শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই‘র ইন্তেকাল  » «   ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিয়ানীবাজারে পথচারী ও রোগীদের মধ্যে ইফতার উপহার  » «   ইস্টহ্যান্ডসের রামাদান ফুড প্যাক ডেলিভারী সম্পন্ন  » «   বিসিএ রেস্টুরেন্ট কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এনএইচএস এর ‘টকিং থেরাপিস’ সার্ভিস ক্যাম্পেইন করবে  » «   গ্রেটার বড়লেখা এসোশিয়েশন ইউকে নতুন প্রজন্মদের নিয়ে কাজ করবে  » «   স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল  » «   কানাডা যাত্রায়  ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা এড়াতে সচেতন হোন  » «   ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন ক্যানসারে আক্রান্ত  » «   যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের অনুদান  » «   বড়লেখায় পাহাড়ি রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এলো শিলাখণ্ড  » «   মাইল এন্ড পার্কে ট্রিস ফর সিটিস এর কমিউনিটি বৃক্ষরোপণ  » «   রয়েল টাইগার্স স্পোর্টস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  » «   গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সভা ও নির্বাচন সম্পন্ন  » «   যুক্তরাজ্যবাসি  সাংবা‌দিক সাইদুল ইসলামের পিতা আব্দুল ওয়াহিদের ইন্তেকাল  » «   ইউকে বাংলা রিপোটার্স ইউনিটি‘র নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

অদৃশ্য শক্তির কাছে আমাদের অসহায়ত্ব ও বিবেকের দায় 



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সুন্দর এই  পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষের সাথে নেই মানুষের  মিল। সৃষ্টিকর্তার কী এক অপরূপ লীলা, অমিলের মধ্যেই আমরা মিলে- মিশে আছি শত কোটি বছর ধরে।

পৃথিবী জুড়ে  কি এক অদৃশ্য শক্তি আমাদের কে  তাড়না দিচ্ছে। আমরা চোখে না দেখলেও মনের মধ্যে আতঙ্ক নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছি। করোনা নামক এই অদৃশ্য শক্তির কাছে এখন গোটা পৃথিবী অসহায়। প্রায় তিন মাস ধরে  মানুষ দেখছে – পৃথিবীর বড় বড় শক্তিধর দেশগুলোর নেতাদের  নাকানি-চুবানি খাওয়া।

বড় বড় দেশের নেতারা তাদের শক্তি পরীক্ষা করতে গিয়ে  প্রকৃতিকে অনেক এভ্যিউজ করেছে। হয়তো সৃষ্টিকর্তা প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তাদের অস্ত্রের মহড়ায় এই পৃথিবীর কোটি কোটি সবুজ প্রাণী বিলীন হয়েছে।  ধ্বংস হয়েছে পাহাড়। নিষ্পাপ জীব-জন্তুর প্রাণ অকালে ঝরেছে। সাগর – নদীর পানি বিশুদ্ধ থেকে  বিষাক্ত হয়েছে। কত প্রাণী বিলীন হয়েছে অকালে। অস্ত্রের ভান্ডারহীন, পেট্রো-ডলারে ভারসাম্যহীন দেশগুলো  আতঙ্কে কাটিয়েছে দিনের পর দিন। স্বজন-প্রিয়জন হারানোদের বেদনা বহন করে চলা রাষ্ট্রগুলোর প্রতিবাদের ভাষা পর্যন্ত ছিল না।

খ.

এই অন্যায়-অবিচারে নিমজ্জিত বিশ্বে মরণ ভাইরাস করোনা আজ সকল মানুষের  আর্তনাদের  কারণ হয়েছে। মানুষের চোখ এনেছেন অশ্রু। মনে এনেছে ভয়। আত্মায় এনেছে অসুখ । কোভিড এর কারণে  মা তার সন্তান কে বুকে নিতে পারছে না। সন্তান তার বৃদ্ধ বাবা কে স্পর্শ  করতে পারছে না। কবর স্থানের জমি পেতে  লাইনে থাকতে হচ্ছে  অনেক দিন। হিম ঘরেও  লাশ রাখার জায়গা নেই। দেশে দেশে চলছে  গণকবর।

ভূবনভরা এতো অক্সিজেন, কিন্তু বুকে টেনে নেওয়া জন্য ভেনটিলেটর নেই। আছে শক্তিধর রাষ্ট্রের হাজার হাজার যুদ্ধ বিমান। সাবমেরিনের জন্য কোটি কোটি  ডলার বরাদ্ধ থাকলেও  চিকিৎসার জন্য নেই তহবিল। পিতার লাশ ছেলে দেখতে পারেনি। প্রিয়তমা দেখেনি স্বামীর মুখ। সন্তানকে শেষবারের মতো ছুয়ে দেখতে পারেনি মা। এই অদৃশ্যে ভাইরাসের কাছে পৃথিবীর মানুষ অসহায় হয়েই এখনও দিন পার করছেন।

গ.

