সৌদি আরবের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি তেল স্থাপনায় ভয়াবহ ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। শনিবার হুথি বিদ্রোহী পরিচালিত আল মাসিরাহ টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে এই হামলাকে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সৌদিতে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ কিংবা দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল জায়ান্ট কোম্পানি আরামকো তাৎক্ষণিকভাবে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেনি।
ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্যে সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব সামরিক জোট ইরান সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে রাজধানী সানা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন হাদি। ফলে দেশটিতে কয়েক বছর ধরে হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
গত কয়েক মাসে সৌদি আরবের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে হুথি বিদ্রোহীরা। শনিবার আল মাসিরাহ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে আরামকোর শায়বাহ তেলক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে প্রথম অভিযানে ১০টি ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে এই হামলা কখন চালানো হয়েছে সেব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি আল মাসিরাহ।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স সৌদির তেল ক্ষেত্রে হামলার ব্যাপারে জানতে আরামকোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু আরামকো এ হামলার ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
হুথির এক মুখপাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের সীমান্ত লাগোয়া শায়বাহ তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনাকে সৌদি ভূখণ্ডে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০১৫ সালে ইয়েমেনে সৌদি জোটের হস্তক্ষেপের পর এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
ওই মুখপাত্র বলেন, তাদের (সৌদি জোটের) আগ্রাসন যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা সৌদি শাসক গোষ্ঠী এবং আগ্রাসী শক্তিকে আরো ভয়াবহ ও ব্যাপক মাত্রায় জবাব দেব।
গত মে মাসে সৌদি আরবের দুটি তেল উত্তোলন স্টেশনে ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করে হুথি বিদ্রোহীরা। হামলায় তেল লাইনে আগুনের সূত্রপাত হলেও তেল উত্তোলন, অপরিশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্যের রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়নি।
তেল স্থাপনার হামলার জবাব দিতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট হুথিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাজধানী সানার বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা পরিচালনা করে।