ঢাকা ০১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না

৩ দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক : কোনো আশ্বাস পেল না বিএনপি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
  • / 319
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

  

জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে আয়োজন, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ এবং অন্তর্বর্তী সরকার পুনর্গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরলেও, সরকারের পক্ষ থেকে এসব দাবির বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি পায়নি বিএনপি। শনিবার (২৪ মে ২০২৫) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি বলে জানান বিএনপি নেতারা।

বিকেল সাড়ে ৭টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহ উদ্দিন আহমদ বৈঠকে অংশ নেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেরিয়ে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হন তারা।

প্রথমেই বিএনপির পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়: ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন, নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিচার। তবে ‘বিচার ও সংস্কার’ একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি জানায়, ক্ষমতায় এলে তারাও প্রক্রিয়াটি অব্যাহত রাখবে।

রোডম্যাপের বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা মিলেছে কি না— এমন প্রশ্নে মোশাররফের জবাব এড়িয়ে যাওয়ায় সাংবাদিকরা পুনরায় স্পষ্ট করে জানতে চান। জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন,“এ রকম কথা হয় নাই। উনি সুনির্দিষ্ট জানান নাই। আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি, হয়তো উনারা প্রেসের মাধ্যমে জানাবেন। আমরা অপেক্ষা করব।”

বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্ট কি না— এমন প্রশ্নে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়:“এখনই প্রতিক্রিয়া জানানোর দরকার নাই। উনাদের প্রেস সেকশন কী বলে, তারপরে প্রতিক্রিয়া দেব।”

পাশ থেকে আমীর খসরু বলেন,“মূলত সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন— এই তিনটি বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। সংস্কারে উনারাও একমত যে, যেখানে ঐকমত্য সম্ভব, সেখানে সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। বিচার ব্যবস্থাও নিজস্ব গতিতে চলবে। সুতরাং ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব— এই কথাও আলোচনা হয়েছে।”

উপদেষ্টাদের অপসারণ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন,“নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য আমরা লিখিতভাবে বলেছি এবং মৌখিকভাবেও জানিয়েছি। কারণ, তাদের কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ।”

প্রধান উপদেষ্টা কোনো আশ্বাস দিয়েছেন কি না— এমন প্রশ্নে জবাব আসে,“সেই আশ্বাস তারা দেখবেন, আমরা আমাদেরটা বলেছি।”

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের নিশ্চয়তা না মিললেও, তা সম্ভব— এমন আলোচনার কথা জানান আমীর খসরু।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন,“অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা, যা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম করবে। নির্বাচন বিলম্ব হলে স্বৈরাচার ফেরার ঝুঁকি তৈরি হবে, যার দায় বর্তমান সরকারের ওপরই বর্তাবে।”

তিনি আরও জানান,“আমরা কখনো প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি; বরং শুরু থেকেই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছি।”

দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে চরম ক্ষোভের কথা জানিয়ে বিএনপি পক্ষ থেকে বলা হয়, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত মামলা-জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে দল।

সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়: প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রাণহানির বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।

শনিবার রাতে যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

বৈঠক শেষে শফিকুর রহমান বলেন,“নির্বাচনের সময় সম্পর্কে জনগণের সুবিধা বিবেচনায় সুনির্দিষ্টতা প্রয়োজন। পাশাপাশি সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচার নির্বাচনপূর্ব শর্ত হিসেবে আমরা রেখেছি।”

জামায়াত নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, বিএনপির দাবির সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য নেই। শফিকুর রহমান বলেন,“প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু মাস বা সপ্তাহ— এমন নির্দিষ্ট রোডম্যাপ এখনো দেননি। আমরা রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছি।”

ইশরাকদের পথ বন্ধ চায় এনসিপি, উপদেষ্টাদের অপসারণে বিরোধিতা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আওয়ামী লীগ শাসনামলে হওয়া সব নির্বাচন বাতিলের দাবি তোলে। সেইসঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টাদের অপসারণ চাওয়া বিএনপির দাবিরও বিরোধিতা করে তারা।

এনসিপি নেতারা বলেন,“শেখ হাসিনার সময়ে হওয়া নির্বাচনগুলো অবৈধ। সে সময় রাতের ভোট ও ডামি প্রার্থীদের মাধ্যমে নির্বাচন হয়েছিল। ফলে সেই নির্বাচনগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে আদালতের মাধ্যমে ওই নির্বাচনগুলো বাতিল করা উচিত।”

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন চ্যালেঞ্জ করে মেয়র হওয়ার রায় পেলেও এখনো দায়িত্ব নিতে পারেননি। ইশরাক সমর্থকদের আন্দোলন রাজধানীতে জনদুর্ভোগ তৈরি করে। এ প্রেক্ষিতে তিনি উপদেষ্টা অপসারণের দাবি তোলেন ও ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।

তবে এনসিপির আহ্বায়ক জানান,“উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাদের প্রতি অবমাননা বা অপবাদ আমরা প্রত্যাখ্যান করি। তাদের নিয়ে রাজনৈতিকভাবে ট্যাগিং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ডিসেম্বর থেকে জুন— নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শনিবার রাতে তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে ইউনূস বলেন— নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এবং তিনি তার প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকবেন।

তিনি বলেন,“সব রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন জানিয়েছে এবং অনুরোধ করেছে নির্বাচন শেষ না করে পদত্যাগ না করতে।”

বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাইলেও এনসিপি ও জামায়াত এতে আপত্তি করেনি। প্রেস সচিব জানান,“বিচার প্রক্রিয়া এ মাসেই শুরু হচ্ছে এবং সেটি সরকারের অগ্রাধিকার। বৈঠক হয়েছে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে।”

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের প্রস্তাব থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

