ক্যাসিনো বাণিজ্য-মাফিয়াতন্ত্র, ঘুঘ-দুর্নীতি, টেন্ডারবাজী, মাস্তানী, পেয়াজের মুল্যবৃদ্ধি, ও ফ্যসীবাদী দুঃশাসনের প্রতিবাদে আজ ( ৩০ অক্টোবর) বিকাল ৪ টায় বিয়ানীবাজার কলেজ রোডের মুখে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য গুঁড়িয়ে দিয়ে চিহ্নিত অপরাধী ও তাদের গডফাদারদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
যুব ইউনিয়ন বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সভাপতি বিয়ানীবাজার মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক কমরেড ফয়সল আহমদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফাহিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি বিয়নীবাজার উপজেলা শাখার উপদেষ্টা অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম চৌধুরী,সিপিবি সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড হাবিবুল ইসলাম চৌধুরী খোকা,সিপিবি বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি কমরেড দয়াময় কুমার দে,সিপিবি বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট আবুল কাসেম ,সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোঃ আনিসুর রহমান।
সাপ্তাহিক দিবালোকের সম্পাদক কমরেড হাসান শাহরিয়ার ,প্রভাষক বিজিত আচার্য্য ,যুব ইউনিয়ন নেতা মুজাহিদুল ইসলাম,আব্দুর রহমান, ইমাম হাসনাত সাজু,আবুল হাসান, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা কাউন্সিলর আকছার হেোসেন ,বিয়ানীবাজার ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আবুল প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সভাপতি ফারাজ আবির সাধারণ সম্পাদক ,সুজন দাস,ইশতিয়াক হিমেল প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেশবাসী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দের ঘুষ-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, লুটপাটের ঘটনা প্রত্যক্ষ করছে। পুলিশের সহযোগিতায় সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে যুবলীগের নেতারা ঢাকার ক্রীড়া ক্লাবগুলোকে ক্যাসিনো বানিয়েছে। তাদের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় অবাধে মদ, জুয়া, দেহব্যবসা চলেছে ক্লাবগুলোতে। এগুলোর অবৈধ আয় থেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছে নিয়ন্ত্রকরা। ভাগ পাচ্ছে গডফাদার দলীয় নেতারা এবং পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। আইন শৃংখলা বাহিনী ক্যাসিনো বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্টদের বাসা-অফিসে অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা, স্বর্ণালংকার, অস্ত্র, মাদক উদ্ধার করেছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে ছাত্র লীগের শীর্ষ নেতারা উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারী থেকে কমিশন দাবি করেছে। তারা কমিশনকে তাদের ‘ন্যায্য হিস্যা’ মনে করে। এ থেকেই বোঝা যায় ঘুষ-দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারীর নিয়ন্ত্রক গ্রেফতারকৃত যবুলীগ নেতার বয়ান থেকে দেখা যাচ্ছে ঘুষের বিনিময়ে কাজ দেয়া হতো এবং এ ঘুষের ভাগিদার আমলা-ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতা সবাই। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১১ বছর যাবত আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় রয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিনা ভোটে ও নৈশকালীন ভোটে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য ব্যবসায়ী-আমলাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন তাদের প্রয়োজন ছিল এবং সে কারণে ব্যবসায়ী-আমলা-দলীয় নেতাদের দুর্নীতি-লুটপাটের কাছে বর্তমান সরকার নতজানু হয়ে পড়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরপেক্ষভাবে এসকল দুর্নীতিবাজ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে জনগণ সরকারের এ উদ্যোগকে আইওয়াশ বলে মনে করবে। নেতৃবৃন্দ ক্ষমতাসীন দলের ভিতরে ও বাইরে ব্যবসায়ী-আমলা-রাজনৈতিক নেতাদের দুষ্ট চক্র গুঁড়িয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, এই অভিযানে চুনোপুঁটি-রাঘব বোয়াল সবাইকে ধরতে হবে। নেতৃবৃন্দ লুটপাটতন্ত্র, মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে শামিল হতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।