ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

নিজের যুদ্ধের ফাঁদেই ইসরায়েল, ফোরদোতে আঘাতের সক্ষমতা কি আছে?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • / 230
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইরানের পরমাণু কর্মসূচির অগ্রযাত্রা ঠেকাতে দেশটিতে হামলা শুরু করেছিল ইসরায়েল। বিপরীতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের রোষানলেও পড়তে হয় তাদের। এরই মধ্যে হতাহত হয়েছে- বহু ইসরায়েলি। কিন্তু ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কি ঠেকিয়ে দেওয়া গেছে?

সংঘাতের প্রায় এক সপ্তাহ হতে চলল- এখন এসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ঠেকানো তো দূরের কথা- ইরানের প্রধান উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ফোরদোতে আঘাত করার সক্ষমতাও নেই ইসরায়েলের।

এতে স্পষ্ট- গত কয়েকদিনে ইরানের উচ্চপদস্থ সেনাকর্মকর্তাদের হত্যা করে দেশটিকে ক্ষেপিয়ে দেওয়া ছাড়া এখন পর্যন্ত ইসরায়েল কিছুই করতে পারেনি। এমনকি ইসরায়েল যা ভেবেছিল- সমরনেতাদের হত্যা করলে ইরান কাবু হয়ে যাবে। এমনটাও ঘটেনি।

বরং হামলা শুরুর একদিন পরই ইরান পাল্টা হামলা চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের একের পর এক আঘাতে পুরো ইসরায়েল এখন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। ৭৩-এর ইউমকিপুর যুদ্ধের পর এত বড় সংকটে কখনো পড়েনি তেলআবিব।

খামেনিকে হত্যার হুমকি: খড়কুটো ধরে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা

মানুষ বিপদে পড়লে যেমন বাগারম্বর বা অপ্রাসঙ্গিক কর্মকাণ্ড করে বাঁচার চেষ্টা করে। ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও হয়েছে ঠিক তাই।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। ট্রাম্পও খামেনিকে হত্যার হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়েছেন।

এমনটা যদি ইসরায়েল ঘটিয়েও দেয়- ইরানের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। বরঞ্চ ইসরায়েলের ওপর হামলা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। এমনকি হিজবুল্লাহ, হুতি ও পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের মতো ইরানপন্থি সশস্ত্র সংগঠনগুলো সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইরানের শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের যেকোনো প্রচেষ্টাকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে যদি হত্যা করা হয়- তবে রাশিয়া অত্যন্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবে।”

ফোরদো সম্পর্কে যা জানা গেছে

ফোরদো স্থাপনাটি কোম শহরের কাছে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের অবস্থান ৯০ মিটার (প্রায় ৩০০ ফুট) পাহাড়ের নিচে।
এত গভীরে থাকার ফলে এটি বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার মতো শক্তিশালী প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্র দিয়েও ধ্বংস করা কঠিন।

স্থাপনাটি ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী আইআরজিসি পাহারা দিয়ে রাখে। এর চারপাশে রয়েছে- বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, রাডার ও কঠোর সামরিক পাহারা। পাশাপাশে বেশ কয়েকটি নকল স্থাপনাও আছে- যাতে স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করতে গেলে শত্রুপক্ষ বিভ্রান্ত হয়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এখানে মূলত ৬০ শতাংশেরও বেশি উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হয়। এখানেই পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম ইউরেনিয়ামের মজুদ আছে ইরানের।
তবে তেহরান আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ফোরদো নিয়ে অসহায় ইসরায়েল

টাইমস অব ইসরায়েল, হারেৎজ সহ একাধিক ইসরায়েলি গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে- ফোরদো স্থাপনা ধ্বংস করার মতো প্রচলিত অস্ত্র ইসরায়েলের কাছে নেই। তারা কেবল এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে চেয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ইসরায়েলি নেটিজেনরাই প্রশ্ন করছেন, তাহলে ইরানের হামলার মানে কী?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে- ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের সদস্যরা সাধারণ ইসরায়েলিদের রোষানলে পড়ছেন। এমনকি নিরাপদ বাঙ্কারে খোদ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলেও শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন- এরকম একটি ভিডিও এরই মধ্যে এক্সে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এখন নেতানিয়াহুর কাছে ফোরদো ধ্বংসের একমাত্র উপায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অনুরোধ করা। মার্কিন বিমান বাহিনীর বোমারু বিমান বি-টু স্পিরিট ও বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমাই এখন তেলআবিবের ভরসা। কিন্তু ট্রাম্প এরই মধ্যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে দুই সপ্তাহ কূটনীতির জন্য সময় নিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই অবস্থান- ইসরায়েলের জন্য এতটুকু নিশ্চিত করেছে যে অন্তত আরও দুই সপ্তাহ ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের হজম করতে হবে!

