ঢাকা ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু

নির্বাচনের আগেই তারেক ফিরবেন, আশায় ফখরুল; ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৭:১৭:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / 261
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই জনগণ তারেক রহমানের দেশে ফেরার ‘অপেক্ষায় আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (৩ আগস্ট) বিকালে শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমাবেশে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সামনে এখন লড়াই হল বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব লন্ডনে বসে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। গোটা বাংলাদেশের মানুষ অপেক্ষা করে আছে যে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। তার আগে গোটা বাংলাদেশের মানুষ অপেক্ষা করে আছে, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব দেশে ফিরে আসবেন। তাই না? আমরা সবাই তাই চাই না? উনি আসবেন, আমাদের নেতৃত্ব দেবেন, আমাদের পথ দেখাবেন।”

ফখরুল যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, ভিডিও লিংকের মাধ্যমে লন্ডন থেকে সমাবেশে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, যিনি ২০০৮ সাল থেকে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আসুন আজকে আমরা এই শপথ গ্রহণ করি, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বে এই দেশকে সত্যিকার অর্থেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নগুলোকে আমরা বাস্তবায়িত করি… একটা সত্যিকার অর্থেই সুখী সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, অনেক চেষ্টা করা হচ্ছে বাংলাদেশে বিভক্তি সৃষ্টি করবার। আমাদের পাশের দেশে ভারতবর্ষে এই ফ্যাসিস্ট আশ্রয় নিয়েছে, তার লোক নিয়ে সেখান থেকে সে মাঝে মাঝেই হুমকি দিচ্ছে যে তারা বাংলাদেশে আক্রমণ করবে। শুধু তাই নয়, এখানে তারা বিভিন্নভাবে গোলযোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আজকের এই সমাবেশ থেকে আমাদেরকে শপথ দিতে হবে যে, কোনোদিনই আমরা হাসিনাকে আর এই দেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ দেব না। আমাদের শপথ নিতে হবে, আমরা কারো কাছে কোনোদিন মাথা নত করব না। আমরা আমাদের দেশকে নিজেরাই গড়ে তুলব। এটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের তারেক রহমান সাহেব, সেই পথ তিনি দেখাচ্ছেন। তিনি স্লোগান দিয়েছেন–সবার আগে বাংলাদেশ। ওই বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।”

দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব কার–এ প্রশ্ন রেখে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই দায়িত্ব হচ্ছে আপনাদের। এই দায়িত্ব হচ্ছে ছাত্রদের। মেধা এবং বুদ্ধিমত্তার চর্চা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নতুন একটি দেশ গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শাহবাগ মোড়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের এই সমাবেশ শুরু হয় বিকাল ৩টায়। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাক নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্র দলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসার মো. ইয়াহিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বক্তব্য দেন।

ছাত্র দলের সাবেক নেতাদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও রাশেদ ইকবাল খান উপস্থিত ছিলেন সমাবেশে।

ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণে ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি

২৪ এর ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সমাবেশে এই ৯ দফা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি হলো–

১. শিক্ষাঙ্গনে গেস্টরুম নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করে এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের মতো ঘৃণিত চর্চার স্থায়ী বিলোপসাধন এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

২. ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন, পুষ্টিকর খাদ্য, বাসযোগ্য কক্ষ এবং পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ছাত্রদল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

৩. ধর্ম, বর্ণ, জাতিসত্তা, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি জনকল্যাণমুখী, পরমতসহিষ্ণু, উদার এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মী নিবেদিত থাকবে। শিক্ষাক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রগঠনের সব পর্যায়ে নারীর সমান অংশগ্রণ নিশ্চিত করতে এবং নারীদের জন্য শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে।

৪. স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী চিন্তার সন্নিবেশনে রাষ্ট্রকর্তৃক বাংলাদেশপন্থি সার্বজনীন শিক্ষানীতি ও পাঠক্রম প্রণয়নের লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে ছাত্রদল।

৫. বেকারত্ব দূর করতে রাষ্ট্রকর্তৃক কর্মমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে। পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের একাডেমিক এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ এবং এসব পরীক্ষাব্যবস্থাকে দুর্নীতি ও জালিয়াতিমুক্ত করতে ছাত্রদল সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।

৬. মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ছাত্রদল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

৭. ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬৯, ১৯৭৫ এর ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভাবধারার সাংস্কৃতিক চর্চা বেগবান করার লক্ষ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলবে ছাত্রদল।

৮. শিক্ষাঙ্গনগুলোতে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো ভূমিকা রাখবে।

৯. বাংলাদেশে যেন আর কখনও ঘৃণ্য ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ছাত্রদল সদা সোচ্চার থাকবে এবং একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা নিশ্চিত করতে ছাত্রদল আপামর ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তরভাবে কাজ করে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নির্বাচনের আগেই তারেক ফিরবেন, আশায় ফখরুল; ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি

