ঢাকা ০৫:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামলো কীভাবে, টিকবে কতদিন
হঠাৎ যুদ্ধবিরতি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০২:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / 407
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা যখন বড় ধরনের সংঘাতের দিকে এগোচ্ছিল, তখনই হঠাৎ করে এল যুদ্ধবিরতির খবর—ঘোষণা এল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে। ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর মধ্যস্থতাতেই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শনিবার এই ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকানোর কৃতিত্ব নিজের ঘাড়ে নিলেও, এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে একাধিক, পরস্পরবিরোধী বিবরণ সামনে এসেছে। এমনকি, ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সীমান্তে আবারও গোলাগুলির খবর আসে, যা যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল এক বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ এপ্রিল ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে। এর পর দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে। ঠিক এমন সময় তিন দিন পর আসে যুদ্ধবিরতির খবর।

কীভাবে এলো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা

শনিবার বিকেলে ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে ঘোষণা দেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতের আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে।”

উভয় দেশের নেতাদের পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশংসাও করেন ট্রাম্প।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, শুধু যুদ্ধবিরতিতেই নয়, উভয় দেশ নিরপেক্ষ মধ্যস্থতায় বিস্তৃত আলোচনায় বসতেও সম্মত হয়েছে। তাঁর দাবি, গত দুই দিন তিনি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর এই সমঝোতা বাস্তবায়িত হয়েছে।

পাকিস্তান দ্রুত যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিশ্চিত করে, যার পর ভারতও একই কথা জানায়। তবে ভারতের তথ্যমন্ত্রণালয় বলেছে, এই চুক্তি হয়েছে সরাসরি দুই দেশের আলোচনার ভিত্তিতে, বাইরের কোনো দেশের মধ্যস্থতা ছাড়াই। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্পের দাবি কিছুটা খাটো হয়ে পড়ে। ভারত আরও জানায়, ভবিষ্যৎ আলোচনার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এর বিপরীতে, পাকিস্তান আবার স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, “এই অঞ্চলে শান্তি ফেরাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, মার্কিন প্রশাসনের রুবিও আলোচনার শেষ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

বিবরণে পার্থক্য কেন

ভারত ও পাকিস্তান দীর্ঘকাল ধরে শত্রু সম্পর্কের কারণে প্রায় সব বিষয়ে ভিন্ন অবস্থানে থাকে, যুদ্ধবিরতির বিষয়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উদীয়মান পরাশক্তি হিসেবে ভারত আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা এড়িয়ে চলতে চায়, আর পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল বলেই এই ধরনের মধ্যস্থতাকে স্বাগত জানায়।

ওয়াশিংটনের হাডসন ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. অপর্ণা পান্ডে বলেন, “নয়া দিল্লি কখনও ভারত-পাকিস্তান, ভারত-চীন কিংবা অন্য বিরোধে বাইরের মধ্যস্থতা মেনে নেয়নি। পক্ষান্তরে পাকিস্তান সব সময় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ চেয়েছে।”

শনিবারের যুদ্ধবিরতির আগেও উভয় দেশের বিভিন্ন দাবি ও পাল্টা দাবির মধ্যে অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এখন যখন সংঘাত কিছুটা থেমেছে, তখন সবার মনে প্রশ্ন—কে কী অর্জন করল, আর কীভাবে এই সংঘাত শেষ হলো।

শনিবারের ঘটনা

শনিবার সকালে সংঘাত তীব্র থাকলেও বিকেলে হঠাৎ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে, যা অনেককে চমকে দেয়।

সেদিন সকালে পাকিস্তান জানায়, ভারত তাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে—যার মধ্যে ছিল পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও রাজধানী ইসলামাবাদের কাছের ঘাঁটিও।

পাল্টা জবাবে ভারতীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলার দাবি করে পাকিস্তান, জানায়—‘চোখের বদলে চোখ’ নীতি তারা নিয়েছে।

এর পরপরই ভারতীয় কাশ্মীরের শ্রীনগর ও জম্মুতে বিস্ফোরণের খবর আসে। শেহবাজ শরিফ বলেন, পাকিস্তান ভারতীয় আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে।

চার দিন ধরে একে অপরের ভূখণ্ডে চলা আক্রমণ দেখে সবাই ধরে নিয়েছিল, সংঘাত আরও বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা

মাত্র দুই দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স বলেছিলেন, ওয়াশিংটন এমন কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না, যা তাদের সরাসরি সম্পর্কিত নয়। ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, “আমরা কেবল উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানাতে পারি, কিন্তু নিজেরা জড়াতে পারি না।”

তবে পরে দেখা যায়, ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাওয়া গোপন গোয়েন্দা তথ্যে বোঝা যায়—সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে। তখন আর চুপ থাকেনি যুক্তরাষ্ট্র।

সিএনএনকে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল।

যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ

যদিও আপাতত উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে, তবে এই যুদ্ধবিরতি কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, কাশ্মীর অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করছে। পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে, যদিও তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। এবারও পহেলগামের ঘটনার পর ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং নানা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়—যেমন, ভিসা স্থগিত, বাণিজ্য নিষিদ্ধ, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত ইত্যাদি।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামলো কীভাবে, টিকবে কতদিন
হঠাৎ যুদ্ধবিরতি

