ঢাকা ০২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের মরদেহ চট্টগ্রামে উদ্ধার

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:১২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / 139
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদকে (৭৫) মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ পাওয়া গেছে। হারুন-অর-রশীদ ছিলেন ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট। তার মৃত্যুর বিষয়টি ডেসটিনি মাল্টি পারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন রবিবার (৩ আগস্ট) বিকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান। বিকাল ৪টায় তিনি চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি ভিআইপি কক্ষে ওঠেন। ঘণ্টাখানেক পর তিনি ক্লাব থেকে বেরিয়ে রাত পৌনে ১১টায় ফেরেন।

ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড এমডি রফিকুল আমিন বলেন, ‘আজ সোমবার চট্টগ্রামে একটি মামলায় আদালতে হাজিরা ছিল। এজন্য আমাদের চট্টগ্রামে আসা। আদালতে নির্ধারিত সময়ে না যাওয়ায় তার মোবাইলে ফোন করা হলেও ধরেননি। এ কারণে ক্লাব কর্মকর্তারা রুমে গিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন।’

চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ ক্লাবের গেস্টহাউসের একটি কক্ষে একা ছিলেন। আজ অনেক বেলা পর্যন্ত তিনি কক্ষ থেকে বের না হওয়ায় ক্লাবের লোকজন বিচলিত হন। দুপুর ১২টার পর পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কক্ষের তালা খুলে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসকদের ধারণা কক্ষের মধ্যে রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দল চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে তাঁরা সাবেক সেনাপ্রধানকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

হারুনের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে। তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়।

২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আসেন হারুন। ২০০২ সালের জুনে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও দিয়েছিল।

সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাবেক মহাসচিব হারুন-অর-রশিদ ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন ২০০৬ সালে। পরের কয়েক বছরে আরও বহু ক্ষেত্রে ডেসটিনির ব্যবসা বিস্তৃত হতে দেখা যায়।

কিন্তু জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠলে ২০১২ সালে হারুনকে কারাগারেও যেতে হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের মরদেহ চট্টগ্রামে উদ্ধার

আপডেট সময় : ০৩:১২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদকে (৭৫) মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ পাওয়া গেছে। হারুন-অর-রশীদ ছিলেন ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট। তার মৃত্যুর বিষয়টি ডেসটিনি মাল্টি পারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন রবিবার (৩ আগস্ট) বিকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান। বিকাল ৪টায় তিনি চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি ভিআইপি কক্ষে ওঠেন। ঘণ্টাখানেক পর তিনি ক্লাব থেকে বেরিয়ে রাত পৌনে ১১টায় ফেরেন।

ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড এমডি রফিকুল আমিন বলেন, ‘আজ সোমবার চট্টগ্রামে একটি মামলায় আদালতে হাজিরা ছিল। এজন্য আমাদের চট্টগ্রামে আসা। আদালতে নির্ধারিত সময়ে না যাওয়ায় তার মোবাইলে ফোন করা হলেও ধরেননি। এ কারণে ক্লাব কর্মকর্তারা রুমে গিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন।’

চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ ক্লাবের গেস্টহাউসের একটি কক্ষে একা ছিলেন। আজ অনেক বেলা পর্যন্ত তিনি কক্ষ থেকে বের না হওয়ায় ক্লাবের লোকজন বিচলিত হন। দুপুর ১২টার পর পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কক্ষের তালা খুলে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসকদের ধারণা কক্ষের মধ্যে রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দল চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে তাঁরা সাবেক সেনাপ্রধানকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

হারুনের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে। তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়।

২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আসেন হারুন। ২০০২ সালের জুনে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও দিয়েছিল।

সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাবেক মহাসচিব হারুন-অর-রশিদ ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন ২০০৬ সালে। পরের কয়েক বছরে আরও বহু ক্ষেত্রে ডেসটিনির ব্যবসা বিস্তৃত হতে দেখা যায়।

কিন্তু জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠলে ২০১২ সালে হারুনকে কারাগারেও যেতে হয়।