মৌলভীবাজারের বৃহৎ বরুণা মাদরাসার মোহাদ্দেস মাওলানা আবদুল মুমিত (৭২) মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নিজ বাড়িতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন। পরে তাকে সিলেটের মাউন্ট অ্যাডোরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎক মৃত ঘোষণা করেন। ওইদিন রাতে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বুধবার ভোরে তার দাফন করা হয়।
নানা ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল এবার সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিতে লাখো মানুষকে জমায়েত থেকে দুরে রাখতে পেরেছেন । ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার ঢেউপাশা এলাকায়।
যেহেতু তিনি একজন প্রখ্যাত আলেম, তার অনেক ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী, ছাত্র রয়েছে এবং এ মাদরাসায় পূর্বের তফসির বা হুজুরদের জানাজার নামাজে লাখো মানুষের জমায়েতের ইতিহাস রয়েছে। তাই আব্দুল মুমিতের মৃত্যুর পর তার জানাজাকে ঘিরে লাখো মানুষের জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
ঘটনা শুনে রাতেই মরহুমের বাড়ি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ঢেউপাশা গ্রামে র্যাব ফোর্স নিয়ে রওনা দেন আনোয়ার হোসেন শামীম। সারারাত অবস্থান করে স্থানীয় নেতৃস্থানীয় ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ, মরহুমের পরিবারের সদস্য, পুলিশ, প্রশাসন ও র্যাব সবার সমন্বিত আলোচনার মাধ্যমে ভোরেই জানাজার ব্যবস্থা করা হয়।
ভোর ৪টা ১০ মিনিটে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে ধর্মীয় মর্যাদায় জানাজার নামাজ আদায় হয় এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজার অংশ নেন সীমিত সংখ্যক মানুষ।
উল্লেখ করা যায়, তিনি প্রায় ৪৭ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন। এক মধ্যে এক যুগ ছিলেন বরুণা মাদরাসায়। তিনি ছাত্রদের পাশাপাশি হুজুরদের কাছেও খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে লাখ লাখ মানুষ তার জানাজায় অংশ নিত। র্যাবের ভূমিকায় এবং আমাদের সচেতনতায় মানুষ ভিড় করতে পারেনি।
র্যাবের এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম গণমাধ্যমে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ঘটনা প্রচুর সমালোচিত হয়েছে। একই ঘটনা এখানে ঘটতে পারতো। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করতে তাই দিনের আগেই কীভাবে জানাজা শেষ করা যায় তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ এ হুজুরের যে পরিচিত বা ভক্ত রয়েছেন তাতে দিন হলেই লাখো মানুষের সমাগম ঘটতো। যেহেতু এখানে আবেগের একটা বিষয় ছিল তাই কৌশলী হতে হয়েছে। সারারাত সবাইকে বুঝিয়ে রাজি করাতে আমরা সক্ষম হই এবং ভোরে জানাজার নামাজ হয় সামাজিক দূরুত্ব মেনে এবং কোনো জমায়েত ছাড়াই।
তিনি বলেন, জানাজা শেষে দাফন নিশ্চিত করে ফিরতে গিয়ে সেহেরিও খাওয়া হয়নি। কারণ আমরা ফিরলেই মানুষের জমায়েত হতে পারতো।