ইরানের ফোরদো পরমাণু স্থাপনা

এটিও ইসরায়েলের জন্য কঠিন। তাদের ‘আকাশ প্রতিরক্ষা বিশ্বের অন্যতম সেরা’ এমন দাবি এরই মধ্যে গালগল্পে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ইরানি সেনারা ইসরায়েলের হাইটেক পার্ক লক্ষ্য করে কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে- সেটিই তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকাতে পারেনি। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এরই মধ্যে আহত ১৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

একসময়ের নিরাপদ নগর হিসেবে বিবেচিত তেলআবিব, হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো আর নিরাপদ নয়- এমনটা এরই মধ্যে বাসিন্দারা বুঝতে শুরু করেছে। রাত হলেই এখন আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোতে গিয়ে আশ্রয় নেয় সাধারণ মানুষ। নিঃসন্দেহে এই দুই সপ্তাহের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের জ্বালা ইসরায়েলের মধ্যে নেতানিয়াহুর অবস্থান আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কারণ সাধারণ ইসরায়েলিদের কাছে তিনি এমন এক সরকার প্রধান হয়ে উঠেছেন, যিনি হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের উদ্ধার করতে পারেননি এবং ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র থেকেও সাধারণ ইসরায়েলিদের রক্ষা করতে পারছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট রক্ষা করবে ইসরায়েলকে?

ফোরদো ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট যুদ্ধবিমান ও বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার ওপর যে ভরসা ইসরায়েল করছে- তা খোদ যুক্তরাষ্ট্রের সমর বিশ্লেষকরাও করতে পারছে না।

যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত হওয়ায় তা ধ্বংস করতে প্রচলিত বাংকার-বাস্টার বোমা যথেষ্ট নয়—এমন আশঙ্কা রয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর।

যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট যুদ্ধবিমান

অন্তত দুজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে এমন ধারণা দেওয়া হয়েছে যে, কেবল কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে পৌঁছানো সম্ভব। তবে এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসন চাইলেও ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে পরমাণু বোমা ব্যবহার করতে চাইছেন না।

এদিকে ফক্স নিউজের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশ হিসেবে ইরানের আকৃতি টেক্সাসের থেকেও তিনগুণ। পাহাড় ঘেরা এই দেশটিতে সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস করতে সব বিকল্পই বিবেচনা করছে হোয়াইট হাউস। এমনকি সেটা কৌশলগত পরমাণু বোমাও।

তেলআবিব-জেরুজালেমসহ বহু শহরে আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজের জ্যেষ্ঠ হোয়াইট হাউজ প্রতিনিধি জ্যাকি হেইনরিখ জানান, হোয়াইট হাউজের এক শীর্ষ কর্মকর্তা তাকে নিশ্চিত করেছেন- “গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ অসত্য এবং মার্কিন সেনাবাহিনী পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী যে প্রচলিত বাংকার বোমা দিয়েই ফোর্দোর মতো লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।” ফলে ফোরদো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।

ফোরদো স্থাপনায় পরমাণু বোমার আঘাত ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। ২০২০ সালে গ্রিন পিস স্টাডি অন নিউক্লিয়ার আন্ডারওয়াটার পলিউশন শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ফোরদো অঞ্চলটির নিচে পানির স্তর রয়েছে, যা ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পানির উৎস। বিস্ফোরণে এই পানির স্তর দূষিত হলে দীর্ঘমেয়াদি পানি সংকট ও পানিবাহিত রোগের বিস্তার ঘটাবে। এমনকি এই বিপর্যয়ের ছাপ উপসাগরীয় দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ফোরদোতে পরমাণু বোমার ব্যবহারের আন্তর্জাতিক প্রভাব