৩ দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক : কোনো আশ্বাস পেল না বিএনপি

আপডেট সময় : ১১:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

  

জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে আয়োজন, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ এবং অন্তর্বর্তী সরকার পুনর্গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরলেও, সরকারের পক্ষ থেকে এসব দাবির বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি পায়নি বিএনপি। শনিবার (২৪ মে ২০২৫) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি বলে জানান বিএনপি নেতারা।

বিকেল সাড়ে ৭টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহ উদ্দিন আহমদ বৈঠকে অংশ নেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেরিয়ে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হন তারা।

প্রথমেই বিএনপির পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়: ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন, নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিচার। তবে ‘বিচার ও সংস্কার’ একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি জানায়, ক্ষমতায় এলে তারাও প্রক্রিয়াটি অব্যাহত রাখবে।

রোডম্যাপের বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা মিলেছে কি না— এমন প্রশ্নে মোশাররফের জবাব এড়িয়ে যাওয়ায় সাংবাদিকরা পুনরায় স্পষ্ট করে জানতে চান। জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন,“এ রকম কথা হয় নাই। উনি সুনির্দিষ্ট জানান নাই। আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি, হয়তো উনারা প্রেসের মাধ্যমে জানাবেন। আমরা অপেক্ষা করব।”

বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্ট কি না— এমন প্রশ্নে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়:“এখনই প্রতিক্রিয়া জানানোর দরকার নাই। উনাদের প্রেস সেকশন কী বলে, তারপরে প্রতিক্রিয়া দেব।”

পাশ থেকে আমীর খসরু বলেন,“মূলত সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন— এই তিনটি বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। সংস্কারে উনারাও একমত যে, যেখানে ঐকমত্য সম্ভব, সেখানে সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। বিচার ব্যবস্থাও নিজস্ব গতিতে চলবে। সুতরাং ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব— এই কথাও আলোচনা হয়েছে।”

উপদেষ্টাদের অপসারণ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন,“নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য আমরা লিখিতভাবে বলেছি এবং মৌখিকভাবেও জানিয়েছি। কারণ, তাদের কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ।”

প্রধান উপদেষ্টা কোনো আশ্বাস দিয়েছেন কি না— এমন প্রশ্নে জবাব আসে,“সেই আশ্বাস তারা দেখবেন, আমরা আমাদেরটা বলেছি।”

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের নিশ্চয়তা না মিললেও, তা সম্ভব— এমন আলোচনার কথা জানান আমীর খসরু।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন,“অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা, যা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম করবে। নির্বাচন বিলম্ব হলে স্বৈরাচার ফেরার ঝুঁকি তৈরি হবে, যার দায় বর্তমান সরকারের ওপরই বর্তাবে।”

তিনি আরও জানান,“আমরা কখনো প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি; বরং শুরু থেকেই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছি।”

দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে চরম ক্ষোভের কথা জানিয়ে বিএনপি পক্ষ থেকে বলা হয়, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত মামলা-জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে দল।

সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়: প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রাণহানির বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।

শনিবার রাতে যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

বৈঠক শেষে শফিকুর রহমান বলেন,“নির্বাচনের সময় সম্পর্কে জনগণের সুবিধা বিবেচনায় সুনির্দিষ্টতা প্রয়োজন। পাশাপাশি সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচার নির্বাচনপূর্ব শর্ত হিসেবে আমরা রেখেছি।”

জামায়াত নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, বিএনপির দাবির সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য নেই। শফিকুর রহমান বলেন,“প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু মাস বা সপ্তাহ— এমন নির্দিষ্ট রোডম্যাপ এখনো দেননি। আমরা রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছি।”

ইশরাকদের পথ বন্ধ চায় এনসিপি, উপদেষ্টাদের অপসারণে বিরোধিতা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আওয়ামী লীগ শাসনামলে হওয়া সব নির্বাচন বাতিলের দাবি তোলে। সেইসঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টাদের অপসারণ চাওয়া বিএনপির দাবিরও বিরোধিতা করে তারা।

এনসিপি নেতারা বলেন,“শেখ হাসিনার সময়ে হওয়া নির্বাচনগুলো অবৈধ। সে সময় রাতের ভোট ও ডামি প্রার্থীদের মাধ্যমে নির্বাচন হয়েছিল। ফলে সেই নির্বাচনগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে আদালতের মাধ্যমে ওই নির্বাচনগুলো বাতিল করা উচিত।”

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন চ্যালেঞ্জ করে মেয়র হওয়ার রায় পেলেও এখনো দায়িত্ব নিতে পারেননি। ইশরাক সমর্থকদের আন্দোলন রাজধানীতে জনদুর্ভোগ তৈরি করে। এ প্রেক্ষিতে তিনি উপদেষ্টা অপসারণের দাবি তোলেন ও ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।

তবে এনসিপির আহ্বায়ক জানান,“উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাদের প্রতি অবমাননা বা অপবাদ আমরা প্রত্যাখ্যান করি। তাদের নিয়ে রাজনৈতিকভাবে ট্যাগিং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ডিসেম্বর থেকে জুন— নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শনিবার রাতে তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে ইউনূস বলেন— নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এবং তিনি তার প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকবেন।

তিনি বলেন,“সব রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন জানিয়েছে এবং অনুরোধ করেছে নির্বাচন শেষ না করে পদত্যাগ না করতে।”

বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাইলেও এনসিপি ও জামায়াত এতে আপত্তি করেনি। প্রেস সচিব জানান,“বিচার প্রক্রিয়া এ মাসেই শুরু হচ্ছে এবং সেটি সরকারের অগ্রাধিকার। বৈঠক হয়েছে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে।”

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের প্রস্তাব থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি বলেও জানান তিনি।