ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমের প্রত্যন্ত গ্রাম সুরাপেলামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক গাম্বারাই ভেঙ্কটরমন। প্রতিদিন তিনি ১৮ কিলোমিটার ঘোড়ায় চেপে পড়াতে যান তাঁর প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের। কারন সেখানে রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। পরিবহন ব্যবস্থাও অনুন্নত।
ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ঘোড়া চালিয়ে ১৮ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে পড়াতে যান শিক্ষক গাম্বারাই ভেঙ্কট রমন। প্রতিদিন ঘোড়া নিয়ে টিক সময়েই স্কুলে পৌঁছে যান তিনি। ঝড়-বৃষ্টি, কড়া রোদ কোনো কিছুই তাকে স্কুল যাওয়া ঠেকাতে পারে না।
ভেঙ্কটরমন যে এডভেন্চার কিংবা অভিযান ভাল পান, তা কিন্তু নয়। প্রকৃতিই তাকে এই পথ নির্ধারন করে দিয়েছে। কারন বাস যোগাযোগ নেই, এমনকি মোটর সাইকেল যাত্রাও সেখানে নিরাপদ নয়। প্রত্যন্ত গ্রামের ওই স্কুলে পৌঁছাতে পাহাড়ি ঢালু পথ পেরোতে হয়। যা বাইকে সম্ভব নয়। এমন একটি রাস্তা আছে সেটি দিয়ে হাঁটা তো দূর অস্ত, গাড়ি নিয়ে যাওয়াও মুশকিল। কিন্তু গাম্বারাই তো নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন তার ছাত্র-ছাত্রীদের।
তাই প্রিয় শিক্ষককে গ্রামের বাসিন্দারা সবাই মিলে চাঁদা তুলে ঘোড়া উপহার দিয়েছেন। গ্রামের মানুষের একটাই ইচ্ছে, তাদের সন্তানরা যেন লেখাপড়া শেখার সুযোগ পায়। গ্রামের বাসিন্দা পাঙ্গি সীতারামনের ছেলেও গাম্বারির স্কুলে পড়ে।
তার কথায়, ভেঙ্কটরমন স্যার আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত্ গড়ার জন্যই এত কষ্ট করছেন। গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে ৯ হাজার টাকা জমিয়ে ঘোড়াটি কিনে দিয়েছেন তাকে।
সমাজে প্রচলিত একটি কথা রয়েছে, মা-বাবার পরের আসন শিক্ষাগুরুর। মা-বাবা জন্ম দিলেও, শিক্ষক জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করেন। তাই গুরুর স্থান সবার ওপরে। তেমনই একজন শিক্ষক ভেঙ্কটরমন স্যার।
সূত্র:নিউজ এইটিন।