আপডেট সময় : ০২:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা যখন বড় ধরনের সংঘাতের দিকে এগোচ্ছিল, তখনই হঠাৎ করে এল যুদ্ধবিরতির খবর—ঘোষণা এল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে। ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর মধ্যস্থতাতেই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শনিবার এই ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকানোর কৃতিত্ব নিজের ঘাড়ে নিলেও, এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে একাধিক, পরস্পরবিরোধী বিবরণ সামনে এসেছে। এমনকি, ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সীমান্তে আবারও গোলাগুলির খবর আসে, যা যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল এক বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ এপ্রিল ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে। এর পর দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে। ঠিক এমন সময় তিন দিন পর আসে যুদ্ধবিরতির খবর।

কীভাবে এলো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা

শনিবার বিকেলে ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে ঘোষণা দেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতের আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে।”

উভয় দেশের নেতাদের পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশংসাও করেন ট্রাম্প।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, শুধু যুদ্ধবিরতিতেই নয়, উভয় দেশ নিরপেক্ষ মধ্যস্থতায় বিস্তৃত আলোচনায় বসতেও সম্মত হয়েছে। তাঁর দাবি, গত দুই দিন তিনি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর এই সমঝোতা বাস্তবায়িত হয়েছে।

পাকিস্তান দ্রুত যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিশ্চিত করে, যার পর ভারতও একই কথা জানায়। তবে ভারতের তথ্যমন্ত্রণালয় বলেছে, এই চুক্তি হয়েছে সরাসরি দুই দেশের আলোচনার ভিত্তিতে, বাইরের কোনো দেশের মধ্যস্থতা ছাড়াই। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্পের দাবি কিছুটা খাটো হয়ে পড়ে। ভারত আরও জানায়, ভবিষ্যৎ আলোচনার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এর বিপরীতে, পাকিস্তান আবার স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, “এই অঞ্চলে শান্তি ফেরাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, মার্কিন প্রশাসনের রুবিও আলোচনার শেষ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

বিবরণে পার্থক্য কেন

ভারত ও পাকিস্তান দীর্ঘকাল ধরে শত্রু সম্পর্কের কারণে প্রায় সব বিষয়ে ভিন্ন অবস্থানে থাকে, যুদ্ধবিরতির বিষয়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উদীয়মান পরাশক্তি হিসেবে ভারত আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা এড়িয়ে চলতে চায়, আর পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল বলেই এই ধরনের মধ্যস্থতাকে স্বাগত জানায়।

ওয়াশিংটনের হাডসন ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. অপর্ণা পান্ডে বলেন, “নয়া দিল্লি কখনও ভারত-পাকিস্তান, ভারত-চীন কিংবা অন্য বিরোধে বাইরের মধ্যস্থতা মেনে নেয়নি। পক্ষান্তরে পাকিস্তান সব সময় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ চেয়েছে।”

শনিবারের যুদ্ধবিরতির আগেও উভয় দেশের বিভিন্ন দাবি ও পাল্টা দাবির মধ্যে অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এখন যখন সংঘাত কিছুটা থেমেছে, তখন সবার মনে প্রশ্ন—কে কী অর্জন করল, আর কীভাবে এই সংঘাত শেষ হলো।

শনিবারের ঘটনা

শনিবার সকালে সংঘাত তীব্র থাকলেও বিকেলে হঠাৎ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে, যা অনেককে চমকে দেয়।

সেদিন সকালে পাকিস্তান জানায়, ভারত তাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে—যার মধ্যে ছিল পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও রাজধানী ইসলামাবাদের কাছের ঘাঁটিও।

পাল্টা জবাবে ভারতীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলার দাবি করে পাকিস্তান, জানায়—‘চোখের বদলে চোখ’ নীতি তারা নিয়েছে।

এর পরপরই ভারতীয় কাশ্মীরের শ্রীনগর ও জম্মুতে বিস্ফোরণের খবর আসে। শেহবাজ শরিফ বলেন, পাকিস্তান ভারতীয় আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে।

চার দিন ধরে একে অপরের ভূখণ্ডে চলা আক্রমণ দেখে সবাই ধরে নিয়েছিল, সংঘাত আরও বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা

মাত্র দুই দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স বলেছিলেন, ওয়াশিংটন এমন কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না, যা তাদের সরাসরি সম্পর্কিত নয়। ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, “আমরা কেবল উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানাতে পারি, কিন্তু নিজেরা জড়াতে পারি না।”

তবে পরে দেখা যায়, ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাওয়া গোপন গোয়েন্দা তথ্যে বোঝা যায়—সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে। তখন আর চুপ থাকেনি যুক্তরাষ্ট্র।

সিএনএনকে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল।

যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ

যদিও আপাতত উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে, তবে এই যুদ্ধবিরতি কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, কাশ্মীর অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করছে। পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে, যদিও তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। এবারও পহেলগামের ঘটনার পর ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং নানা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়—যেমন, ভিসা স্থগিত, বাণিজ্য নিষিদ্ধ, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত ইত্যাদি।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত।

তথ্যসূত্র: সিএনএন