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের তিন বছর হয়ে গেছে। লাখ লাখ সেনা হতাহত হয়েছে রাশিয়ার। এরপরেও ক্রেমলিন কৌশলগত পরমাণু বোমা ব্যবহারের মতো পদক্ষেপ নেয়নি।
যদি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই ইরানে পরমাণু বোমা হামলা চালায়- তা রাশিয়াকেও ইউক্রেনে একই পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করতে পারে। ফলে ফোরদোতে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধকালীন সময়ে স্বাভাবিক অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

এ ছাড়াও এমন পদক্ষেপ ইরানসহ তুরস্ক ও সৌদি আরবকেও পরমাণু বোমা তৈরিতে উৎসাহিত করতে পারে। সেক্ষেত্রে ইরানের ফোরদোতে পরমাণু বোমা হামলা চালানোর শঙ্কা কমই বলা যায়।

অন্তহীন যুদ্ধে আটকা ইসরায়েল

ইসরায়েল দীর্ঘ সময় ধরে গাজায় যুদ্ধ করে যাচ্ছে- এই যুদ্ধের শেষ কবে? কেউ জানে না। লড়াইয়ের ময়দানে গুটিকয়েক সেনা মারা গেলেও ইসরায়েলিদের সাধারণ জীবনযাপনে এর কোনো প্রভাব ছিল না।

কিন্তু ইরানের সঙ্গে লড়াই ইসরায়েলের জনজীবন আটকে দিয়েছে। মাইক্রোসফটের অফিস, হাসপাতাল, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রও এখন আর নিরাপদ নয়। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে সাইরেনের শব্দ শোনা মাত্রই ইসরায়েলিদের নিরাপদ বাঙ্কারের উদ্দেশে ছুটতে হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, নেতানিয়াহু যেমন গাজা যুদ্ধের শেষ জানতেন না। ইরানের লড়াইয়ের শেষও তিনি জানেন না।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মাইক্রোসফট ভবনের পাশে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি শক্তি প্রয়োগ করে অন্তত ইসরায়েলের পক্ষে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তেলআবিব এটি যতদ্রুত বুঝবে- মধ্যপ্রাচ্যে তত দ্রুত শান্তি ফিরবে। কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে- শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানের পথ ইসরায়েলের কাছে তত সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। আইডিএফ তা বুঝতেও পেরেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার স্পষ্ট করেই বলেছেন, “ইরানে আমাদের লড়াই দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।” বাস্তবতা হচ্ছে বড় শক্তির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ চালানোর মতো বা রাশিয়ার মতো কোনো বড় দেশ নয় ইসরায়েল। আর ইরানও গাজা কিংবা লেবানন নয়। ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করলে ইরান তা শেষ করবে- যে কথা তেহরান দিয়েছিল, তা যদি রাখতেও পারে- অবাক হওয়ার মতো কিছু ঘটবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিজের যুদ্ধের ফাঁদেই ইসরায়েল, ফোরদোতে আঘাতের সক্ষমতা কি আছে?

আপডেট সময় : ১০:৪৩:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

ইরানের পরমাণু কর্মসূচির অগ্রযাত্রা ঠেকাতে দেশটিতে হামলা শুরু করেছিল ইসরায়েল। বিপরীতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের রোষানলেও পড়তে হয় তাদের। এরই মধ্যে হতাহত হয়েছে- বহু ইসরায়েলি। কিন্তু ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কি ঠেকিয়ে দেওয়া গেছে?

সংঘাতের প্রায় এক সপ্তাহ হতে চলল- এখন এসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ঠেকানো তো দূরের কথা- ইরানের প্রধান উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ফোরদোতে আঘাত করার সক্ষমতাও নেই ইসরায়েলের।

এতে স্পষ্ট- গত কয়েকদিনে ইরানের উচ্চপদস্থ সেনাকর্মকর্তাদের হত্যা করে দেশটিকে ক্ষেপিয়ে দেওয়া ছাড়া এখন পর্যন্ত ইসরায়েল কিছুই করতে পারেনি। এমনকি ইসরায়েল যা ভেবেছিল- সমরনেতাদের হত্যা করলে ইরান কাবু হয়ে যাবে। এমনটাও ঘটেনি।

বরং হামলা শুরুর একদিন পরই ইরান পাল্টা হামলা চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের একের পর এক আঘাতে পুরো ইসরায়েল এখন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। ৭৩-এর ইউমকিপুর যুদ্ধের পর এত বড় সংকটে কখনো পড়েনি তেলআবিব।

