করোনাভাইরাস ছাড়া বাহরাইনে ৩ মে পর্যন্ত গত ৪৫ দিনে বিভিন্ন দেশের ৩৯ প্রবাসী মারা গেছেন, যার মধ্যে ৬৫ শতাংশেরও বেশি (২৬ জন) হৃদরোগে আক্রান্ত (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) হয়ে মারা গেছেন ।
বাকিদের মধ্যে ৮ জন প্রবাসী আত্মহত্যা করেছেন। তিন জন সড়ক ট্র্যাফিক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এবং দু’জনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
বাহরাইনের গালফ ডিজিটাল নিউজ-জিডিএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, কূটনীতিক এবং সমাজকর্মীদের দাবি, হৃদরোগের মৃত্যুের হার বিশেষত ৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে বেশি ছিল, যারা করোনভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিজনিত প্রভাবে সৃষ্ট চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন।
হৃদরোগে মারা যাওয়া ২৬ জনের মধ্যে ১২ জন ভারতীয়, যাদের মধ্যে পাঁচজনের বয়স ৪০ বছরের নিচে এবং বাকি ১৪ জন বাংলাদেশি ছিলেন।
আত্মহত্যার করা ৮ জনের মধ্যে সাত জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি।
জিডিএন’কে কেরালা প্রবাসী কমিশনের সদস্য সুবাইর কান্নুর বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতি প্রবাসীদের মধ্যে প্রচণ্ড উদ্বেগ ও চাপ সৃষ্টি করেছে। প্রবাসীরা একাকী বোধ করছে এবং সচেতনতার মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই এই বিপজ্জনক বিষয়ের সমাধান করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রবাসীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাউকে করোনা মহামারি নিয়ে আতংকিত বা ভয় দেখানোর জন্য অনুরোধও করি না।”
“বাহরাইন সরকার বরাবরই উদার হয়েছে এবং আমরা আশা করি যে এটি প্রবাসী সম্প্রদায়ের আর্থিক উদ্বেগকে মোকাবেলা করবে যা এই চাপকে প্রশমিত করবে।”
বিশ্ব এনআরআই (অনাবাসী ভারতীয়) কাউন্সিলের জিসিসির মানবিক সহায়তার পরিচালক সুধীর তিরুনিলথ জিডিএনকে বলেছেন, “বেশ কয়েকটি পরিবার ভাড়া ও স্কুল ফি দিতে না পারায় প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে।
“আমরা সরকারকে তিন মাসের জন্য ভাড়া এবং স্কুল ফি নিয়ে স্থগিতাদেশ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি”, তিনি বলেছিলেন।
মারাত্মক কার্ডিয়াক অ্যাটাকে মারা যাওয়া ১৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ছয়জন ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী,পাঁচ জন ৪০ থেকে ৫০ এর মধ্যে এবং বাকিরা এর চেয় বেশি বয়সের ছিল।
বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর শেখ তৌহিদুল ইসলাম ডিজিএনকে বলেন,“কার্ডিয়াকজনিত সমস্যায় মারা যাওয়া বাংলাদেশির বেশিরভাগই তরুণ ছিলেন; তারা দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং এটি দুর্ভাগ্যজনক।
“১৫ ই মার্চ থেকে আমরা ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছি-১৪ জন হৃদরোগে এবং ১জন সড়ক দুর্ঘটনায়- তাদের বেশিরভাগই এখানে সমাহিত করা হয়েছে এবং ৪ জনের মরদেহ ফ্লাইট আবার শুরু হওয়ার সাথে সাথে দেশে পাঠানোর প্রতীক্ষায় রয়েছে।”