ফ্রান্সে করোনাভাইরাস দিন দিন মহামারিতে রুপ নিচ্ছে। প্রতিদিন ঘন্টায় ঘন্টায় বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে অসংখ্য মানুষের নাম।
বিশ্বের করোনাভাইরাস আক্রান্তের তালিকায় এখন ফ্রান্সের স্থান সপ্তম। ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্স এর স্থান হচ্ছে চতুর্থ।
সমুদ্রবেষ্টিত ফ্রান্সে বাস করছেন পৃথিবীর নানা দেশের অভিবাসী। রয়েছে যুদ্ধ বিধ্ধস্থ বিভিন্ন দেশ থেকে আশ্রয় নেয়া অনেক রিফিউজি। যাদের মধ্যে কারোনাভাইরাস মহামারিতে রুপ নেবার সমূহ আশংকা রয়েছে বলে স্বাষ্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে সতর্ক করেছেন দেশটির সরকারকে।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে, সমগ্র দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৬ হাজার ১৮ জন। এবং মৃত্যু হয়েছে ৬৭৪ জনের ।
দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থতা হয়েছেন ২ হাজার ২০০ জন। গুরুতর অসুস্থ আছেন মোট আক্রান্তের ১৩ শতাংশ রোগী। সংখ্যায় তা ১ হাজার ৭৪৬ জন ।
করোনা আক্রান্তদের মধ্যে থেকেও আসছে আশার আলো। মোট আক্রান্তের মধ্য থেকে সুস্থ হয়েছেন এ পর্যন্ত ২২০০। যা মোট আক্রান্তের ৭৭ ভাগ। তবে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে কোন বাংলাদেশীর করোনায় আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।
ফ্রান্সে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২২শে মার্চ মারা গেছেন একজন ডাক্তার। সংবাদটির তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফ্রান্সের স্বাস্থমন্ত্রী অলিভার ব্যারন ।
দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল মেকরন জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে সবাইকে হোম কোরাইন্টেনে থাকার আদেশ জারি করলেও ফ্রান্সের জনগণ এই আদেশ অমান্য করে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে, পার্কে ও রাস্তায় চলাফেরা করছে।
তবে এখন পুলিশ শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে। আইন অমান্যকারীদেরকে একশত ৩৫ ইউরো জরিমানা করা হচ্ছে। অনাদায়ে তাদেরকে নিদৃষ্ট মেয়াদে বিভিন্ন শাস্তি ভোগ করতে হবে। ফার্মেসী, খাদ্য সামগ্রীর দোকান ছাড়া বাকী সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
ফ্রান্সে প্রায় লক্ষ প্রবাসীদের বাস। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপদে আছেন আন ডকুমেন্টেড বাংলাদেশী প্রবাসীরা। ফলে এই বিপর্যয়েও তারা সরকারী কোন সুবিধা পাচ্ছেন না। কাজ নেই। বাসাভাড়া এবং খাওয়া দাওয়ার খরচ কোলাতে তাদের রীতিমতো কঠিন সময় পার করছেন।
যত সময় যাচ্ছে ফ্রান্সের পাতালরেল এবং গণপরিবহণ যাত্রী শূণ্য হচ্ছে। প্যারিসের পর্যটন এলাকা কার্যত এখন জনশূণ্য হয়ে আছে।
এমনিতেই ইউরোপের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির নগরী খ্যাত ফ্রান্সের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ নাজুক। তার উপর রয়েছে সরকারের বিভিন্ন ছাটাই ও কর আরোপনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন।এই অবস্থায় যোগ হয়েছে করোনা মহামারি। ফ্রান্সের অর্থনীতিতে এ যেন মরার উপর খাড়ায় গা।
করোনাভাইরাস মহামারি বেশীদিন স্থায়ি হলে- ফ্রান্সের অর্থনীতি একেবারে তলানীতে চলে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
কণ্ঠ: জান্নাতুল ফেরদৌস নিগার