ভোলার একটি বাড়ির পুকুরে দেখা যাচ্ছে আলোর ঝলকানি। রহস্যময় এ আলো কোথা থেকে পুকুরে এলো তা কেউ বলতে পারছে না। কেউ বলছে হীরার খনি, কেউ বলছে নাগ-নাগিনীর মাথার মণি। আবার কেউ বলছে হাজার বছর পুরোনো কোনো রাজপ্রসাদ জেগে উঠেছে, তার একটি বাতি জ্বলছে।
এ রহস্যময় ঘটনা নিয়ে চলছে পুরো জেলাব্যাপী তোলপাড়। হাজার হাজার মানুষ ছুটছে সে দৃশ্য দেখার জন্য। ঘটনাটি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গনি মিয়ার সেন্টার এলাকার হাতেম আলী হাওলাদার বাড়ির পুকুরে। বৃস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে ওই পুকুরের চারদিকে রয়েছে পুলিশ পাহারা।
বাড়ির মালিক মো. আল-আমিন বলেন, গত বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে বাড়ির গৃহবধূরা পুকুরে হাতমুখ ধুতে গেলে পুকুরের মাঝখানে একটি গোলাকার আলো দেখতে পায়। রাতে তাদের স্বামী বাড়ি ফিরলে ঘটনাটি খুলে বললে তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আলো আরও বেড়ে যায় এবং পুকুরের কিনারায় চলে আসে। তখন সবার চোখে পড়ে যায়। আলোর ব্যস হবে আনুমানিক ১/২ ফিটের মতো।
স্থানীয় বাসিন্দা আনিস হাওলাদার বলেন, আমার স্ত্রী গত মঙ্গলবার রাতে পুকুরে মাছ ধুতে গেলে সে আলো দেখে আমাকে বলে। কিন্তু আমি গুরুত্ব দেইনি। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ির অন্য গৃহবধূরাও আলো দেখে আমাদের বললে আমরা ভেবেছিলাম কেউ লেজার লাইট জ্বালাচ্ছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যখন আমরা পুকুরের কিনারে দেখলাম তখন বিশ্বাস করলাম।
তিনি বলেন, এটা আসলে কীসের আলো আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। আলো দেখে অনেক লোকজন অনেক কথা বলে। কেউ বলে হীরার খনি, কেউ বলে সাপের মাথার মণি, কেউ বলে পুরোনো কোনো রাজমহল, আবার কেউ সাত রাজার ধন।
উৎসুক হাজার হাজার লোকজন পুকুরের আলো দেখতে আসছে। এদের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেখতে আসা কয়েকজন লোক পুকুরে নামে। তখন তারা হঠাৎ তলিয়ে যাচ্ছিল ওই সময় উপস্থিত জনতা তাদের বাঁশ দিয়ে উদ্ধার করে। তখন ওই বাড়ির লোকজন দেখে অবাক হয়ে বলে গত কয়েকদিন আগে এখানে হাঁটু সমান পানি ছিল। হঠাৎ এত গভীর হলো কেন তারাও জানে না।
তিনি আরও বলেন, পুকুরে নামা দুইজন বলেন সেখানে কোনো একটা ঘরের মতো রয়েছে। ঘরের উপরে মিনারে মতো তারা অনুমান করেছেন। এছাড়াও তারা আরও বলেন, অনেক গভীর কোনো সুরঙ্গের মতো তারা অনুমান করছেন।
এওয়াজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম খোকন বলেন, খবর পেয়ে আমি গিয়ে রহস্যময় আলো দেখতে পাই। অনেকে বাঁশ দিয়ে ওই স্থানে দেখার চেষ্টা করলে কোথাও বাঁশের সঙ্গে শক্ত কিছু আটকে পড়ছে। আবার কোথাও অনেক গভীর।
এদিকে রহস্যময় আলোর বিষয়ে ভয়ে রয়েছেন ওই বাড়ির লোকজন। তারা বলছেন, এটা যদি সাত রাজার ধন-সম্পদ না হয়, তাহলে ভূতের কাজ হতে পারে। এ জন্য আতংকে রয়েছেন। দ্রুত এর তদন্ত করে রহস্যময় ঘটনা অবসানের জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।
চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, আমাকে কেউ এ বিষয়ে বলেনি। এটা হয়তো কোনো হাজার হাজার বছরের পুরোনো কিছু অথবা কোনো গ্যাস জাতীয় কিছু হবে। আমি সকালে সেখানে পরির্দশনে যাব।