সারা বিশ্বের মতো ফ্রান্সেও (COVID19) করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় এ পর্যন্ত ১৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তবে প্রাণঘাতী মহামারি ছড়িয়ে পড়ার এই প্রথমবারের মতো হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বর্তমানে কিছুটা কমেছে। বুধবার দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন।করোনাভাইরাসের কারণে দেশটির নাগরিকদের মতই দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রবাসী বাংলাদেশীরাও বাসায় বন্দী।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জারোম সালোমন সাংবাদিকদের বলেন, ফ্রান্সের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রমে এ পর্যন্ত মহামারি করোনাভাইরাসে মোট ১৭ হাজার ১৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিনে এই সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৭২৯ জন।
তিনি বলেন, তবে এক্ষেত্রে ভালো খবর হচ্ছে যে এই প্রথমবারের মতো আগের দিনের চেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫১৩ জন কমেছে।এছাড়া পর পর ৭ দিনের মতো আইসিইউতে করোনা রোগীর সংখ্যা ২৭৩ জন কমেছে। আগের দিন আইসিইউতে ৬ হাজার ৭৩০ জন রোগী ভর্তি ছিল।
সালোমন বলেন, এর ফলে ‘আইসিইউ’র চাহিদা ক্রমেই কমতে দেখা যাচ্ছে।’ তবে তিনি জানান, ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকার এবং প্যারিসের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউতে এখনো রোগীর চাপ রয়েছে।
ফ্রান্সে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধকল্পে গত ১৭ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কেবলমাত্র জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়ার সুযোগ থাকলেও এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবশ্যই উপযুক্ত প্রমাণ সঙ্গে রাখতে হচ্ছে।
এ দিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন গত সোমবার রাত আট টায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। ২৭ মিনিটের দীর্ঘ ভাষনে প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী ১১ মে পর্যন্ত লক ডাউনের সময় বাড়ানো হয়েছে,যাদের করোনা ভাইরাসেরে লক্ষন রয়েছে তাদের সকলের পরীক্ষা নিশ্চিত করা হবে। ১১ মে’র পর স্কুল, কলেজ, ক্রেশ সব খুলে দেয়া হবে।যে সব পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অসমর্থ তাদের সহায়তা করা হবে।বৃদ্ধাশ্রম ও হাসপাতালগুলোতে বিশেষ নজর দেয়া হবে। পরবর্তী ঘোষনা না দেয়া পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ সমুহের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ থাকবে।আফ্রিকার দেশসমুহের ঋণ মওকুফ করা হবে।সকল শ্রমজীবির জন্য অর্থ সহায়তা দেয়া হবে।সকলের জন্য হাতমোজা, মাস্ক সরবরাহ করা হবে। এ সময়ের পর দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে ফ্রান্স বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের করনা ভাইরাসে আক্রান্তের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য বা আক্রান্তের সংখ্যা জানা নেই এই মুহূর্তে । ধারণা করা হচ্ছে প্রায় অর্ধশত প্রবাসী বাংলাদেশি ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন এবং কিছুসংখ্যক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।