ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

পাঁচ দিনে ৩ অগ্নিকাণ্ড : নাশকতা না দুর্ঘটনা?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:৪০:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • / 101

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুন

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা না দুর্ঘটনা এমন প্রশ্ন উঠেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পরপর তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এমন প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার সরেজমিনে এসে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা এমন অভিযোগকে পাত্তা না দিলেও সরকারের তরফ থেকে এমন অভিযোগকে উস্কে দেওয়া হয়েছে।

সব সময়ই দেখা যায় কিছু ঘটলেই ক্ষমতাসী ও তাদের অনুসারিরা প্রতিপক্ষকে ইঙ্গিত করে দোষারোপ শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে ঝড় বয়ে যায়। আগের সরকারের আমলে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের দরফ থেকে বলা হতো বিরোধী পক্ষ জামায়াত-বিএনপিই নাশকতা করেছে। একই রকম প্রবণতা এখনো চলছ। এখন পলাতক ফ্যাসিবাদীদের দায়ি করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। গুদামে আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। এর দুই দিন পর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটল।

এসব ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।

বিএনপির তরফেও পূর্ব পরিকল্পিত কি না তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

বিবৃতিতে বলা হয় “দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা গভীরভাবে অবগত। আমরা সকল নাগরিককে আশ্বস্ত করতে চাই— নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।

“নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।”

বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই–যদি এসব অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হয়, এবং এর উদ্দেশ্য হয় জনমনে আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টি করা, তবে তারা সফল হবে কেবল তখনই, যখন আমরা ভয়কে আমাদের বিবেচনা ও দৃঢ়তার ওপর প্রাধান্য দিতে দেব। বাংলাদেশ অতীতেও বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। আমরা ঐক্য, সংযম ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করব। আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

তবে বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা না দুর্ঘটনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বেসামরিক বিমান চলাচল উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিমানবন্দরে ঘটনাস্থলে কিছু সাংবাদিকের মুখোমুখি হন উপদেষ্টা। বলেন, “আপনার এত দ্রুত এই প্রশ্ন করাটা কী ঠিক। এটা একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে নাশকতা না এটা দুর্ঘটনা… এটা কী আপনি চান যে আমি একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে দেব এখন? এটা কী একটা সঠিক প্রশ্ন? এই সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে এয়ারপোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা ও ক্ষতি নিরূপণ করা।”

‘নাশকতা কি না’ আরেক সাংবাদিকের একই প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “এখন এই প্রশ্নের কোনো যৌক্তিকতা নাই।”

নিউজটি শেয়ার করুন

পাঁচ দিনে ৩ অগ্নিকাণ্ড : নাশকতা না দুর্ঘটনা?

আপডেট সময় : ১০:৪০:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা না দুর্ঘটনা এমন প্রশ্ন উঠেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পরপর তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এমন প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার সরেজমিনে এসে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা এমন অভিযোগকে পাত্তা না দিলেও সরকারের তরফ থেকে এমন অভিযোগকে উস্কে দেওয়া হয়েছে।

সব সময়ই দেখা যায় কিছু ঘটলেই ক্ষমতাসী ও তাদের অনুসারিরা প্রতিপক্ষকে ইঙ্গিত করে দোষারোপ শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে ঝড় বয়ে যায়। আগের সরকারের আমলে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের দরফ থেকে বলা হতো বিরোধী পক্ষ জামায়াত-বিএনপিই নাশকতা করেছে। একই রকম প্রবণতা এখনো চলছ। এখন পলাতক ফ্যাসিবাদীদের দায়ি করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। গুদামে আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। এর দুই দিন পর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটল।

এসব ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।

বিএনপির তরফেও পূর্ব পরিকল্পিত কি না তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

বিবৃতিতে বলা হয় “দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা গভীরভাবে অবগত। আমরা সকল নাগরিককে আশ্বস্ত করতে চাই— নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।

“নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।”

বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই–যদি এসব অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হয়, এবং এর উদ্দেশ্য হয় জনমনে আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টি করা, তবে তারা সফল হবে কেবল তখনই, যখন আমরা ভয়কে আমাদের বিবেচনা ও দৃঢ়তার ওপর প্রাধান্য দিতে দেব। বাংলাদেশ অতীতেও বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। আমরা ঐক্য, সংযম ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করব। আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

তবে বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা না দুর্ঘটনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বেসামরিক বিমান চলাচল উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিমানবন্দরে ঘটনাস্থলে কিছু সাংবাদিকের মুখোমুখি হন উপদেষ্টা। বলেন, “আপনার এত দ্রুত এই প্রশ্ন করাটা কী ঠিক। এটা একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে নাশকতা না এটা দুর্ঘটনা… এটা কী আপনি চান যে আমি একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে দেব এখন? এটা কী একটা সঠিক প্রশ্ন? এই সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে এয়ারপোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা ও ক্ষতি নিরূপণ করা।”

‘নাশকতা কি না’ আরেক সাংবাদিকের একই প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “এখন এই প্রশ্নের কোনো যৌক্তিকতা নাই।”