খামেনিকে হত্যার হুমকি: খড়কুটো ধরে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা

মানুষ বিপদে পড়লে যেমন বাগারম্বর বা অপ্রাসঙ্গিক কর্মকাণ্ড করে বাঁচার চেষ্টা করে। ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও হয়েছে ঠিক তাই।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। ট্রাম্পও খামেনিকে হত্যার হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়েছেন।

এমনটা যদি ইসরায়েল ঘটিয়েও দেয়- ইরানের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। বরঞ্চ ইসরায়েলের ওপর হামলা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। এমনকি হিজবুল্লাহ, হুতি ও পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের মতো ইরানপন্থি সশস্ত্র সংগঠনগুলো সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইরানের শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের যেকোনো প্রচেষ্টাকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে যদি হত্যা করা হয়- তবে রাশিয়া অত্যন্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবে।”

ফোরদো সম্পর্কে যা জানা গেছে

ফোরদো স্থাপনাটি কোম শহরের কাছে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের অবস্থান ৯০ মিটার (প্রায় ৩০০ ফুট) পাহাড়ের নিচে।
এত গভীরে থাকার ফলে এটি বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার মতো শক্তিশালী প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্র দিয়েও ধ্বংস করা কঠিন।

স্থাপনাটি ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী আইআরজিসি পাহারা দিয়ে রাখে। এর চারপাশে রয়েছে- বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, রাডার ও কঠোর সামরিক পাহারা। পাশাপাশে বেশ কয়েকটি নকল স্থাপনাও আছে- যাতে স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করতে গেলে শত্রুপক্ষ বিভ্রান্ত হয়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এখানে মূলত ৬০ শতাংশেরও বেশি উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হয়। এখানেই পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম ইউরেনিয়ামের মজুদ আছে ইরানের।
তবে তেহরান আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ফোরদো নিয়ে অসহায় ইসরায়েল

টাইমস অব ইসরায়েল, হারেৎজ সহ একাধিক ইসরায়েলি গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে- ফোরদো স্থাপনা ধ্বংস করার মতো প্রচলিত অস্ত্র ইসরায়েলের কাছে নেই। তারা কেবল এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে চেয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ইসরায়েলি নেটিজেনরাই প্রশ্ন করছেন, তাহলে ইরানের হামলার মানে কী?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে- ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের সদস্যরা সাধারণ ইসরায়েলিদের রোষানলে পড়ছেন। এমনকি নিরাপদ বাঙ্কারে খোদ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলেও শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন- এরকম একটি ভিডিও এরই মধ্যে এক্সে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এখন নেতানিয়াহুর কাছে ফোরদো ধ্বংসের একমাত্র উপায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অনুরোধ করা। মার্কিন বিমান বাহিনীর বোমারু বিমান বি-টু স্পিরিট ও বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমাই এখন তেলআবিবের ভরসা। কিন্তু ট্রাম্প এরই মধ্যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে দুই সপ্তাহ কূটনীতির জন্য সময় নিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই অবস্থান- ইসরায়েলের জন্য এতটুকু নিশ্চিত করেছে যে অন্তত আরও দুই সপ্তাহ ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের হজম করতে হবে!

ইরানের ফোরদো পরমাণু স্থাপনা

এটিও ইসরায়েলের জন্য কঠিন। তাদের ‘আকাশ প্রতিরক্ষা বিশ্বের অন্যতম সেরা’ এমন দাবি এরই মধ্যে গালগল্পে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ইরানি সেনারা ইসরায়েলের হাইটেক পার্ক লক্ষ্য করে কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে- সেটিই তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকাতে পারেনি। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এরই মধ্যে আহত ১৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

একসময়ের নিরাপদ নগর হিসেবে বিবেচিত তেলআবিব, হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো আর নিরাপদ নয়- এমনটা এরই মধ্যে বাসিন্দারা বুঝতে শুরু করেছে। রাত হলেই এখন আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোতে গিয়ে আশ্রয় নেয় সাধারণ মানুষ। নিঃসন্দেহে এই দুই সপ্তাহের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের জ্বালা ইসরায়েলের মধ্যে নেতানিয়াহুর অবস্থান আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কারণ সাধারণ ইসরায়েলিদের কাছে তিনি এমন এক সরকার প্রধান হয়ে উঠেছেন, যিনি হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের উদ্ধার করতে পারেননি এবং ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র থেকেও সাধারণ ইসরায়েলিদের রক্ষা করতে পারছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট রক্ষা করবে ইসরায়েলকে?