আপডেট সময় : ০৭:১৭:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই জনগণ তারেক রহমানের দেশে ফেরার ‘অপেক্ষায় আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (৩ আগস্ট) বিকালে শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমাবেশে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সামনে এখন লড়াই হল বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব লন্ডনে বসে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। গোটা বাংলাদেশের মানুষ অপেক্ষা করে আছে যে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। তার আগে গোটা বাংলাদেশের মানুষ অপেক্ষা করে আছে, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব দেশে ফিরে আসবেন। তাই না? আমরা সবাই তাই চাই না? উনি আসবেন, আমাদের নেতৃত্ব দেবেন, আমাদের পথ দেখাবেন।”

ফখরুল যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, ভিডিও লিংকের মাধ্যমে লন্ডন থেকে সমাবেশে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, যিনি ২০০৮ সাল থেকে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আসুন আজকে আমরা এই শপথ গ্রহণ করি, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বে এই দেশকে সত্যিকার অর্থেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নগুলোকে আমরা বাস্তবায়িত করি… একটা সত্যিকার অর্থেই সুখী সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, অনেক চেষ্টা করা হচ্ছে বাংলাদেশে বিভক্তি সৃষ্টি করবার। আমাদের পাশের দেশে ভারতবর্ষে এই ফ্যাসিস্ট আশ্রয় নিয়েছে, তার লোক নিয়ে সেখান থেকে সে মাঝে মাঝেই হুমকি দিচ্ছে যে তারা বাংলাদেশে আক্রমণ করবে। শুধু তাই নয়, এখানে তারা বিভিন্নভাবে গোলযোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আজকের এই সমাবেশ থেকে আমাদেরকে শপথ দিতে হবে যে, কোনোদিনই আমরা হাসিনাকে আর এই দেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ দেব না। আমাদের শপথ নিতে হবে, আমরা কারো কাছে কোনোদিন মাথা নত করব না। আমরা আমাদের দেশকে নিজেরাই গড়ে তুলব। এটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের তারেক রহমান সাহেব, সেই পথ তিনি দেখাচ্ছেন। তিনি স্লোগান দিয়েছেন–সবার আগে বাংলাদেশ। ওই বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।”

দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব কার–এ প্রশ্ন রেখে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই দায়িত্ব হচ্ছে আপনাদের। এই দায়িত্ব হচ্ছে ছাত্রদের। মেধা এবং বুদ্ধিমত্তার চর্চা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নতুন একটি দেশ গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শাহবাগ মোড়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের এই সমাবেশ শুরু হয় বিকাল ৩টায়। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাক নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্র দলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসার মো. ইয়াহিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বক্তব্য দেন।

ছাত্র দলের সাবেক নেতাদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও রাশেদ ইকবাল খান উপস্থিত ছিলেন সমাবেশে।

ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণে ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি

২৪ এর ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সমাবেশে এই ৯ দফা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি হলো–

১. শিক্ষাঙ্গনে গেস্টরুম নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করে এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের মতো ঘৃণিত চর্চার স্থায়ী বিলোপসাধন এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

২. ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন, পুষ্টিকর খাদ্য, বাসযোগ্য কক্ষ এবং পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ছাত্রদল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

৩. ধর্ম, বর্ণ, জাতিসত্তা, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি জনকল্যাণমুখী, পরমতসহিষ্ণু, উদার এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মী নিবেদিত থাকবে। শিক্ষাক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রগঠনের সব পর্যায়ে নারীর সমান অংশগ্রণ নিশ্চিত করতে এবং নারীদের জন্য শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে।

৪. স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী চিন্তার সন্নিবেশনে রাষ্ট্রকর্তৃক বাংলাদেশপন্থি সার্বজনীন শিক্ষানীতি ও পাঠক্রম প্রণয়নের লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে ছাত্রদল।

৫. বেকারত্ব দূর করতে রাষ্ট্রকর্তৃক কর্মমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে। পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের একাডেমিক এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ এবং এসব পরীক্ষাব্যবস্থাকে দুর্নীতি ও জালিয়াতিমুক্ত করতে ছাত্রদল সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।

৬. মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ছাত্রদল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

৭. ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬৯, ১৯৭৫ এর ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভাবধারার সাংস্কৃতিক চর্চা বেগবান করার লক্ষ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলবে ছাত্রদল।

৮. শিক্ষাঙ্গনগুলোতে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো ভূমিকা রাখবে।

৯. বাংলাদেশে যেন আর কখনও ঘৃণ্য ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ছাত্রদল সদা সোচ্চার থাকবে এবং একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা নিশ্চিত করতে ছাত্রদল আপামর ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তরভাবে কাজ করে যাবে।