শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
বিসিএ রেস্টুরেন্ট কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এনএইচএস এর ‘টকিং থেরাপিস’ সার্ভিস ক্যাম্পেইন করবে  » «   গ্রেটার বড়লেখা এসোশিয়েশন ইউকে নতুন প্রজন্মদের নিয়ে কাজ করবে  » «   স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল  » «   কানাডা যাত্রায়  ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা এড়াতে সচেতন হোন  » «   ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন ক্যানসারে আক্রান্ত  » «   যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের অনুদান  » «   বড়লেখায় পাহাড়ি রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এলো শিলাখণ্ড  » «   মাইল এন্ড পার্কে ট্রিস ফর সিটিস এর কমিউনিটি বৃক্ষরোপণ  » «   রয়েল টাইগার্স স্পোর্টস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  » «   গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সভা ও নির্বাচন সম্পন্ন  » «   যুক্তরাজ্যবাসি  সাংবা‌দিক সাইদুল ইসলামের পিতা আব্দুল ওয়াহিদের ইন্তেকাল  » «   ইউকে বাংলা রিপোটার্স ইউনিটি‘র নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক  » «   রোটারিয়ান মোহাম্মদ খতিবুর রহমান বার্লিন যাচ্ছেন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের নতুন বাজেটে হাউজিং, শিক্ষা, অপরাধ দমন, তরুণ, বয়স্ক ও মহিলাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচিতে বিপুল বিনিয়োগ প্রস্তাব  » «   আজীবন সম্মাননা পেলেন সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

তবুও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এমন নয় যে বিশ্বব্যাপী কোন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে যার জন্য প্রাণভয়ে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না বরং বাধ্য হয়ে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু কোন যুদ্ধ ছাড়াই কার্যতঃ সারা পৃথিবীর মানুষ আজ অনেকটা স্বেচ্চায় গৃহবন্দি; এটাই সত্যি। আবার যদি বলি বিশ্বব্যাপী এক অন্যরকম যুদ্ধ চলছে, তাও বোধহয় ভুল বলা হবেনা। যে যুদ্ধে গোটা পৃথিবীর মানুষ আজ কোভিড-১৯ নামক এক অভিন্ন শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য প্রাণ পণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর ঘরে বসে থাকাও এই যুদ্ধ জয়ের একটা কৌশল বলা যেতে পারে। শুধু ঘরে বসে থাকা নয় একের পর এক লকডাউন করা হয়েছে পৃথিবীর বড় বড় শহর। এমন দৃশ্য পৃথিবী এর আগে কখনো দেখেছে কিনা জানা নেই। পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ দেশেরই আন্তর্জাতিক ফ্লা্ইট বন্ধ রয়েছে। শুধু ফ্লাইট নয় জলপথ, স্থলপথে বন্ধ রয়েছে স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কার্যতঃ অচল হয়ে পড়েছে গোটা পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা।

কোন যুদ্ধের দামামা ছাড়াই বিশ্বের এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত সাদা-কালো, হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোন জাত ধর্মের যাচাই বাছাই ছাড়া কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে কেবলই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। করোনা নামক এক ভাইরাস আধুনিক পৃথিবীর চিকিৎসা বিজ্ঞানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চীনের উহান প্রদেশ থেকে আরম্ভ করে ইটালী, স্পেন, ফ্রান্স, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর ১৯৮টি দেশের ছয় লাখেরও অধিক মানুষকে আক্রান্ত করেছে। এ পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে তেত্রিশ হাজারের অধিক প্রাণ (এই লেখা যখন লিখছি তখন পর্যন্ত)। প্রতিঘন্টায় বাড়ছে এ সংখ্যা। এই তালিকা
থেকে বাদ যায়নি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও।

আইইডিসিআর এর তথ্যমতে এরই মধ্যে বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছে ৫১ জন মানুষ, মৃত্যু হয়েছে পাঁচ-ছয় জনের।। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে সংক্রামক ব্যাধি করোনা ছড়িয়ে পড়লে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হবে এই সোনার বাংলা। এটা অনুধাবন করতে পেরেই সরকার দেশের মানুষকে আহবান জানিয়েছেন ঘরে থাকার জন্য।যেহেতু এই ভাইরাসটির কোন প্রতিষেধক এখনও তৈরি হয়নি সেই কারণে আপাতত সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। এ মর্মে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিদিন স্বাস্থ্যসচেতনতার জন্য সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করাসহ বিভিন্ন উপদেশ দিচ্ছেন। সেই সাথে করোনা মোকাবেলায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে চিকিৎসকসহ সবাই যে বিষয়টির উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তাহলো সচেতনতার পাশাপাশি সবাইকে বলা হচ্ছে- স্টে এ্যাট হোম অর্থাৎ ঘরে থাকুন। সাধারণ মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। সবাইকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলার আহবান জানানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর এই আবহমান বাংলায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলা খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু কোন উপায় নেই, বিধি বাম সংক্রামক ব্যাধি কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে এর কোন বিকল্প নেই আপাতত। এতোদিন শুনে এসেছি মানুষের সাথে না মিশলে বলা হতো অসামাজিক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে, মানুষের সাথে না মিশতে কিংবা ভদ্রভাবে বলতে গেলে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে কিংবা
যদি বলি বাধ্য করা হচ্ছে কেবলই মহামারী থেকে উত্তোরণের জন্য। এমন এক ব্যাধির আবির্ভাব ঘটেছে যার কারণে পুরো বিশ্ব আজ লকডাউন, বিশ্বের মানুষ নিজ গৃহে স্বেচ্চায় অবরুদ্ধ যাকে হালের আলোচনায় বলা হচ্ছে হোম কোয়ারেন্টাইন।

