সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
শৈশবস্মৃতি
প্রবল শীতের এক রাতে দাদি বললেন, ‘গাউত বাঘ আইছে!’
‘তুমি বুঝলায় কিলা? তোমারে আইয়া কইয়া গেছেনি?’ জিগাই তাঁরে।
‘না, ফেউয়ালির ডাক হুনচি, বাঘ আইলে ফেউয়ালি ডাকে আর দৌড়ায়।’ ব্যাখ্যা দেন দাদি।
আমি বলি, ‘হোয়াট ইজ ফেউয়ালি?’
হাসতে হাসতে কুটিকুটি হয়ে বুড়ি বলেন, ‘তুইন ইতা বুঝতেনায়, যা ভাগ!’
বুড়ি আজ পৃথিবীতে নেই। কিন্তু মনে পড়ে, তাঁর কথা সত্যি হয়েছিল। একটা চিতা-জননী, হয়ত পথভুলে, দুইটা শাবকসহ এসেছিল আমাদের গ্রামে। আমাদের উঠানে এসে বসেছিল শেষরাতে! সে উত্তেজনা কোনোদিন ভুলবার নয়।
অভাজনের অর্থনীতি
‘বাজারো বাঘ আইছে’ বললেন তিনি। আমার ঠিক পেছনে, মাথায় ঘাসের বস্তা নিয়ে হাঁটছেন। অতি সাধারণ দরিদ্র কৃষক। নিরক্ষর। লুঙ্গিটা হাঁটুর উপরে তোলা, কাদায় মাখামাখি হয়ে আছে। হাত-পায়ের শক্ত আর ফোলা পেশীগুলো সুলতানের পেইন্টিং মনে করিয়ে দেয়।
তাঁরে জিগাই, ‘আফনে বুঝলা কিলা?’
‘ফেউয়ালির ডাক হুনিয়ার।’
আমাকে স্তম্ভিত করে দিয়ে নিঃশব্দে হাঁটতে থাকেন তিনি।
‘ফেউয়ালির ডাক!’ প্রবল কৌতূহলে তাঁর দিকে ফিরে দাঁড়াই।
‘তুমি ছাবাল মানুষ, হখলতা বুঝতায়নায়; কারেন্টবিল, গাড়িভাড়া, পিয়াজ-তেলর দাম লইয়া চিন্তা করিও, ফেউয়ালির ডাক হুনবায়!’
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন