বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য কয়েকটি প্রকল্পসহ পাঁচটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল করার ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রোববার দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দেশটির বিনিয়োগকারীরা।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কের উন্নয়ন বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
দুবাইয়ের কনরাড হোটেলে বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষর (বিএইচটিপিএ) কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ২০ সদস্যের সরকারি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ২৫টি নতুন বিনিয়োগ প্রকল্প বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামে সামনে উপস্থাপন করা হয়। যেখানে বিনিয়োগকারীরা সালমান এফ রহমান ও সফররত বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তাদের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় জানানো হয়, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকে (এফডিআই) তরান্বিত করতে বাংলাদেশ একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করছে। ফলে গত বছরে বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তিন দশমিক ৬১ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।’
সম্মেলনে জানানো হয়, এশিয়ান ইনফ্রাক্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এর মতে- ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে বার্ষিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এআইআইবি তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালে অবকাঠামোগত কাজে বিনিয়োগ দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে ৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে হয়েছে।
বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৩৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন দিরহাম) বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। রোববার বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বাংলাদেশে বিনিযোগের এ ঘোষণা দেয়া হয়।
বাংলাদেশিরাই আমিরাতের অর্থনীতিতে প্রধান বিনিয়োগকারী যেখানে ৫০ হাজার ব্যবসা বাংলাদেশি প্রবাসী মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এসব ব্যবসা থেকে প্রায় দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
২০১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭.৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কিছু বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়ে যাবে যা বাংলাদেশকে পৃথিবীতে দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতির দেশে পরিণত করবে। ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে বাংলাদেশের প্রচুর বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগ প্রয়োজন যা প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে বিদ্যুৎ, সড়ক ও পানি সরবরাহে বাংলাদেশকে ২০২০ সাল নাগাদ প্রায় ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হবে।