এতদিন যে ছেলেটি বাইরে না গেলে, বন্ধুদের সাথে দিনে অন্তত একবার আড্ডায় মিলিত না হলে পেটের ভাত হজম হতোনা সেই আড্ডা প্রিয় তরুণটিও কিন্তু বাসার চারদেয়ালে স্বেচ্চায় কোন অভিযোগ ছাড়াই বন্দি হয়ে আছে। কেউ কারো বাসায় যাচ্ছেনা,কোন কারণে যদি কেউ না বলে বাসায় চলে আসছে এক সময়ের সবচেয়ে অতিথি পরায়ন মানুষটিও প্রচন্ড বিরক্তি বোধ করছে। পাড়ার মোড়ে যুবকদের কোন আড্ডা নেই, মসজিদ ছাড়া যিনি এক ওয়াক্ত নামাজও পড়তেন না তিনিও বাসায় নামাজ পড়ছেন। এমন সব অস্বাভাবিক দৃশ্য এর আগে বাঙ্গালী দেখেছে বলে আমার জানা নেই। এসবের একমাত্র কারণ সংক্রামক ব্যাধি কভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস। পুরো বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে এই করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে এখনো বাজারে কোন মেডিসিন না থাকায় করোনা আক্তান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। যেহেতু আপাতত কোন প্রতিষেধক নেই কাজেই প্রতিরোধক হিসেবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শমতে সচেতনতা অবলম্বন করা এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলার কোন বিকল্প নেই। আরো স্পষ্ট করে বললে ঘরে থাকার কোন বিকল্প নেই।

লক্ষ্যণীয় দিক হলো রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা মেনে এখন পর্যন্ত দেশের মানুষ একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে খুব একটা বের হচ্ছেনা। প্রায়শঃই এমন কথা শুনেছি বাঙ্গালী নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এবার সরকারী নির্দেশনা মেনে দেশের মানুষ যেভাবে দায়িত্বশীল আচরণ করছে- গ্রামেগঞ্জে, শহরে-বন্দরে প্রায় প্রত্যেকে নিজেকে চার দেয়ালে আবদ্ধ করে রেখেছে, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া অধিকাংশ মানুষই ঘরের বাইরে যাচ্ছেনা যা সত্যিই প্রশংসনীয়। তারপরও যারা বাসায় থেকে থেকে বিরক্তিবোধ করে অপ্রয়োজনে বাসার বাইরে অহেতুক ঘোরাফেরা করছেন তাদেরকে বলি নিজের সুস্থতার কথা ভেবে, দেশের তথা বিশ্বের মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে কষ্ট হলেও দয়া করে ঘরে থাকুন। সংবাদ সংগ্রহের কাজে সাংবাদিকদের বাইরে যেতেই হয়। এই দুর্যোগপূর্ণ সময়েও আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বটুকু ঝুঁকি নিয়েই পালন করে চলেছেন সাংবাদিকরা। তাঁদেরকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আমাদের উচিত অন্তত ঘরে থাকার দায়িত্বটুকু পালন করা। আলাপকালে একজন বন্ধুবর সাংবাদিক সবার উদ্দেশ্যে বলছিলেন, আপনারা ঘরে থাকুন, নিজে সুরক্ষিত থাকুন এবং আমাদের সুরক্ষিত রাখুন। একজন ডাক্তার বন্ধুর সাথে আলাপকালে তিনি বলছিলেন, “মোটামুটি অনেকদিনই তো হলো চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছি কিন্তু এমন মহামারী তথা আতংক এর আগে আর কখনো দেখিনি। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় আসুন, যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করি।এই মুহুর্তে আপনাদের যা করণীয়- দয়া করে ঘরে থাকুন, সচেতন থাকুন এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন।”

অনাকাংখিত মহামারী মোকাবেলায় সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করেছে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত, টানা দশ দিনের সরকারী ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে।রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথ, এমনকি বিমান পথেও চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে। বিদেশ থেকে আসা লোকদের ক্ষেত্রে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন চালু করেছে। এছাড়াও যেকোন ধরনের সভা সমাবেশ ধর্মীয় সামাজিক অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এইপরিস্থিতি মোকাবেলা করা সরকারের একার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়। দেশের নাগরিকদেরকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। এবং আমার মনেহয় আপাতত সরকারের নির্দেশনা মেনে শত কষ্ট হলেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে প্রত্যেকে নিজেদের ঘরে অবস্থান করলেই এই সমস্যা মোকাবেলা করা সরকারের জন্য অনেকটা সহজ হবে। অনুগ্রহ করে ঘরে থাকুন।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন