বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার ব্যস্ততম শহর নিউইইয়র্ক সিটি।যে সিটিকে বলা হয় The City Never Sleep,গোটা বিশ্বের সকল বড়ো বড়ো সিটিসহ সেই নিউইয়র্ক সিটিতে এখন বিরাজ করছে সুনশান নীরবতা।
মহামারী করোনার বিধ্বংসী থাবায় সমগ্র আমেরিকা এখন মৃত্যুপুরীর নগরীতে পরিণত হয়েছে।
নিউইয়র্কের বাঙালী কমিউনিটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিনই শামিল হচ্ছেন কোনোনা কোন প্রবাসী বাঙালি।
রোজান ও আজান দুই ভাই,তাদের বাবা কাজী জসিম উদ্দিন ও মা রওশন আরা খাতুন রেখা।স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার আমেরিকা প্রবাসী কাজী জসিম উদ্দিনের সুখের সংসার।
স্ত্রী সন্তান নিয়ে কিছুদিন আগেও ঘুরে এসেছেন পৃথিবীর অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের নান্দনিক নিদর্শন আমেরিকা ও কানাডা সীমান্তের নায়াগ্রা জলপ্রপাতে।
সুখের এই ছোট্ট কুটিরে আঘাত হানে প্রাণঘাতী অদৃশ্য জীবাণু কবিড-১৯ করোনা ভাইরাস।
কাজী জসিম নিজেই ড্রাইভ করেন,সতর্ক জীবনের ফাঁক ফোঁকর ভেদ করে তাকেই আক্রমণ করে বসে চায়না থেকে ছড়িয়ে পরা সারাবিশ্বের অদৃশ্য হুমকি এই করোনা ভাইরাস।ক্রমান্বয়ে স্ত্রী এবং দুই ছেলে সহ পরিবারের ৪জনই করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরেন।
মরণঘাতী করোনা যখন বিশ্বে মরণ খেলায় মত্ত্ব,নিউইয়র্কের হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী ভর্তির দীর্ঘ অপেক্ষা তখন মানষিকভাবে ভেঙে না পড়ে চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আইসোলেশনের থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন কাজী জসিম।দীর্ঘ প্রায় এক মাস করোনার সাথে যুদ্ধ করে তাঁরা এখন পুরোপুরি সুস্থ্য।তাদের কণ্ঠে এখন আত্মবিশ্বাস ও স্বস্তির নিঃশ্বাস।
ছেলেদের হৈ-হল্লোরে আবারো মুখোরিত ভালোবাসার ছোট্ট নীড়।পরম ভাগ্য বিধাতা করুণাময় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বন্ধু-নিকটাত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ীদের যারা এই মানবিক বিপর্যয়ের সময়ে পাশে থেকে খোঁজ-খবর নিয়েছেন ও সাহস জুগিয়েছেন।
৫২বাংলার মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন-মহামারী করোনা থেকে সচেতন ও বেঁচে থাকার জন্য বাস্তব জীবনের কঠিন যুদ্ধ জয়ের নিয়ামক পরামর্শ হলো;-
১. গরম পানিতে লবণ দিয়ে গার্গেল করতে হবে নিয়মিত। অন্তত আধা ঘণ্টা পর পর। আদা-লেবু সম্ভব হলে মধু দিয়ে একটু পরে পরে লাল চা খেতে হবে। এতে আপনার শরীরের কষ্ট কমবে। গলাব্যথা ও শ্বাস কষ্ট কমবে। কাশিটা হালকা হবে। যেরকম চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলেন- করোনার টার্গেটই থাকে আপনার ফুসফুসে আক্রমণ করা। গরম লিকুইড পান করলে তা গলা দিয়ে পাকস্থলিতে যাওয়ার সাথে সাথে পাকস্থলিতে করোনার চেয়ে এক ধরনের শক্তিশালী ভাইরাস থাকে, যেগুলো করোনাকে মেরে ফেলে। গোসলও করতে হবে গরম পানিতে।
২. আপনার ক্ষুধামন্দা ও স্বাদগন্ধ নষ্ট হয়ে যাবে। এর পরেও শরীরটাকে সুস্থ রাখার জন্য স্যুপসহ অন্যান্য গরম খাবার খেতে হবে। ঠাণ্ডা পানি একদম খাওয়া যাবে না। ফল হিসেবে উনারা কমলা, আপেল ও আনারস খেয়েছেন।
৩. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না। কারণ একেক জনের ইমিউন সিস্টেম একেক রকম। তবে জ্বর নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন মতো টায়লনেল বা Acetaminophen ট্যাবলেট খেতে বলেছেন ৬ ঘণ্টা পর পর। ডোজ হবে আপনার বয়স ও শরীরের ওজন অনুসারে।
করোনাজয়ী জসীম উদ্দীনের মতে, আপনি যদি সুস্থও থাকেন তাহলেও খাওয়াসহ এ অভ্যাসগুলো এখন থেকেই রপ্ত করা প্রয়োজন।