অসুস্থতায় হাসপাতাল মানুষের আশা ভরসার শেষ ঠিকানা।করোনা সময়ে একের পর রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ প্রতিদিনই বাড়ছে।
একই ঘটনা ঘটেছে তরুণ ক্রিকেটার বিপ্লবের বাবার ক্ষেত্রে।জাতীয় দলের ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বাবা বেশ কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনার এই দুর্যোগে ৩ দিন আগে অবস্থা খারাপ হলে তাঁর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বের হন এই লেগ স্পিনার। কিন্তু কোনো হাসপাতালেই ঠাঁই হয়নি। ভর্তি তো দূরের কথা, বয়স্ক ব্যক্তিটির কি কারণে এমন হচ্ছে সেটাই পরীক্ষা করতে রাজি ছিল না কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ফোনে হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা সম্ভব হয় তার বাবাকে।
একের পর এক হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে শ্যামলীর সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ আমিনুলের বাবাকে পরীক্ষা করাতে সম্মত হয়। পরীক্ষা শেষে জানা যায়, মূলত হার্টের সমস্যা থেকেই এই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপ্লবের বাবাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। মিরপুর হার্ট ফাউন্ডেশনে গিয়ে আরেক বিপদে পড়েন বিপ্লব। সেখানে তার বাবাকে ভর্তি নিবে না! উপায় না পেয়ে আমিনুল আবারো ফোন দেন তামিমকে। জাতীয় দলের অধিনায়ক তামিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিপ্লবের বাবাকে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন।
আমিনুল গণমাধ্যমকে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আব্বুর এই অসুসখটা পুরোনো। কিন্তু গত কয়েকদিন বেশি সমস্যা করছিল। খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। আমরা অনেকগুলো হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু কেউ ভর্তি নিচ্ছিল না। পরে শ্যামলীতে সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ নামে একটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছু টেস্ট করতে দেয়। রিপোর্ট দেখে ওনারা বলেন হার্টের সমস্যা থেকে এটা হচ্ছে, তাই ওনারা পরামর্শ দিল হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’
তরুণ লেগ স্পিনার আরও বলেন, ‘কিন্তু ওখানে গিয়ে জটিলতার মধ্যে পড়ে যাই। এটা করতে বলে, ওটা করতে বলে। কি করব বুঝতে না পেরে তামিম ভাই ও অপারেশন্স ম্যানেজার সাব্বির ভাইকে ফোন দিই। পরে তামিম ভাই ওনাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আব্বুকে তারা ভর্তি করায়। গতকাল রাতে ভর্তি নিয়েছে। এখানে ভর্তির পরে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। এখানে আব্বুকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। কেননা এখানে করোনা পজিটিভ ও নেগেটিভ রোগী আছে। এখনও আব্বুর কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হয়নি। টেস্ট শেষে রেজাল্ট পেলে বেড বা ক্যাবিনে দেবে।’
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের চিত্র এখন একই রকম।প্রতিদিনই কোনো না কোনো ঘটনায় দেখা যাচ্ছে রোগী নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে কেউ গাড়িতে কেউ রাস্তায় মারা যাচ্ছে।