ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটেনে ২০১৬’র রেফারেন্ডামের পর অনিশ্চয়তা আর সংকটের মধ্যি দিয়ে কাটাতে হয় ব্রিটেনকে গত প্রায় তিনটা বছর। সেই অনিশ্চয়তায় ব্রিটেনের রাজনীতিতেও ঘঠেছে অভাবনীয় পরিবর্তন, ব্রিটিশ জনগণও ভোগেছে অনিশ্চয়তায়। ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়ে গোটা দেশটাই ছিল ধাঁয়াটে। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি বিগত দিনগুলোতে ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিধা-দন্ধের মাঝে থাকলেও নির্বাচনের আগে ব্রেক্সিট নিয়ে আবারও রেফারেন্ডামের আভাস দেয়, মানবিক ইস্যুগুলো নিয়ে আসে ভোটারদের মাঝে। কিন্তু এ নির্বাচনের ফলাফলে তার কিছুই পরিলক্ষিত হয় নি।
মিডিয়া এ নির্বাচনকে ‘ব্রেক্সিট নির্বাচন’ হিসেবেই উল্লেখ করেছে। এবং ব্রিটিশ জনগণের অধিকাংশই ব্রেক্সিট কনসপ্টেটাই লুফে নিয়েছে।লেবার লীডারের ঘোষিত শিক্ষা-এনএইচএস-দারীদ্র-অসাম্প্রদায়িকতা কোন কিছুকেই সংখ্যাগরিষ্ট জনগণ লুফে নেয় নি।ব্রিটিশ জনগণ অনিশ্চয়তা থেকেই মুক্তি চেয়েছে, আর সেজন্য ব্রেক্সিট পার্টির মত নতুন পার্টিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পড়েছে।যদিও তাদের কোন প্রার্থীই এ নির্বাচনে বিজয় নিয়ে আসতে পারে নি। কিন্তু তারপরও ব্রেক্সিট পার্টির লীডার নাইজেল ফারাজ খোশ মেজাজেই আছেন। দেখা গেছে এবং শ্যডো চ্যন্সেলার-জন ম্যাকডোনাল্ডও স্বীকার করেছেন, লেবার পার্টির অসংখ্য ভোটার ভোট দিযেছেন কনজারভেটিভ পার্টিতে এমনকি ব্রেক্সিট পার্টিতে।এবং এটা শুধু ব্রেক্সিট ইস্যুর কারনেই।
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে কেনজারভেটিভ পার্টি ৩৬৪ আসন পেয়েছে, প্রতিদ্বন্ধি লেবার পার্টি ২০৩ আসন পেয়ে পার্টির ইতিহাসের এক দুর্বলতম অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। নিবারেল ডেমোক্রেটের লীডার জো সুইনস্টন স্কটল্যান্ডে নিজের আসন খুইয়ে মাত্র ১১ টি আসনে জয়ী হতে পেরেছে।স্কটল্যান্ড ন্যাশনালিস্ট পার্টি ৪৮ আসন পেয়ে নিকোলা স্টারজন আবারও স্বাধীন স্কটল্যান্ডের স্বপ্ন দেখছেন।
লেবার লীডার জেরেমি করবিন ইতিমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন, তিন দেশের আগামি সাধারন নির্বাচনে দলে নেতৃত্ব দেবেন না, তিনি পদত্যাগ করবেন। দলের নেতৃত্ব নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা।
আবারও ফিরে এসেছেন বরিস জনসন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রীটে, আগের মতই তাঁর ঘোষণা এসেছে যে কোনভাবেই তিনি ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করবেন।তিনি তাঁর বক্তৃতায় এমনকি লেবার পার্টির ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। বরিস ঘোষনা দিয়েছেন ‘নো বাট’ ‘নো ইফ’ ‘ নো সেকেন্ড রেফারেন্ডাম’। তিনি ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে ৩১ জানুয়ারীর মধ্যে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ ঘঠাবেনই।
উল্লেখ করা যেতে পারে, লেবার পার্টির এই ভূমিধ্বসের মাঝেও বাংলাদেশি বংশদ্ভোত চারজন নারী লেবার পার্টি থেকেই বিজয় নিয়ে এসেছেন। নিজেদের জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন নারী এমপি রুশনারা আলী, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও রূপা হক। নতুনভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আপসানা বেগম।এই চারজনই বিজয়ী হয়েছেন গ্রেটার লন্ডন থেকে।