হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে নানা উদ্যোগসহ ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। গেল মাস আগস্টে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ থেকে ৮৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩০৮ কোটি পাঁচ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৮২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।
এছাড়া প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে ছয়টি হলো মধ্যপ্রাচ্যের। এর মধ্যে আগস্টে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। দেশটি থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৩১ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ২১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্য দেশগুলো হচ্ছে- সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।
আগস্টে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ১১ লাখ ডলার। তৃতীয় দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। চতুর্থ স্থানে থাকা কুয়েত থেকে এসেছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার, ওমান থেকে ১১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যুক্তরাজ্য থেকে ১১ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। কাতার থেকে ৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার। এছাড়া ইতালি থেকে এসেছে ছয় কোটি ২৯ লাখ ডলার এবং বাহরাইন থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে চার কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্যবিদায়ী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়েছে। এ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।
রেমিট্যান্সের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এর আগে গত চার বছরের মধ্যে দেশে ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার।
এরপর ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। আর ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।