স্পেনের জাতীয় নির্বাচনে ফের জয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে ফের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ৩৫০টি আসনের মধ্যে ১২০টি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের দল।আর ৮৮ আসন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিরোধী কনজারভেটিভ পপুলার পার্টি। গত নির্বাচনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে কট্টর ডানপন্থি ভক্স পার্টি। মধ্যম ডানপন্থি সিটিজেনস পার্টি জনপ্রিয়তা হারিয়েছে প্রকটভাবে। গতবারের নির্বাচনে ৫৭ আসনে তৃতীয়স্থানে থাকা এই ৪৭ আসন হারিয়ে পেয়েছে ১০টি।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১৭৬ আসনের জন্য লড়াই করে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। চলতি বছরের ২৮ এপ্রিলের অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনের তুলনায় এই নির্বাচনের ফলাফলে সোশ্যালিস্ট পার্টি সর্বোচ্চ আসন পেলেও গত নির্বাচনের তুলনায় আসন হারিয়েছে ৩টি। অন্যদিকে পপুলার পার্টির আসন বেড়ে মোট আসন পেয়েছে ৮৮টি, যা গত নির্বাচন থেকে তারা ২২টি আসন বেশি পেয়েছে।
নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সর্বোচ্চ আসন পাওয়া সোশ্যালিস্ট পার্টি তাদের সমমনা বামপন্থি দলগুলোকে সাথে নিয়ে জোটবদ্ধ সরকার গঠন করতে চাইবে। অন্যদিকে, নির্বাচনে বামপন্থি দল ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি জয় পেলেও, ডানপন্থি রাজনৈতি দলগুলো সম্মিলিতভাবে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। ফলে ডানপন্থি পপুলার পার্টি তৃতীয় বিজয়ী দল ভক্স-এর পাশাপাশি সমমনা ছোট দলগুলোর সাথে জোটবদ্ধ হবারও সম্ভাবনা রয়েছে।
ভোটে জয়ী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নির্বাচনে জয়ী হয়েছি বলে দেশবাসীকে ধন্যবাদ। এবার দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে সব চেষ্টাই করব। সব দলের জন্যেই আলোচনার দরজা খোলা। সবার অংশগ্রহণে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে চাই। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।
স্পেনে গত চার বছরে চতুর্থবারের মতো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো রোববার। আগের বারের তুলনায় ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। গত ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক দলগুলো সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসনের জন্য জোটবদ্ধ হতে না পারার কারণে নির্বাচিত সরকার ছাড়াই দেশটি পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমান নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলো নিজেদের মধ্যে কোয়ালিশন গঠন করলে, নতুন সরকার পেতে দেশটি অন্তত ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচিত সরকার গঠন করলেও, গত এপ্রিল থেকে সামনে বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৯ মাস নির্বাচিত সরকার ছাড়াই দেশটি চলবে। একই বছর পরপর দুটি নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও সরকার গঠনের জন্য দলগুলো রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে জনগণকে নির্বাচিত সরকার উপহার দিতে পারবে কিনা-সেটাই এখন স্পেনের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।