি, মৌলভীবাজার ও কুলাউড়ায় প্রায় ৩০/৪০ কোটি টাকার সম্পত্তি। অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু মাত্র সময় পেলেন ৪ ঘন্টা। পরিবারের ১জন মুখ দেখলো আর বাকি ৪জন শেষ বিদায় দিতে সাথে গেলেন। করোনা প্রমান করল টাকা কোন মুখ্য বিষয় নয়।

মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী,চাঁদপুরের বাসিন্দা, সরকারের আমলা, করোনা আক্রান্ত স্ত্রীকে দাফনের ৩ ঘন্টার মধ্যে চলে গেলেন। প্রচুর সম্পদের মালিক। হাসপাতালে যাওয়ার সময় টা ও ছিল না।করোনা প্রমান করল টাকা কোন মুখ্য বিষয় নয়।

নিলুফার মঞ্জুর ছিলেন শিক্ষা ও আশার বাতিঘর। আট শিক্ষার্থী নিয়ে তিনি ১৯৭৪ সালে সানবিম নামক স্কুলটি শুরু করেন, যার মধ্যে দুজন ছিল তার সন্তান।ব্যাংকের ১০,০০০ হাজার টাকার লোন এ প্রতিষ্টিত স্কুলের হাজার হাজার ছাত্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আছে।নিলুফার মঞ্জুর দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী।সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ও নিলুফার মঞ্জুর দম্পতির দুই সন্তান। ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মেয়ে মুনিজ মঞ্জুর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। করোনা প্রমান করল এ সবের কিছুই  মুখ্য বিষয় নয়।

আমরা কমবেশি সকলেই জানি বাংলাদেশের কমিশন বাণিজ্য এবং পপুলার ডায়াগনস্টিক অথবা পপুলার গ্ৰোপের ইতিহাস।করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রায় তিন সপ্তাহ পর মারা গেলেন পপুলার মেডিকেল কলেজ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড ও পপুলার গ্রুপের চেয়ারম্যান তাহেরা আক্তার (৬০)। রাজধানীর শ্যামলী স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তাহেরা আক্তার পপুলার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচির বাসিন্দা চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানের সহধর্মিণী। তিনি বগুড়ার এক সময়ের বিশিষ্ট ঠিকাদার মখলেসুর রহমানের কন্যা। তার বাড়ি বগুড়া শহরের নামাজগড় এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে তাহেরা আক্তার তার পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর বনানীতে বসবাস করতেন। কিসের অভাব ছিল ?

একটি ভাইরাস প্রমান করল, টাকা কোন মুখ্য বিষয় নয়।

একটা ভাইরাসের আক্রমণে সারা পৃথিবীতে এত মানুষ মারা গেছে, এত মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, আমরা লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি হয়ে রয়েছি, এটাকে আমরা প্রকৃতির প্রতিশোধ বলতে পারি। অথবা বলতে পারি, প্রকৃতি আপাতত আমাদের উদ্দেশ্যে একটা সাবধান বাণী ছেড়েছে, এই বলে সতর্ক করে দিয়েছে যে, যদি এইভাবে চলো তাহলে ধ্বংস অনিবার্য। প্রকৃতিকে ধ্বংস করলে প্রকৃতি একদিন না একদিন তার প্রতিশোধ নেবে।
বিংশ শতাব্দির সবচেয়ে মারাত্মক মহামারীর নাম স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সালে এটি বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে পড়ে। সারা বিশ্বে ৫০০ মিলিয়ন মানুষ এতে আক্রান্ত হয়, মৃত্যু হয় ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়নের। বলা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয় স্প্যানিশ ফ্লুর কারণে। কত টাকা ওয়ালা প্রাণ হারালেন। স্প্যানিশ ফ্লুও প্রমান করেছিল টাকা কোন মুখ্য বিষয় নয়।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।  উনার পরিবার ও করোনা ভাইরাস এ হাসপাতালে। উনি বলেন, গণস্বাস্থ্যের কিট আছে বলেই সঙ্গে সঙ্গে জানতে পেরেছি।না হলে আমি ১শ’ জনকে আক্রান্তও করে ফেলতে পারতাম। মানুষের ভেতরের মানবিকবোধের চেয়ে মহৎ কিছু কি আছে পৃথিবীতে? তাই টাকা হলেও যে আমরা সব কিছু করতে পারবো, আমাদের রক্ষা করতে পারবো আসলে এটা ঠিক নয়। টাকা জীবনের জন্য, টাকা জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজন কিন্তু টাকা সুখের জন্য আবশ্যক নয়।সুখে থাকলে আল্পতেই তুষ্ট হওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত অর্থ সম্পদ অশান্তি এবং অসুখের কারণ ও হয়ে দাঁড়ায়। টাকার প্রয়োজন আছে জীবনে কিন্তু সেটা খুবই সামান্য।

নারায়নগঞ্জের কাউন্সিলর খোরশেদের গল্প আমরা সবাই জানি…কি হিন্দু – কি মুসলিম!! করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুতে যখন নিজের পরিবারের লোকজন সৎকার করতে পিছু হটেছে তখন এই মানুষটা এগিয়ে এসেছে…খোরশেদের মত মহত মানুষদের সংখ্যা রাজনীতিতে যত বাড়বে রাজনীতির প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা বাড়বে।
এমন মানুষ গুলোর জন্যই তো আমরা মানবিকতা খুজে পাই..মানুষ খুজে পাই।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব শফিউল আলম চৌধূরী নাদেল,ও  সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলার আজাদুর রহমান আজাদ কে দিয়ে শেষ করতে চাই, দুজন মিলে যে ভাবে এই মহামারী করোনা র বিরুদ্ধে সংগ্ৰামে ঝাঁপিয়ে পড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়ার পর জনগণের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন,তা কিন্তু ইতিহাস,আর এই ইতিহাসের সাক্ষী সিলেট বাসী।ধন সম্পদ টাকা পয়সা সাথে নিয়ে যাবার নয়,সবই রেখে যেতে হবে।শ্তধু মানুষের মাঝে থাকবে মানবিকতা।

“যদি কাফনের কোন পকেট থাকতো, তো সাথে দেওয়া যেত!!মানবসেবার মাধ্যমেই আমরা সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে পারি” টাকা দিয়ে নয়।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক