স্পেনের মাদ্রিদে সম্পন্ন হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ফিতুর ২০২০’। ২২ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘ফিতুর’ এর ৪০তম আসরে বিশ্বের ১৬৫টি দেশের ১১ হাজার ৪০টি পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ‘ফেরিয়া দে মাদ্রিদ’ নামক আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত এ মেলায় রেকর্ড সংখ্যক ২ লক্ষ ৫৫ হাজার দর্শনার্থী উপস্থিত হয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ভ্রমনপ্রিয় পর্যটকদের কাছে নিজেদের দেশের শিল্প, সংস্কৃতির পাশাপাশি পর্যটন স্থানগুলোকে পরিচয় করিয়ে দেয়া ও তাদের দেশ ভ্রমণে আগ্রহ সৃষ্টি করতে ‘ফিতুর’-এ ট্যুর অপারেটররা পাঁচদিন নানা কৌশলী ব্যবস্থার আয়োজন করেন। প্যাভিলিয়নের সামনে নিজস্ব সংস্কৃতির পোষাক পরিধান করে নৃত্য করতে কিংবা গান পরিবেশন করতেও দেখা গেছে। মেলায় কাতার এয়ারলাইন্স, ইবেরিয়া এয়ারলাইন্স ভ্রমণে তাদের নিত্য নতুন সেবা দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরে। স্পেনের রেল যান রেনফে দর্শনার্থীদের জন্য নানা অফার এর ব্যবস্থা করে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের প্যাভিলিয়নে দর্শনার্থীদের জন্য নানা উপহার সামগ্রী রাখা হয়।
‘ফিতুর ২০২০’ এ প্রতিদিনই ছিল বিভিন্ন বিষয়ের উপর সেমিনার, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি পর্যটন বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন। প্রতিবারের মতো এবারের পর্যটন মেলায়ও ‘পর্যটকদের স্বাস্থ্য’ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। ‘ফিতুর হেল্থ’ নিয়ে ছিলো আলাদা প্যাভিলিয়ন ও সেমিনারের ব্যবস্থা। পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিশ্বের বাণিজ্যিক তথ্য পাওয়া, পর্যটকদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং সৃষ্টি করা, পর্যটন পণ্যের বৈশিষ্ট বিশ্লেষণ ও তুলনা, শিল্প বিবর্তন এবং প্রবণতা সম্পর্কিত তথ্যগুলোকে ‘ফিতুর’ এ প্রাধাণ্য দেয়া হয়।
বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার, ভারত এর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া থেকে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ অংশগ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক ট্যুরিজম সেক্টরে ‘গ্লোবাল মিটিং পয়েন্ট’ হিসেবে খ্যাত ‘ফিতুর’-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অনিয়মিত। বাংলাদেশ ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে মোট চারবার এ ‘ফিতুর’-এ অংশগ্রহণ করেছে।
এ প্রসঙ্গে স্পেনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে আগামী ২০২১ সালের ‘ফিতুর’-এ যাতে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে, সে চেষ্টা আমরা করবো।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর স্পেনের মাদ্রিদে ‘ফিতুর’ নামে এ আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিশ্বের শতাধিক দেশের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ট্যুর অপারেটর, পর্যটনবিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক ও লেখকরা উপস্থিত থাকেন এ মেলায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লক্ষাধিক দর্শনার্থীর কাছে নিজেদের দেশের পর্যটন শিল্পকে পরিচয় কিংবা পৌঁছে দেয়ার সুযোগ নিতে তাই ‘ফিতুর’ এ অংশগ্রহণ করে শতাধিক দেশের পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।