অগ্রণী ব্যাংকের দুটি লকার খুলে যে ৮৩২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে, তা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একার নয়। শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ পরিবারের সদস্যদের নামে এগুলো জমা রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি স্বর্ণনৌকা ও স্বর্ণের হরিণও পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল কর্পোরেট শাখায় শেখ হাসিনার নামে থাকা লকারে কেবল একটি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া গেছে। আর অগ্রণী ব্যাংকের মতিঝিল প্রিন্সিপাল শাখায় তার নামে খোলা দুটি লকারে ৮৩১ দশমিক ৬৭ ভরি (৯৭০৭ দশমিক ১৬ গ্রাম) স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ওই তিনটি লকার খোলা হয়।
আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে থাকা অনুসন্ধান দল ২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলার অনুমতির আবেদন করে। পরে আদালত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআর-এর একজন কর গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইসি) মনোনীত দুই কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লকার খোলার নির্দেশ দেন।
পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল কর্পোরেট শাখা ও অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির প্রিন্সিপাল শাখায় থাকা মোট তিনটি লকার খোলা হয়। পূবালী ব্যাংকের ১২৮ নম্বর লকারে, যা শেখ হাসিনার নামে, একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে অগ্রণী ব্যাংকের লকার নম্বর ৭৫১/বড়/১৯৬—যা শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে—সেখানে পাওয়া যায় আনুমানিক ৪ হাজার ৯২৩ দশমিক ৬০ গ্রাম স্বর্ণালংকার। একই ব্যাংকের লকার নম্বর ৭৫৩/বড়/২০০—যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সিদ্দিকীর নামে—সেখান থেকে উদ্ধার হয় ৪ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম স্বর্ণালংকার।
আক্তার হোসেন জানান, লকারে থাকা স্বর্ণালংকারের বর্ণনা ও সংযুক্ত চিরকুট অনুযায়ী এগুলো শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের—শেখ রেহানা সিদ্দিকী, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববির হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ইনভেন্টরি তালিকা প্রস্তুতের পর সামগ্রীগুলো সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “ইনভেন্টরি তালিকা যাচাই, মালিকানা নির্ধারণ এবং স্বর্ণকারের মাধ্যমে মূল্য নিরূপণের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মালিকানা ও আইনগত দায়-দায়িত্ব চূড়ান্ত করা হবে।”
















