বিজয়ের এই মাসে বিজয় উৎসবের সাথে শীতের বিভিন্ন উৎসবে তুসকোলানা নারী সংস্থার উদ্যোগে বরাবরের মতো শীতের হরেক রকম পিঠা নিয়ে রোমের তুসকোলানা গ্রামবাংলা রেস্টুরেন্ট হলে আয়োজিত হয় “শীতকালীন পিঠা উৎসব”।
শীত আসলেই পিঠা খাওয়াটা ঐতিহ্য হয়ে দাড়িয়েছে ইতালী প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে।অতি আগ্রহের সাথে নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদেরকে দেখা যায় পিঠা খেতে । প্রবাসে পরবর্তি প্রজন্মও পরিচিত হচ্ছে আমাদের দেশের এই ঐতিহ্য বাহি পিঠা সংস্কৃতি, আর এটাই আয়োজকদের লক্ষ্য।
গত ২৬শে ডিসেম্বর তুসকোলানা নারী সংস্থা আয়োজিত শীতকালীন পিঠা উৎসবে সংগঠনের সভাপতি মেরিন খান এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া রহমানের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমিতি ইতালী সাবেক সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু, ইতাল বাংলা সমন্বয় ও উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শাহ মোঃ তাইফুর রহমান ছোটন, বাংলাদেশ সমিতি ইতালী সভাপতি হাসানুজ্জামান কামরুল, সহ সভাপতি এভঃ কামরুজ্জামান, সহ সাধারন সম্পাদক ইমরান চৌধুরী বাবু, মহিলা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইতালী সভাপতি লায়লা শাহ্, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রুনু, মহিলা সংস্থা ইতালী সাধারন সম্পাদক সৈয়দা আরিফা আক্তার, বাংলাদেশ ব্যাংকার ব্যবসায়ী সমিতি ইতালীর সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, রোম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিল আহমেদ, সাংবাদিক মেহেনাস তাব্বাসুম শেলি সহ রোমের সামাজিক ,আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
সংগঠনের অনেকেই ঘরে তৈরি করেছে বিভিন্ন স্বাদের পিঠা। প্রবাসী বাংলাদেশিদের তৈরী নানা ধরণের পিঠা’র বাহারি রঙে সজ্জিত ছিল সাজানো পিঠার টেবিল, প্রবাসীদের পদচারণায় মুখর ছিল রেস্টুরেন্টের হলরুম।
উদ্ভোধন ও আলোচনা পর মেলা ঘুরে দেখেছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। ভাপা পিঠা, পাটি সাপটা পিঠা মুগ পাক্কন, কাটা পিঠা, সেমাই পিঠা, মুক সল্লা পিঠা, কলই পিঠা, ঝিনুক পিঠা, বিবি খানা পিঠা, ফুলি পিঠা, পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, নারকেল ফুল পিঠা সহ নানা ধরণের পিঠার সমারোহ ছিল চোখে পড়ার মত। উপস্থিত সবাই বিভিন্ন ধরণের পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন। প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের সব বয়সের ছেলে মেয়েরা পিঠার স্বাদ গ্রহণ করে।
স্টলের মধ্য থেকে পিঠা বানানোর পদ্ধতি, স্বাস্থ্যসম্মত আর মজাদার পিঠা ইত্যাদি বিবেচনায় করে অতিথিরা তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সব মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি ছিল পুরো বাঙালিয়ানায় পরিপূর্ণ। এ আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো। রেস্টুরেন্টের বিশাল হলরুমে অনুষ্ঠিত এই মেলায় প্রবাসী বাঙালিদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। রোম শহরের দূর অঞ্চল থেকে নানা বয়সের শিশু নারী-পুরুষ মেলায় অংশগ্রহণ করেন।
এই মেলায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মুনিয়া ইসলাম, সিনিয়র সহ সভাপতি তানজিম হুসাইন, সহ সভাপতি বিউটি আক্তার, ডলি আক্তার, সাথি, রিতি, সিপা, নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিরা মনির, উপদেষ্টা রিটা মুরাদ, এছাড়াও সিলভিয়া, রোজি, জুথি, শশি, নীলা সহআরো অনেকেই।
আয়োজক নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন আমরা প্রতিবছরই এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করে থাকি। এবারের পিঠা মেলা ছিল আগের বছরগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমধর্মী ও অনেক বড়।
গ্রামবাংলার পিঠাপুলির স্বাদ প্রবাসের নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ বলে জানান সভাপতি মেরিন খান। তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রজন্মের কাছে দেশীয় ঐতিহ্য তোলে ধরতে শুধু পিঠা উৎসবই নয়, বিভিন্ন ধরনের বাংলা ঐতিহ্যের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো আমরা। এসময় তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।