সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
তিলে তিলে গড়া স্বপ্নের লালিত প্রতিষ্ঠান গত ১৮ মার্চ থেকে আজ দুই মাস বন্ধ। জানি না আর কত দিন এভাবে লকডাউন থাকতে হবে! অফিসের চেয়ার টেবিল আসবাবপত্র ফাইল গুলোতে ধুলু জমে গেছে। সেই কর্ম চঞ্চল দিনগুলো লকডাউনের ভিড়ে আজ বন্দি জীবন।যে ক্যাম্পাস ছিল এক সময় কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সহকর্মী শিক্ষকদের পদচারণা ও কল কাকলি, আজ সে ক্যাম্পাস তথা পুরো দেশটাই স্থবির। বিশ্ব জগত এমন নিরব আর নিস্তব্দ হয়ে যাবে কখনো কল্পনা করতেও পারি নি!
আমি সর্বদা হাইলি সেল্ফ মোটিভেইটেড একজন মানুষ। নিজেকে নিজের মনের মত করে একজন সফল মানুষ গড়ার স্বপ্ন আমার অনেক দিনের। তাই চাকরি নামক সোনার হরিণের পিছনে কখনো দৌড়ানোর চেষ্টা করিনি। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে কয়েকটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহকারি শিক্ষক ও অধ্যাপনার চাকরি করলেও আপ্রাণ চেষ্টা করেছি একজন প্রকৃত ভালো মানুষ ও ভালো শিক্ষক হওয়ার। এখনো চেষ্টা করছি একজন ভালো শিক্ষক, লেখক ও সফল উদ্যোগতা হওয়ার। বেকারত্ব গুছিয়ে নিজে স্বাবলম্বি হওয়া ,অন্যকেও স্বাবলম্বি করে গড়ে তোলা, পাশাপাশি মানুষের সেবা করা। কোন ধরনের বাণিজ্যিক চিন্তা ভাবনা না করে শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের লক্ষ্যে শিক্ষার মান উন্নয়ন তথা শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারে কথা ভেবে সেইজ একাডেমির প্রকাশনায় নিজের ঘাম ঝরা পরিশ্রমের অর্থ দিয়ে রচনা ও সম্পাদনা করেছি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, HSC Communicative English নামে তিনটি বই।
এসএসসি পরীক্ষা পাস করার পর ১৯৯৮ সালের সেই ছাত্র জীবন থেকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জনের পাশাপাশি নিজের অধম্য ইচ্ছা শক্তি, মেধা জ্ঞান ক্রিয়েটিভিকে কাজে লাগিয়ে এবং সততা কঠোর পরিশ্রমকে পুঁজি করে ২২টি বছরে গড়ে তুলি সেইজ একাডেমি। একটি শিক্ষা সেবা শিল্প প্রতিষ্ঠান। আমার সাথে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ও পাস করা এগারোটি পরিবারের এগারো জন শিক্ষক। যাদের চোখে অনেক রঙ্গিন স্বপ্ন, বুক ভরা আশা নিয়ে আমারই মত উদ্যোগক্তা হবার স্বপ্ন দেখে।
আজ আমার মত দেশের প্রায় অর্ধ কোটি তরুণ মেধাবি যুবক ফ্রিল্যাস কোচিং(ছায়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) সেন্টারের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে ক্ষুদ্র উদ্যোগক্তা হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
বর্তমান বিশ্বব্যাপি করোনা পরিস্থিতির কারণে আমারই সহযোদ্ধা এই শিক্ষা সেবা শিল্পের অনেক প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের এই করুণ দুর্দশাগ্রস্থ অবস্থা দেখে সত্যি মর্মাহত। আমার মত এমন লক্ষ্যাধিক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা যাদের জীবন-জীবিকার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দেশের প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ।
তাহলে কী এই শিক্ষা সেবা শিল্প অঙ্কুরে বিনাশ হয়ে যাবে!
শিক্ষক নামক মানুষ গড়ার কারিগর স্বপ্নচারি তরুন মেধাবী উদ্যোগক্তাদের ক্যারিয়ারের মৃত্যু হবে অচিরেই।
লেখক: মো. শাহেদ আহমদ রুহেল ,প্রতিষ্ঠাতা,সেইজ একাডেমি ,উইমেন্স মডেল কলেজ।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন