প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৯ জুলাই লন্ডনে এসেছেন। তাঁর সফর ঘিরে এবার বিরোধী শিবিরে নেই কোন উত্তেজনা।বিক্ষোভ-সমাবেশ করছে না যুক্তরাজ্য বিএনপি। গত ১০ বছরের মধ্যে এটি এক বিরল ঘটনা। তিনি লন্ডনের ওয়েস্টমিনিষ্টারে তাজ হোটেলে অবস্থান করছেন। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর লন্ডনে থাকার কথা রয়েছে। তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে এসেছেন এবং ইতিমধ্যে তাঁর চোখে অস্ত্রপ্রচার হয়েছে লন্ডনের একটা হাসপাতালে।
বরাবরের মত এবারও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি অবস্থান করে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য হোটেলের সামনে স্থান নির্ধারণ করা থাকলেও নেতা-কর্মীদের কোনো জটলা এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয় নি।সেকারণে হোটেলের সামনে কোন পুলিশি তাৎপরতাও নেই ।
তবে বিএনপি গত শুক্রবার কালো পোশাক পরে হিথরো বিমানবন্দরের বাইরে অবস্থান করে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। এবার আগের মতো তারা বিক্ষোভ কিংবা সমাবেশে নেই। যদিও বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যেহেতু এবার প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য এসেছেন, তাই তারা মানবিক কারণেই বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন না। অন্যদিকে বিএনপি’র একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের কোন হোটেলই তাকে হোটেল ভাড়া দিতে চায় না । তাই তারা এবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির বিষয়টাকেও গুরুত্ব দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় এবং তিনি পরে ফোন দেবেন বলে জানালেও আর ফোন করেন নি। তবে লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকার সাথে বিএনপি’র সভাপতি এম এ মালেক এক আলাপ চারিতায় বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, যে সম্মান আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দেখাচ্ছি, তিনিও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি একই সম্মান দেখাবেন। মানবিক দিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে দ্রুত মুক্তি দেবেন, যাতে তিনিও বিদেশে এসে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে পারেন।’ এতে তাঁরা আরও উৎসাহিত হয়ে দেশের জন্য সরকারের সঙ্গে একসাথে কাজ করবেন বলে জানান যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি।
ফাইল ছবি; মে,২০১৯
শুধুমাত্র সভাপতি ,সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বিএনপির বর্তমানে যুক্তরাজ্যে কোন পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই বলে জানিয়েছেন ওল্ডহ্যামের একজন বিএনপি নেতা। বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এবার তাদের বিক্ষোভের কোনো কর্মসূচি নেই। কিন্তু ঠিক কী কারণে বিক্ষোভ করা হচ্ছে না সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানেন না তাঁরা।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু (ভিপি) বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে বিএনপি এমনিতেই দেউলিয়া, দেশে-বিদেশে সবখানেই তাদের অবস্থান নড়বড়ে। এখানকার কর্মীরাও নিজেরা বিভ্রান্ত, তাদের কাছে কোন দিকনির্দেশনা নেই।আমাদের নেত্রী গত কয়েকবার লন্ডনে এসেছন।তাঁর সফরকালিন সময়ে বিএনপি বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে, নীতি-নৈতিকতার ধারে কাছে না গিয়ে তাদের বিক্ষোভ ছিল মূলত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, যা লন্ডন পুলিশ কঠোরভাবে দমন করেছে।স্বাভাবিকভাবেই তাই নেত্রীর গত সফরে তাদের অনেকেই এখানে গ্রেফতার হয়েছে, এবং এখনও অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাই দিকনির্দেশনাহীন বিএনপি এবার তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকছে।
খসরুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিদিনই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীরা সৌজন্য সাক্ষাত করছেন।তিনি তাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলেই তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী যতদিন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেন ততদিনই হোটেলের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ চলতে থাকে। পাশাপাশি বিক্ষোভ দেখায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। ডিম ছোড়াছুড়ি এবং হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিশকে বেগ পেতে হয়।
দেখুন (রিপোর্ট): গত ১মে বুধবার ২০১৯, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ১০ দিনের ‘সরকারি সফরে’ লন্ডন অবস্থানকালীন সময়ে লন্ডনে বাংলাদেশকে হেয় করে বিএনপির বিদ্রুপ এবং ঘৃণা ছড়ানো কথামালা।