সৈয়দ আহমদুল হক ‘পইলের সাব’ নামেই পরিচিত। একজন ন্যায় পরায়ন মানুষ হিসেবে তিনি হবিগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে অর্জন করেছিলেন আস্থা আর বিশ্বাস। একজন ন্যায়বিচারক হিসেবে তার বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। তার চিরবিদায় বেলায়ও আস্থার চিত্র দেখে বিস্মিত হয়েছেন জানাজায় অংশ নেয়া লাখো মুসল্লি।
জীবদ্দশায় সালিশ-বিচারের ৩২ কোটি টাকা তার কাছে আমানত হিসেবে জমা করেছিলেন বিরোধী পক্ষরা। যার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব তিনি রেখে গেছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বাড়িতে এসে মৃত্যুর তিন দিন আগে থেকেই কর্মময় জীবনে সালিশ-বিচারে তার কাছে জমা হওয়া ৩২ কোটি টাকার হিসাব ছেলেকে বুঝিয়ে গেছেন।
জানাজার আগে মরহুম সৈয়দ আহমদুল হকের ছেলে পইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ‘তার বাবা সারা জীবন সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণমানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করে গেছেন। জীবনের শেষ মুহূর্তে এসেও তিনি এ লক্ষ্যে কাজ করেছেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ৩১ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের সাহেব বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ আহমদুল হক। বাবা সৈয়দ জাহেদুল হক ছিলেন পইল ইউনিয়নের কয়েকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আহমদুল হক ১৯৬৮ সালে বৃন্দাবন সরকারি কলেজ থেকে বিকম ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর কয়েক বছর একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।
একপর্যায়ে জনগণের চাওয়ার মূল্যায়ন দিতে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে ১৯৮৪ সালে পইল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ২৪ বছর তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৫ সালে প্রথম সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর চারবার উপজেলা নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। এর মাঝে একবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার উন্নত চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু এতে কোনো উন্নতি হয়নি। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পইল গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন। শুক্রবার বিকেলে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হ