করোনার   প্রাদুর্ভাব কমে গেলেও এটা নির্মূল হবে না এমনটিই গবেষকরা ইতিমধ্যে বলেছেন।লন্ডনে বাংলাদেশীদের  উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছেন যারা এদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের বৈধতা পাননি। এবং এদের অধিকাংশরাই বাঙালি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।  বিশেষ করে বাঙালি মালিকানাধীন রেষ্টুরেন্টে কাজ করেন। কারণ কাজের সাথে থাকা খাওয়ার সুবিধা রয়েছে। তবে এটা ভাবার কোন অবকাশ নেই, বাঙালি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন তাদেরকে একটু বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়।

ব্রিটেনের সরকার সাধারণ চাকরিজীবী সহ ব্যবসায়ীদের জন্য বড় অংকের আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেছে। বৈধ কাগজ-পত্র না থাকার কারণে  সরকারের ঘোষিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছেন  এইসব প্রবাসীরা। লকডাউনের এই সংকটময় সময়ে অনেকেই লম্বা সময়ের জন্য আত্মীয়দের বাসায় থাকতে পারছেন না। অন্যদিকে তারা কর্মস্থলেও থাকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অধিকাংশ রেষ্টুরেন্ট বন্ধ থাকার কারণে। ইদানিং অহরহ অভিযোগ উঠছে যে যেসব রেষ্টুরেন্ট টেকওয়ে করোনা সময়েও  খোলা আছে ,সেখানের কর্মীদের রাখা হলেও তাদের অর্ধেক বেতন কেটে নেয়া হচ্ছে। ফলে সমান পরিশ্রমের কাজ করেও তারা নিরুপায় হয়েই সেখানে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাদের বৈধকাগজ পত্র না থাকার কারণে।

বাংলাদেশে মহামারি সংকটে প্রবাসী বিভিন্ন  সামাজিক সংগঠন এগিয়ে এসেছে সরকারের পাশাপাশি।  যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় প্রতিটি সামাজিক সংগঠন তাদের যার যার অবস্থান থেকে দেশের মানুষদের সহায়তা করে যাচ্ছেন। যদিও কঠিনতম করোনা পরিস্থিতির সময়ে কিছু মানুষ তাদের দান খয়রাত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারসর্বস্ব থাকছেন। তারপরও করোনা মহামারী সময়ে ব্রিটেন প্রবাসীদের সহযোগিতা উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে বিশ্বাস করি।

ঘ.

আগামী দিনগুলোতে  কোভিড-১৯ এর  সাথে বসবাস করতে হবে এক ধরনের  সমোঝত করে। কিন্তু করোনা মহামারিতে দেশে এবং প্রবাসে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, যারা পেনডামিক সময়ে কমিউনিটির পাশে না থেকে মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা উপায়ে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করেছেন,  এই সকল মানুষ রূপী অমানুষের সাথে  কিভাবে সমঝোতা করে আগামী দিনগুলো কাটাতে হবে- ভেবে পাচ্ছি না।

আমাদের বিশ্বাস আবিষ্কৃত হবে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন। যেমনটি হয়েছে অতীতের সকল মহামারী রোগের। আগামী নতুন পৃথিবীতে মানুষ মানুষের কাছে আসবে। বুকে টেনে নেবে একে অপরকে। পৃথিবী থেকে নির্মূল হবে করোনা ভাইরাস।

কিন্তু থেকে যাবে সমাজে লেগে থাকা আরেক অদৃশ্য ভাইরাস তার নাম লোভ-লালসা। বর্ণবাদ, শ্রেণী ভেদ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, উগ্রবাদ।

বৈষম্যের  চেয়ে বড় কোনো ভাইরাস নেই। শোষণ আর লোভের চেয়ে বড় কোনো মহামারির নেই।  এই কঠিন সময়ে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধকের পাশাপাশি আমাদের আত্মায় লেগে থাকা এইসব অমানবিক ভাইরাসগুলোও নির্মূলের জন্য ভ্যাকসিন প্রয়োজন।

শুদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে, শুদ্ধ পৃথিবী  প্রতিষ্ঠিত হবে একদিন।

নূর লোদী: সংগঠক।যুক্তরাজ্য প্রবাসী।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন