সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৫ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
লন্ডনে বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস ২৮ অক্টোবর থাকছে নানা চমকপ্রদ আয়োজন  » «   বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২নং বাসভবন ভস্মীভূত এবং ভাস্কর্য ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ  » «    অদ্ভুত দেশপ্রেম ও খাঁটি ব্যক্তিগত স্বার্থ  » «   বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবারে বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরামের স্মারকলিপি প্রদান  » «   দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

করোনায় করুন চিকিৎসা
আবু সাইদ চৌধুরী সাদি



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

করোনা ভাইরাস আজ বিশ্বব্যাপী মহামারি রুপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও এই মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই মৃত্যুবরণ করছেন। এই রোগ শনাক্তকরণ বা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন জরুরী স্বাহ্যসেবার।কিন্তু এ রোগের সাধারন লক্ষণ নির্ণয় করার আগে কোন পরীক্ষা ছাড়াই করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে বিনা চিকিৎসা ও অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন কিছু মানুষ।আর এ আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন স্বয়ং স্বাহ্য সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা । বর্তমানে আমাদের দেশের চিকিৎসার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। কোন সাধারন রোগের স্বাভাবিক চিকিৎসা হচ্ছেনা। বেশীরভাগ ডাক্তার তাঁদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখছেন না। মোটামুটি সবার চেম্বার বন্ধ। বেসরকারি কোন হাসপাতালে গেলে আপনি ডাক্তার পাবেন না।বেসরকারি হাসপাতালগুলো খোলা আছে কিন্তু কোন ডাক্তার নেই। করোনা আতঙ্কের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সাধারন মানুষ দিন-রাত অতিবাহিত করছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সরকারের দায়িত্বশীলরা দীর্ঘদিন থেকে মানুষকে আশ্বাস দিয়ে আসছেন করোনা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতির কোন অভাব নেই বলে। কিন্তু যারা করোনা ভাইরাসে আমাদের চিকিৎসা দিবেন যারা, তাঁরা প্রস্তুত কিনা সরকার কি একটিবারের জন্য এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করেছেন। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা দুরে থাক । সাধারন রোগের চিকিৎসা থেকে যে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে এ ব্যাপারে সরকার কতটুকু অবগত আছেন । সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টরা যতই ঢোল পেটাক আর একেক সময় একেকটি উন্নত দেশের সঙ্গে আমাদের তুলনা করুক। তাতে আমাদের সামর্থ্যের কোন হেরফের হবে না। আমাদের সামর্থ্য কতটুকু আছে আমরা তা ভাল করেই জানি।

একশ্রেণীর অভিজাত লোকদের  আবাসস্হল রাজধানী ঢাকা মোটামুটি নিরাপদ । ঢাকা এখন পুরোটাই ফাঁকা । আর ফাঁকা মানেই নিরাপদ।আর করোনা শনাক্তকরণ কার্যক্রম যেহেতু শুধুমাত্র ঢাকা থেকে পরিচালিত হয় সে ক্ষেত্রে নিজেদের স্বাহ্যসেবা অনেকটা নিশ্চিত। বিদেশীরা এ উদ্যোগের পরও স্বস্থিতে নেই ।  বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশীরা বাংলাদেশ ত্যাগ করেছে।সরকারের এই লকডাউনের কারণে মানুষ যেভাবে দলে দলে রাজধানী ছেড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেছে তাতে এ রোগের বিস্তার সহজে গ্রামে-গন্জে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশী। আর যদি এটি ছড়িয়ে পড়ে তাহলে বাংলাদেশে এটি মহা-মহামারিতে রুপ নিবে। যেখানে বাংলাদেশে প্রায় ১৮০মিলিয়ন মানুষের বসবাস।সেখানে আইইডিসিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী মাত্র এক হাজার একশত পঁচাশি জনগণকে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়েছে। যা সংখ্যার দিক দিয়ে অত্যন্ত নগণ্য।

সরকার আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত বাহিনীকে তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে এবং তাঁরা যথাযথভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করছে।কিন্তু সময়ের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় একটি জায়গায় সরকার আটকে গেছে। চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় জায়গাটি একেবারে নড়বড় হয়ে গেছে। অনেকেই বলছেন স্বাহ্যসেবা বাড়ানোর জন্য এবং আর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করণের প্রক্রিয়ার সাথে সংযুক্ত করার জন্য।

করোনা হচ্ছে বিশ্ব মহামারি, এ ক্ষেত্রে এটি যে সরকারের ব্যর্থতা তা না। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশ যখন এ মহামারিতে আক্রান্ত তখন আমাদের উচিত ছিল বাস্তবতা জনগণের সামনে তুলে ধরা।আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। এ সীমাবদ্ধতার কথা জনগণ জানলে ভালই হয়, এতে জনগণ আরও সতর্ক হব বলেই আমরা বিশ্বাস করি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন এ মহামারি মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে এবং সামাজিক সচেতনতার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। করোনা মোকাবেলায় সরকারী, বেসরকারি উদ্যোক্তারা মিলে প্রয়োজনীয় প্রতিটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে এই মহামারিকে কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে।

মানবতার জন্য যে পেশার মানুষদের আজ বিশ্বের সকল দেশের মানুষ স্যালুট দিচ্ছে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে যেন ব্যতিক্রম।বাংলাদেশের এ অভিজাত শ্রেণীর লোক অর্থাৎ ডাক্তাররা যেন অদৃশ্য হয়ে আছেন। তাঁদের উপর যে মানবিক দায়িত্ব তা থেকে অনেকেই সরে গেছেন।তাঁরা ভুলে গেছেন যে তারা ডাক্তার,মানবসেবা তাঁদের পেশা। তাঁদের অনেকেই যারা প্রাইভেট চেম্বারে প্রতিদিন শত রোগী দেখে পকেটভারী করতেন তাঁদের অধিকাংশই এখন কর্মক্ষেত্রে নেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলো ডাক্তারের অভাবে মৃতপ্রায় ।জনগণের টাকায় যারা সরকারী মেডিকেল কলেজে পড়ে ডাক্তার হলেন,মানবজাতির এই দু:সময়ে যাঁদের প্রয়োজন খুব বেশী।

আজ উন্নত বিশ্বে হাজার-হাজার মানুষ প্রতিদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। শত-শত মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে আশ্চর্য হলেও সত্য প্রতিটি মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে। ডাক্তাররা নিজের জীবন বাজি রেখে রোগীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দেশের ক্রান্তিকালে অবসরে যাওয়া ডাক্তার নার্সরা রোগীদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন।যারা ঘরে আছেন ডাক্তার ও নার্সদের পরামর্শ পাচ্ছেন। আর আমাদের দেশের ডাক্তারদের অনেকের ফোন বন্ধ। অনেকের ফোনে শত চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ করছেন না । প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার স্বল্পতা।অনেকেই ডাক্তারের সাক্ষাত পাওয়ার জন্য আহাজারি করছেন। মানুষ সাধারন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, কিন্তু কেউ একটু পরামর্শ পাচ্ছেনা এরকম অভিযোগ বিস্তর। একজন পিতা তাঁর অসুস্থ একমাত্র সন্তানের জন্য ভোরবেলা থেকে আর্তনাদ করছে। তাঁকে সাহায্যের জন্য অনেকেই এগিয়ে এলেও সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিটির সন্ধান কেউ দিতে পারেনি। ডাক্তার বাবুরা মানুষের রক্তচোষে যে ব্যাংক ব্যালেন্স করেছেন।উনাদের অনেক দিন না কামালেও চলবে। কিন্ত সাধারন মানুষের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য সরকার যে জনগণের টাকা খরচ করে আপনাদের ডাক্তার বানালো এর জবাব কে দিবে ।

সরকারের এখন গভীরভাবে ভাবা উচিত চিকিৎসা সেবায় আমাদের দেশকে কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। এ জন্য একটা আমুল পরিবর্তনের প্রয়োজন। সরকার যদি এবারের এই করোনা ভাইরাস থেকে শিক্ষা নিয়ে,বাংলাদেশের স্বাহ্য সেবার উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি জেলা শহরে একাধিক আধুনিক হাসপাতাল গড়ে তুলে। তাহলে মানুষরুপী অনেক ডাক্তাররা রক্তচোষে কাড়ি কাড়ি টাকা জমাতে পারবেনা। এখন সময়ের দাবি প্রতিটি জেলা শহরে একাধিক সরকারী হাসপাতাল গড়ে তোলা।মানুষের উন্নত স্বাহ্যসেবা নিশ্চিত করা।মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে স্বাহ্য সেবায় আমরা অনেক পিছিয়ে।একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হলে চিকিৎসা সেবায় আমাদের উন্নতি আবশ্যক। যতদিন না সরকার জনগণের জন্য উন্নত স্বাহ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারবে ততদিন সরকার ও সাধারন জনগণ একটি গোষ্টি বা শ্রেণীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকবে। যা উন্নত সমাজ বা জাতি গঠনের জন্য বড় প্রতিবন্ধক।

আবু সাইদ চৌধুরী সাদি, লিভারপুল যুক্তরাজ্য


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন