ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি ও গরিব নারীদের সেলাই মেশিন দেওয়ার মাধ্যমে জন্মস্থান থেকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু করলেন। শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটরিয়ামে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নিজ হাতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি ও ক্রেস্ট দেন। পরে গরিব অসহায় নারীদের সেলাই মেশিন দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হাওর এলাকার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতামূলক সময়ে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পড়ালেখা করে শুধু ভালো রেজাল্ট অর্জন করলেই চলবে না মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। আমি সবসময় তোমাদের পাশে থাকব, সহযোগিতা করব। তবে তোমাদের দেশ ও হাওরের জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দিতে হবে। দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। যেন তোমাদের নিয়ে গর্ব করতে পারি আমি। তোমরা যদি তোমাদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পার, তাহলে এই হাওর আর অবহেলিত থাকবে না। সম্পদে ও মননে উন্নত হয়ে দেশকে পথ দেখাবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব মো. আবদুল হক নূরুর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য লোকজন ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, লে. জে মাহফুজুর রহমান, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আমির হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব শামীমুজ্জান, প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আজিজুল হক ও মিঠামইন উপজেলা চেয়ারম্যান আছিয়া আলম।
রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ বলেন, ২০১৩ সালে প্রাপ্ত স্বাধীনতা পদকের দুই লাখ টাকা দিয়ে এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। মানুষের সহযোগিতায় এ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি অনেকটাই মজবুত হয়েছে। আশা করি এ ফাউন্ডেশন আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র, কর্মসংস্থান, শিক্ষার অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়নসহ সামাজিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে। তিনি অশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, যে মহান কাজ শুরু হলো তা আমার মৃত্যুর পরও যুগের পর যুগ টিকে থাকবে। মিঠামইন থেকে শুরু করে জেলা এরপর দেশ এমনকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাবে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম। মূলত মানুষকে সাহস ও সহযোগিতা দিতেই এ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানের আগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি মিঠামনের রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম ঘুরে দেখেন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের উন্নয়ন কাজগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন।