ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

বঙ্গবন্ধুকে পঞ্চাশ বছর ধরে হত্যা, কেউ সফল হয়নি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:১৬:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / 196

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বেলায়াত হোসেন মামুন
বাঙালির স্বাধীনতাহীনতার দুঃখ অতি দীর্ঘকালের৷ সেই দুঃখের, অপমানের কষ্ট সম্পর্কে কিছুই জানে না আজকের তারুণ্য৷ এই তারুণ্যের জন্মের পর থেকে ওরা তুলনামূলক এক স্বস্তির বাংলাদেশ পেয়েছে৷ আর তাই ওরা জানে না শত্রু কারা, মিত্র কারা৷
শত্রুর মিশন ভুল জানানো, ভুল শেখানো, ভুল বোঝানো৷ শত্রুরা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস যতটা ধার্মিক নিষ্ঠায় ভুল শেখায়, ভুল বোঝায়, ভুল জানায়৷ মিত্ররা কিন্তু তার কাছাকাছি সাধারণ নিষ্ঠাতেও বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস শেখায় নি৷
কারণ, মিত্রের আছে বিজয়ী হওয়ার গৌরব৷ আর আছে দেশ গড়ার ব্রত৷ তাই ইতিহাসের সত্য বলার, শেখানোর, বোঝানোর দায়িত্ব কিছুটা আলস্যের আড়ালে দুর্বল ছিল৷ সেই সুযোগটা নিতে ভুল করেনি শত্রুরা৷ একটা প্রজন্মের অধিকাংশের মগজে বুঁনে দিতে পেরেছে অন্ধকারের পোকামাকড়৷ আমরা এখন সেই পোকামাকড়ের অবাধ বিস্তার দেখছি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে৷
কিন্তু এই অন্ধকার এবং এই অন্ধকারের পোকামাকড়দের বিস্তার দীর্ঘায়ু পাবে না৷ মানুষ জাগছে৷ মানুষের ঘোর কেটে যাচ্ছে৷ বাংলার মানুষেরা তাদের দেশ, সমাজ এবং সংস্কৃতি বাঁচাতে এই অন্ধকার রুখে দাঁড়াবে৷
বাংলাদেশের মানচিত্রে বসবাসকারী বাঙালি এবং অন্য সকল জাতিসত্তার মানুষেরা যখন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের পরাজিত করবে, বাংলাদেশকে মুক্ত করবে রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং ভিনদেশী দালালদের খপ্পড় থেকে, তখন তাদের অনেক অনেক বিষাদের মাঝে সবচেয়ে প্রবল বিষাদ এবং বেদনা তৈরি হবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধ্বংসের মধ্যযুগীয় বর্বরতার চিহ্নগুলো নিয়ে৷ এ সব চিহ্ন তারা লুকাতে পারবে না৷ আড়াল করতে পারবে না৷ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কলঙ্কের মতই অমোচনীয় কালিমায় ছেয়ে গেছে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মুখ৷ এই কালিমা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধ্বংসের মধ্যযুগীয় বর্বরতার৷ এই কালিমা বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা, গৌরব এবং সম্মানে আঘাতের স্মারক৷
যে জাতি তার জাতিসত্তার অধিকার প্রতিষ্ঠার নায়ককে হত্যা করে তাদের কোনো গৌরব থাকে না৷ তারা অকৃতজ্ঞ মানুষের একটি ‘গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত হয়, জাতি হতে পারে না৷ বাংলাদেশের বাঙালিরা একবার নিজেদের নিজেরা হত্যা করেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে৷ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে৷ সেই কলঙ্ক কিছুটা দূর হয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করে৷
কিন্তু এরপর, গতবছর ৫ আগস্ট থেকে এই জাতির কিছু অমানুষ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধ্বংসের যে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দেশজুড়ে করেছে—তা অমার্জনীয় অপরাধ৷ কিছু মানুষের এই বর্বরতার দায় পুরো জাতির জীবনে জুড়ে গেছে৷ আর এই কালিমা কখনও দূর হবে না৷
বঙ্গবন্ধুর তুলনা বাঙালি জাতির ইতিহাসে কারো সাথে হতে পারে না৷ তিনি বাঙালিকে তাঁর জাতিসত্তার পরিচয়সূচক একটি রাষ্ট্র গড়ে দিয়েছেন৷ এই অর্জন বাঙালির ইতিহাসে কখনও ছিল না৷ তিনি বাঙালিদের একটি ধর্মনিরপেক্ষ ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গড়ে দিয়েছেন৷ এটা যে একটি জাতির ইতিহাসে সর্বকালের সবচেয়ে সেরা অর্জন তা বুঝতে হলে কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস এবং এই জনপদের মানুষের বেদনার আর্তালাপ জানতে হবে৷
যারা এ সব জানে না, তারাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অজ্ঞানতাসূচক মন্তব্য করে৷ আর যারা জানে, তাদের অনেকে রাজনৈতিক অভিপ্রায়ে মিথ্যা বলে, মিথ্যা শেখায়, মিথ্যা বোঝায়৷ বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বকে তারা গত পঞ্চাশ বছর ধরে হত্যা করে চলেছে৷ তবুও তারা সফল হয়নি৷ হবেও না৷
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমরত্ব অর্জন করেছেন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের সেই ক্ষণে, যখন তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন৷ তাঁর আর মৃত্যু নেই৷
আমরা—বাংলাদেশের বাঙালিরা, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসায় এবং কৃতজ্ঞতায় নুয়ে আছি৷ চিরকাল তাই থাকবো৷ আমাদের জন্য ১৫ আগস্ট চিরকালিন শোকের দিন৷
জয় বাংলা৷
১৫ আগস্ট ২০২৫

নিউজটি শেয়ার করুন

বঙ্গবন্ধুকে পঞ্চাশ বছর ধরে হত্যা, কেউ সফল হয়নি

আপডেট সময় : ১০:১৬:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
বেলায়াত হোসেন মামুন
বাঙালির স্বাধীনতাহীনতার দুঃখ অতি দীর্ঘকালের৷ সেই দুঃখের, অপমানের কষ্ট সম্পর্কে কিছুই জানে না আজকের তারুণ্য৷ এই তারুণ্যের জন্মের পর থেকে ওরা তুলনামূলক এক স্বস্তির বাংলাদেশ পেয়েছে৷ আর তাই ওরা জানে না শত্রু কারা, মিত্র কারা৷
শত্রুর মিশন ভুল জানানো, ভুল শেখানো, ভুল বোঝানো৷ শত্রুরা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস যতটা ধার্মিক নিষ্ঠায় ভুল শেখায়, ভুল বোঝায়, ভুল জানায়৷ মিত্ররা কিন্তু তার কাছাকাছি সাধারণ নিষ্ঠাতেও বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস শেখায় নি৷
কারণ, মিত্রের আছে বিজয়ী হওয়ার গৌরব৷ আর আছে দেশ গড়ার ব্রত৷ তাই ইতিহাসের সত্য বলার, শেখানোর, বোঝানোর দায়িত্ব কিছুটা আলস্যের আড়ালে দুর্বল ছিল৷ সেই সুযোগটা নিতে ভুল করেনি শত্রুরা৷ একটা প্রজন্মের অধিকাংশের মগজে বুঁনে দিতে পেরেছে অন্ধকারের পোকামাকড়৷ আমরা এখন সেই পোকামাকড়ের অবাধ বিস্তার দেখছি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে৷
কিন্তু এই অন্ধকার এবং এই অন্ধকারের পোকামাকড়দের বিস্তার দীর্ঘায়ু পাবে না৷ মানুষ জাগছে৷ মানুষের ঘোর কেটে যাচ্ছে৷ বাংলার মানুষেরা তাদের দেশ, সমাজ এবং সংস্কৃতি বাঁচাতে এই অন্ধকার রুখে দাঁড়াবে৷
বাংলাদেশের মানচিত্রে বসবাসকারী বাঙালি এবং অন্য সকল জাতিসত্তার মানুষেরা যখন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের পরাজিত করবে, বাংলাদেশকে মুক্ত করবে রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং ভিনদেশী দালালদের খপ্পড় থেকে, তখন তাদের অনেক অনেক বিষাদের মাঝে সবচেয়ে প্রবল বিষাদ এবং বেদনা তৈরি হবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধ্বংসের মধ্যযুগীয় বর্বরতার চিহ্নগুলো নিয়ে৷ এ সব চিহ্ন তারা লুকাতে পারবে না৷ আড়াল করতে পারবে না৷ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কলঙ্কের মতই অমোচনীয় কালিমায় ছেয়ে গেছে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মুখ৷ এই কালিমা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধ্বংসের মধ্যযুগীয় বর্বরতার৷ এই কালিমা বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা, গৌরব এবং সম্মানে আঘাতের স্মারক৷
যে জাতি তার জাতিসত্তার অধিকার প্রতিষ্ঠার নায়ককে হত্যা করে তাদের কোনো গৌরব থাকে না৷ তারা অকৃতজ্ঞ মানুষের একটি ‘গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত হয়, জাতি হতে পারে না৷ বাংলাদেশের বাঙালিরা একবার নিজেদের নিজেরা হত্যা করেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে৷ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে৷ সেই কলঙ্ক কিছুটা দূর হয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করে৷
কিন্তু এরপর, গতবছর ৫ আগস্ট থেকে এই জাতির কিছু অমানুষ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধ্বংসের যে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দেশজুড়ে করেছে—তা অমার্জনীয় অপরাধ৷ কিছু মানুষের এই বর্বরতার দায় পুরো জাতির জীবনে জুড়ে গেছে৷ আর এই কালিমা কখনও দূর হবে না৷
বঙ্গবন্ধুর তুলনা বাঙালি জাতির ইতিহাসে কারো সাথে হতে পারে না৷ তিনি বাঙালিকে তাঁর জাতিসত্তার পরিচয়সূচক একটি রাষ্ট্র গড়ে দিয়েছেন৷ এই অর্জন বাঙালির ইতিহাসে কখনও ছিল না৷ তিনি বাঙালিদের একটি ধর্মনিরপেক্ষ ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গড়ে দিয়েছেন৷ এটা যে একটি জাতির ইতিহাসে সর্বকালের সবচেয়ে সেরা অর্জন তা বুঝতে হলে কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস এবং এই জনপদের মানুষের বেদনার আর্তালাপ জানতে হবে৷
যারা এ সব জানে না, তারাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অজ্ঞানতাসূচক মন্তব্য করে৷ আর যারা জানে, তাদের অনেকে রাজনৈতিক অভিপ্রায়ে মিথ্যা বলে, মিথ্যা শেখায়, মিথ্যা বোঝায়৷ বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বকে তারা গত পঞ্চাশ বছর ধরে হত্যা করে চলেছে৷ তবুও তারা সফল হয়নি৷ হবেও না৷
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমরত্ব অর্জন করেছেন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের সেই ক্ষণে, যখন তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন৷ তাঁর আর মৃত্যু নেই৷
আমরা—বাংলাদেশের বাঙালিরা, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসায় এবং কৃতজ্ঞতায় নুয়ে আছি৷ চিরকাল তাই থাকবো৷ আমাদের জন্য ১৫ আগস্ট চিরকালিন শোকের দিন৷
জয় বাংলা৷
১৫ আগস্ট ২০২৫