বাংলাদেশ সেন্টারের চেয়ারম্যান ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেছেন, বাংলাদেশ সেন্টারের সাথে বাংলাদেশ হাই কমিশনের একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে।১৯৭১ সালের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে এ সেন্টারে বাংলাদেশের প্রথম দূতাবাস ছিল।তিনি সেন্টার প্রতিষ্ঠায় যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।এ সেন্টার ক্রয়ে বাংলাদেশ সরকার আর্থিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন ,যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনন্য অবদানের স্মারক ও গৌরবের এ প্রতিষ্ঠানকে একটি প্লাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যেখানে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির চর্চ্চা হবে। তিনি বলেন, এ সেন্টারের সাথে আমাদের নতুন প্রজন্ম বৃটিশ বাংলাদেশীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা এ দেশে আসলে বাংলাদেশ সেন্টারের খোঁজ-খবর নেন এবং খুবই গুরুত্ব দেন।তিনি বলেন, এ বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী। ২০২০-২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনে বাংলাদেশ সেন্টার বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে বলে আমি আশা করছি। তিনি বাংলাদেশ সেন্টারের অডিটোরিয়াম হলের নাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়েল হল রাখার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংগালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা। বঙ্গবন্ধু না হলে আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কথা চিন্তাই করতে পারতাম না।লন্ডনে ‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন আসবেন তখন যেন আমরা তাঁকে বাংলাদেশ সেন্টারে নিয়ে এসে হলের নাম উদ্বোধন করাতে পারি।আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, এ বছরের জুন- জুলাই মাসে বাংলাদেশ সেন্টারের ভবনের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে এ কাজটি যাতে আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারি তার জন্য সেন্টারের সকল সদস্যদের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্টস এন্ড কমিউনিটি সেন্টার১২জানুয়ারি বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডন’র বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সেন্টারের চেয়ারম্যান ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম এ কথাগুলো বলেন।
সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সেন্টারের প্রধান উপদেষ্টা নবাব উদ্দিন, বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনের কাউন্সিলর দেওয়ান মাহমুদুল হক, উপদেষ্টা ডা: হালিমা বেগম আলম,হাজী আব্দুল সফিক, হেলাল উদ্দিন খান,সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন,মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন,মানিক মিয়া,মিস গুলনাহার খান,মাহমুদ এ রউফ, এম এ মতিন,কাউন্সিলর খালেদ আহমদ, মনোজ্জির আলী, ইসবা উদ্দিন, কাউন্সিলর সাদ চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর রুহুল আমীন,সেন্টারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারাউল ইসলাম, যুগ্ম ট্রেজারার শিব্বির আহমদ,সেন্টারের বিভিন্ন উপকমিটির আহবায়কদের মধ্যে ইনামুল হক চৌধুরী (ফিন্যান্স ও ফান্ডরাইজিং) জবরুল ইসলাম (মেম্বারশীপ), শওকত মাহমুদ টিপু ( সাংস্কৃতিক), আলী বেবুল ( মিডিয়া এন্ড পাবলিকেশন্স), একেএম আব্দুল্লাহ ( হেলথ কেয়ার এন্ড এল্ডারলি), দিলওয়ার হোসেন ( হেরিটেজ), জাকির হোসেন ( এডভাইস এন্ড ইনফরমেশন), সাদিক রহমান বকুল ( ইয়ুথ), হাবিবুর রহমান ময়না,আব্দুল বাছির,আব্দুল হান্নান,মুহিব উদ্দিন চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভার প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান শাহানুর খান। এ পর্বে সাধারণ সম্পাদক ও চীফ ট্রেজারার বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও চীফ ট্রেজারার মামুন রশীদ। বিস্তারিত আলোচনার পর তা সর্ব সম্মতিক্রমে অনুমোদন করা হয়। সভার শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন সেন্টারের প্রবীণ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল কাদির। সাধারণ সম্পাদকের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেলোয়ার হোসেন বলেন,চলতি অর্থ বছরে সেন্টারের বিভিন্ন ক্যাটাগরির মেম্বারশীপ ফি বাবত প্রায় ৪৬ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এক দশকেরও বেশি সময় পরে, এই আর্থিক বছরের মধ্যে সেন্টারটি লাভের আলো দেখেছে। প্রায় ২২ হাজার পাউন্ড আয় করতে সক্ষম হয়েছে।
ভবনের সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য বর্তমানে সেন্টারের নানা ধরণের কর্মকান্ড স্থগিত রাখা হয়েছে।কারণ আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা এবং অবশ্যই তহবিলের অভাবও সেন্টারের নানা ধরণের কার্যক্রমগুলিতে প্রভাব ফেলেছে। আমরা বিল্ডারদের আশ্বাসে আশাবাদী যে,এই বছরের জুন / জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হতে পারে এবং নতুন কার্যক্রম চালু করার লক্ষ্যে সেন্টারের নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরু করবে।
চীফ ট্রেজারার মামুন রশীদ তার প্রতিবেদন উল্লেখ করেন, সেন্টার এ বছর ভাড়া বাবত প্রায় ২৬ হাজার পাউন্ড আয় করেছে।
সভায় বাংলাদেশ সেন্টারের চেয়ারম্যান ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম তাঁর বক্তব্যে গত অর্থ বছরের চেয়ে চলতি অর্থ বছরে সেন্টারের আয় দ্বিগুন বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি ভাইস চেয়ারম্যান,সাধারণ সম্পাদক, চীফ ট্রেজারার ও ম্যানেজমেন্ট কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান।