আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা ও রেমিট্যান্স পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বুধবার (১৮ই ডিসেম্বর) অভিবাসী কর্মীদের মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখার প্রয়াসে প্রতিবারের ন্যায় এবারও ইতালিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে আন্তর্জাতিক অধিবাসী দিবস দূতাবাসের স্থায়ী ভবনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান সিকদার এবং পরিচালনা করেন কাউন্সিলর এরফানুল হক ।
অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক, সামাজিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ গ্রহণ করেন। শুরুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর বানী পাঠ করেন দূতাবাস কর্মকর্তারা।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস প্রতি বছর ১৮ই ডিসেম্বর জাতিসংঘের সব সদস্যভুক্ত দেশে পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে দিনটি বিশ্বব্যাপী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে ঘিরেই এ দিবসের উৎপত্তি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারনে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ আজ রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রবাসীদের জন্য উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দূতাবাস সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। তিনি আরো বলেন,বর্তমানে ১৬২টি দেশে প্রায় এক কোটি অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছেন। দেশমাতৃকার উন্নয়নে ঐ শ্রমিকদের ঘাম-ঝরানো অর্থের যথোপযুক্ত স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদত্ত হয় এবং স্বদেশের উন্নয়নে তারা আরো বেশি ভূমিকা রাখতে পারে,সেই লক্ষ্যে ৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে রেমিট্যান্স পুরস্কার প্রদান করেন।
‘দক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে, অর্থ সম্মান দুই-ই মেলে’- প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের ক্রমবর্ধমান ধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করার জন্য সরকার দক্ষতা উন্নয়নের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপের প্রেক্ষিতে এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্বাচন করা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি আশা করি, বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য প্রবাসীরা নিজ নিজ অবস্থান হতে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করবেন, অভিবাসীদের কল্যাণ ও অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বিশ্বময় সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন এবং অভিবাসন ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। আমাদের সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, অভিবাসী কর্মীরা দেশের গর্ব। বিপুল সংখ্যক অভিবাসী জনগোষ্ঠী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে তাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তারাও গর্বিত অংশীদার।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিদ্যমান শ্রমবাজার সুসংহত ও নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান অব্যাহত রাখবে বলে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে প্রত্যাশা করেন।