যথাযোগ্য মর্যাদা ও নানান আয়োজনের মধ্যদিয়ে প্রতিবছরের মত এবারও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলান মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে ।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিলানে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সকল শ্রেনী পেশার বাংলাদেশী নাগরিক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব দীপংকর তালুকদার।
দিবসের শুরুতে কনসাল জেনারেল ও কর্মকর্তাবৃন্দ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন এবং অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ হতে পাঠের মাধ্যমে দিবসের দ্বিতীয়ভাগের অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে প্রধান অতিথি ও কনসাল জেনারেলসহ কর্মকর্তাগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অত:পর কমিউটির নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদের স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পড়ে শোনানো হয়।
প্রধান অতিথি মিলানে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব নুর মোহাম্মদকে কনস্যুলেট জেনারেল-এর পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীগণ তাঁদের বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তাঁরা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অত:পর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ইটালী থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। ব্যক্তিপর্যায়ে ৪ জন এবং সাংগঠনিক পর্যায়ে ৫টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননার জন্য মনোনীত করা হয়। প্রধান অতিথি দীপংকর তালুকদার বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যে সব ব্যক্তি বা রাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও স্থায়ীত্বের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন তারাই আজ এ দেশের ব্যাপক উন্নয়নের স্বীকৃতি দিয়ে চলেছেন। অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সূচিত সকল উন্নয়ন কর্মসূচীকে এগিয়ে নিতে সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
সভাপতির ভাষণে কনসাল জেনারেল জনাব ইকবাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ যত অল্প সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এত অল্প সময়ে স্বাধীনতা অর্জনের অভিজ্ঞতা কোন দেশের নেই। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এ পাকিস্তানী বাহিনী প্রায় ৯৩০০০ সৈন্য নিয়ে যে আত্মসমর্পন করে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বৃহত্তম আত্মসমর্পনের ঘটনা। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ পাকিস্তানের চারগুন। উন্নয়নের সকল সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। কিছু কিছু সূচকে বাংলাদেশ ভারতের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে। তিনি সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল উন্নয়ন প্রয়াসে সবাইকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানান ।
মিলানে বসবাসরত সঙ্গীত শিল্পী সুচিত্রা রোজারিও ও মনিরুল আলমের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আপ্যায়নের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।