প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট দেশেই ভোটার করার জন্য একটি আলাদা বিধিমালা প্রণয়ন করেছে নির্বাচন কমিশন ইসি। এতে প্রবাসীদের ভোটার হতে আর কোনো আইনি বাঁধা থাকলো না। চলতি সপ্তাহেই অনলাইনে আবেদন শুরুর জন্য আলাদা সার্ভার প্রস্তুত করা হচ্ছে বলেও ইসির পক্ষ থেকে জানা গেছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহের কাজ শুরুর জন্য সব প্রক্রিয়া গুছিয়ে এনেছে কমিশন। ইসি প্রণীত প্রবাসীদের ভোটার জন্য বিধিমালায় অন্তত আটটি তথ্য বেশি দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এজন্য বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে ফরম-২(ক)। দেশে বসবাসরত নাগরিকদের ফরম-২ এবং বিদেশি নাগরিকরা যাতে দ্বৈত ভোটার হতে না পারে, সেজন্য ৩২টি বিশেষ এলাকার জন্য ফরম-২ এর সঙ্গে বিশেষ তথ্য ফরম পূরণ করতে হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, চলতি সপ্তাহেই অনলাইনে আবেদনের জন্য একটি পৃথক সার্ভার তৈরি করে ঘোষণা দেওয়া হবে। যেখানে যুক্তরাজ্য, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরবের প্রবাসীরা এ সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে সুযোগ পাবেন কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
এনআইডি মহাপরিচালক জানান, আমরা আমাদের নাগরিকের দোড়গোরায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। তাদের সুবিধার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। তাদের সমস্যা মাথায় রেখেই আমরা সকল কিছু সম্পন্ন করছি।
সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই সম্প্রতি ইসি সচিব আলমগীর স্বাক্ষরিত ভোটার তালিকা প্রণয়ন বিধিমালা সংশোধনের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে-বসবাসরত দেশে ইসির স্থাপিত রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে গিয়ে কিংবা অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তিনি সর্বশেষ যে এলাকায় বসবাস করেছেন বা নিজের অথবা বাবার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে তার আবেদন সেই এলাকার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের পর দশ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি ও ভোটারের ছবি তুলে এনআইডি সরবরাহ করা হবে। এর আগের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে ও ইসির ওয়েবসাইটে দাবি-আপত্তির জন্য তালিকা দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো ভুল থাকলে সেটাও সংশোধন করা যাবে।
প্রবাসীদের ফরম পূরণের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পিতার নাম ও মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপ কোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, স্টেট বা প্রোভিঞ্চ, ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম প্রভৃতি ৮ টি তথ্য বেশি দিতে হবে। এছাড়া পাসাপোর্ট নম্বর, টিআইএন নম্বরও উল্লেখ করতে হবে ফর্মে।
দেশে বসবাসরতদের জন্য পিতার নাম বা মাতার নাম বাংলা কিংবা ইংরেজী যে কোনো একটায় লিখলেই হয়। ফরম-২ তে সেভাবে ঘর করা আছে। পাসপোর্ট নম্বর ও টিআইএন না দিলেও চলে, কেননা সেখানে ‘যদি থাকে’ লেখা রয়েছে।
এছাড়া দেশের বসবাসরতদের জন্য ফরমে স্বাক্ষর করতে হয় শনাক্তকারী ব্যক্তির তথ্যের আগেই। আর নামও উল্লেখ করতে হয় না। কিন্তু প্রবাসীদের বেলায় স্বাক্ষর করতে হবে শনাক্তকারী ব্যক্তির তথ্য দেওয়ার পর। অর্থাৎ প্রবাসীদের ফরমে শনাক্তকারীর নাম, এনআইডি নম্বর ও স্বাক্ষর দিতে হবে। তবে এটি অনলাইনের মাধ্যমে দেশের কোন আত্মীয় বা পরিজনের হলেও চলবে।