ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা । প্রতিনিয়ত একের পর এক চুরি ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে কিন্তু এ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা । প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সকাল ৯ টায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নাঈমুল ইসলাম চৌধুরী শাকিল তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্যাক্সি ফোন( রিয়া, ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন, মানি ট্রান্সফার )ওপেন করেন। সকাল আনুমানিক ৯.১০মিনিটের সময় তার সহযোগী শাহীদ ইসলাম নিশুকে ওয়েস্টান ইউনিয়নের ৬৮১০ ইউরো জমা দেয়ার জন্য তার কাছে দেন। নিশু টাকাগুলো পকেটে নিয়ে বের হন দোকান থেকে ১০মিনিট দূরত্বের ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের অফিসে জমা দেয়ার জন্য। মেইন রাস্তার ফুটপাত দিয়ে নিশু যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন, এমন সময় পিছন থেকে একজন এরাবিক এবং একজন আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ছিনতাইকারী তাকে আক্রমন করে প্রথমে তার চোখের মধ্যে স্প্রে ছুঁড়ে দেয় এবং সাথে সাথে লাথি মেরে তাকে পাকা রাস্তার মধ্যে ফেলে দেয় । একজন তার মাথার মধ্যে পিস্তল ঠেকিয়ে রাখে এবং অন্যজন তার পকেট থেকে টাকাগুলো সহ মানিব্যাগ এবং মোবাইলটি নিযে পালিযে যায়।
নিশু বলছিলেন ঠিক ওই মুহূর্তে তিনি এতটাই ভয়ে আতঙ্কিত ছিলেন যে তার প্রাণনাশের আশঙ্কা করেছিলেন এবং চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না।ওই দুই ছিনতাইকারী তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ফুটবলের মত লাথি মেরে রাস্তার কিনারে ফেলে রেখে টাকা মানিব্যাগ এবং মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।আশেপাশে অনেক পথচারী ঘটনাটির দৃশ্য প্রত্যক্ষ ভাবে দেখলেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি।
এদিকে শাকিল অভিযোগ করেন ২০১৭ সালে তার দোকানের সাটার কেটে রাতের গভীরে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ডাকাতরা দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে এবং কেশ ২২ হাজার ইউরো সহ দোকানের মালামাল চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু ,প্রশাসনের কাছ থেকে তিনি কোনো সহযোগিতা পাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী বলেন সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ থাকার পরও পুলিশ ব্যর্থ হচ্ছে ছিনতাইকারী ডাকাত এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে ।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে প্যারিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা রাস্তাঘাটে চলার পথে ছিনতাই এবং ভিনদেশিদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। প্যারিসের কমিউনিটির ব্যক্তিরা এ নিয়ে প্যারিসের প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২২মে প্রবাসীদের নিরাপত্তাবিষয়ক একটি সভা করেন। ওই সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশী প্রবাসী ব্যবসায়ীদের তারা নিরাপত্তা জোরদার করবেন কিন্তু বাস্তবে তা খুব একটা পরিলক্ষিত হচ্ছে না ।