১৮ মার্চ বুধবার পূর্ব লন্ডনের লন্ডন মুসলিম সেন্টারে কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটস উদ্যোগে কোভিড 19 বা করোনা ভাইরাস সঙ্কটের আলোকে এলাকার মসজিদগুলিকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করার জন্য একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটস এর চেয়ারম্যান মাওলানা শামসুল হকের সভাপতিত্বে এ জরুরি সভায় রয়েল লন্ডন হাসপাতালের সিনিয়র করোনা ভাইরাস গবেষক
ডাঃ উমর ইব্রাহিমসা (সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এনএইচএস লন্ডন) ও ডাঃ উসমান দার (রয়েল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান এর জনস্বাস্থ্য অনুষদের ফেলো) উপস্থিত ছিলেন ।
তারা উভয়ই করোনার ভাইরাসের হুমকিতে সরকারের চলমান কমৃকান্ডের সাথে কাজ করছেন। করোনা ভাইরাসের হুমকি নিয়ে তারা বিস্তারিত আলোচনা করে তাঁরা করোনার হুমকি ও ক্ষতির দিক গুলো আলোচনায় তুলে ধরেন। তারা উল্লেখ করেন, সাধারণত খোলা মেলা জায়গা থেকে মসজিদের ভিতর কয়েকগুন বেশি আক্রান্ত করে করোনা ভাইরাস, সে জন্য একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে এবং সেজন্য মসজিদ গুলো কিছুদিনের জন্য জনসাধারণের প্রবেশাধিকার স্থগিত করার পরামর্শ দেন । উক্ত অনুষ্টানে ইস্ট লন্ডন মসজিদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, খতিব ও ঈমাম শেখ আব্দুল কাইয়ুম, কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটস এর ট্রেজারার মোঃ আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, আলহুদা মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহসহ প্রায় পঞ্চাশটি মসজিদের প্রতিনিধি, ঈমাম, স্কলার্স ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন ।
বর্তমান সকল পরিস্তিতি বিবেচনা করে উপস্থিত সবার পরামর্শ ক্রমে কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটস এর পক্ষ থেকে সমস্ত মসজিদ কমিটির সদস্যদের নিম্নলিখিত পরামর্শ গুলি বাস্তবায়িত করার জন্য অনুরুধ জানানো হচ্ছে ।
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা, এবং তাঁর চূড়ান্ত বার্তাবাহক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি শান্তি ও বরকত। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের ধৈর্য্য দান করার, তাঁর প্রতি আমাদের নির্ভরতা শক্তিশালী করার এবং আমাদের সকল এবাদত ও সৎকর্মগুলি কবুল করুক ।
পরবর্তীতে মুসলিম সেন্টারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের সাম্প্রতিক পরামর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, আমাদের কমিউনিটির চিকিৎসা পেশাদারদের কাছ থেকে এবং আমাদের ইমামগণ ইসলামী গবেষক, স্কলার এবং অন্যান্য মসজিদ ও কেন্দ্রগুলির সাথে পরামর্শক্রমে খুব সাবধানতার সাথে বিবেচনা করে আমরা জুম্মা সালাহে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার স্থগিত করার জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি (শুক্রবার জুম্মার নামাজ ) ২০ মার্চ শুক্রবার থেকে।
বাকি নিয়মিত জামাতকারী সালাহের ব্যাপারে প্রতিটি মসজিদ কমিটিকে তাদের স্থানীয় কমিটির সাথে আলাপ কিরে প্রয়োজনীয় ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। আরো সুপারিশ করা হয় যে সবচেয়ে দুর্বল বয়স্ক গ্রুপের ব্যক্তিদের ঘরে বসে তাদের সালাহ পূর্ণ করা উচিত। এর মধ্যে যে ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত:
১. বয়স ৬০ এবং তারও বেশি
২. ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয় করা
৩. দীর্ঘস্থায়ী হার্ট বা শ্বাসকষ্টের অবস্থা (যেমন হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের অন্যান্য সমস্যা)
৪. উচ্চ রক্তচাপ
৫. বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্ত বা পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং যাদের ওজন বেশি
যে মসজিদগুলি নিয়মিত জামাত সালাহে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলি মসজিদে অল্প সময় সীমাবদ্ধ করা উচিত, সালাহর ১০ মিনিট আগে দরজা খোলার এবং সমস্ত উপস্থিত মুসল্লিদের ঘরে সুন্নাত ও নফল সালাত পড়তে উৎসাহিত করা উচিত।
উক্ত অনুষ্টানে ইস্ট মসজিদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন ”সরকারের সাম্প্রতিক পরামর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, ইমামগণের সাথে পরামর্শ করে এবং মুসল্লিদের কথা বিবেচনা করার পর আমরা ইস্ট মসজিদে অস্থায়ীভাবে প্রবেশাধিকার স্থগিত করার জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা ১৯ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে সকল জামাত ও জুম্মাহ নামাজের ক্ষেত্রে (শুক্রবারের নামাজ) প্রযোজ্য।এ ব্যাপারে আমরা নিয়মিত প্রচার করতে থাকব, ইনশাআল্লাহ। আমরা নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে পরবর্তী জামাত এর ব্যাপারে সবাইকে অবহিত করবো ইনশাআল্লাহ । মসজিদ এর সাথে সবার যোগাযোগ রাখার জন্য সকল ব্যবস্থাও নেয়া হবে এবং মসজিদের পক্ষ থেকে অসহায় ও দুর্বলদের কীভাবে সহায়তা করা যায়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি। আল্লাহ্ আমাদের সকলকে এই পরীক্ষার কঠিন সময়ে সহায়তা করুন।”