ফোরদো ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট যুদ্ধবিমান ও বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার ওপর যে ভরসা ইসরায়েল করছে- তা খোদ যুক্তরাষ্ট্রের সমর বিশ্লেষকরাও করতে পারছে না।

যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত হওয়ায় তা ধ্বংস করতে প্রচলিত বাংকার-বাস্টার বোমা যথেষ্ট নয়—এমন আশঙ্কা রয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর।

যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট যুদ্ধবিমান

অন্তত দুজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে এমন ধারণা দেওয়া হয়েছে যে, কেবল কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে পৌঁছানো সম্ভব। তবে এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসন চাইলেও ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে পরমাণু বোমা ব্যবহার করতে চাইছেন না।

এদিকে ফক্স নিউজের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশ হিসেবে ইরানের আকৃতি টেক্সাসের থেকেও তিনগুণ। পাহাড় ঘেরা এই দেশটিতে সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস করতে সব বিকল্পই বিবেচনা করছে হোয়াইট হাউস। এমনকি সেটা কৌশলগত পরমাণু বোমাও।

তেলআবিব-জেরুজালেমসহ বহু শহরে আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজের জ্যেষ্ঠ হোয়াইট হাউজ প্রতিনিধি জ্যাকি হেইনরিখ জানান, হোয়াইট হাউজের এক শীর্ষ কর্মকর্তা তাকে নিশ্চিত করেছেন- “গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ অসত্য এবং মার্কিন সেনাবাহিনী পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী যে প্রচলিত বাংকার বোমা দিয়েই ফোর্দোর মতো লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।” ফলে ফোরদো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।

ফোরদো স্থাপনায় পরমাণু বোমার আঘাত ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। ২০২০ সালে গ্রিন পিস স্টাডি অন নিউক্লিয়ার আন্ডারওয়াটার পলিউশন শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ফোরদো অঞ্চলটির নিচে পানির স্তর রয়েছে, যা ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পানির উৎস। বিস্ফোরণে এই পানির স্তর দূষিত হলে দীর্ঘমেয়াদি পানি সংকট ও পানিবাহিত রোগের বিস্তার ঘটাবে। এমনকি এই বিপর্যয়ের ছাপ উপসাগরীয় দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ফোরদোতে পরমাণু বোমার ব্যবহারের আন্তর্জাতিক প্রভাব

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের তিন বছর হয়ে গেছে। লাখ লাখ সেনা হতাহত হয়েছে রাশিয়ার। এরপরেও ক্রেমলিন কৌশলগত পরমাণু বোমা ব্যবহারের মতো পদক্ষেপ নেয়নি।
যদি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই ইরানে পরমাণু বোমা হামলা চালায়- তা রাশিয়াকেও ইউক্রেনে একই পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করতে পারে। ফলে ফোরদোতে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধকালীন সময়ে স্বাভাবিক অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

এ ছাড়াও এমন পদক্ষেপ ইরানসহ তুরস্ক ও সৌদি আরবকেও পরমাণু বোমা তৈরিতে উৎসাহিত করতে পারে। সেক্ষেত্রে ইরানের ফোরদোতে পরমাণু বোমা হামলা চালানোর শঙ্কা কমই বলা যায়।

অন্তহীন যুদ্ধে আটকা ইসরায়েল

ইসরায়েল দীর্ঘ সময় ধরে গাজায় যুদ্ধ করে যাচ্ছে- এই যুদ্ধের শেষ কবে? কেউ জানে না। লড়াইয়ের ময়দানে গুটিকয়েক সেনা মারা গেলেও ইসরায়েলিদের সাধারণ জীবনযাপনে এর কোনো প্রভাব ছিল না।

কিন্তু ইরানের সঙ্গে লড়াই ইসরায়েলের জনজীবন আটকে দিয়েছে। মাইক্রোসফটের অফিস, হাসপাতাল, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রও এখন আর নিরাপদ নয়। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে সাইরেনের শব্দ শোনা মাত্রই ইসরায়েলিদের নিরাপদ বাঙ্কারের উদ্দেশে ছুটতে হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, নেতানিয়াহু যেমন গাজা যুদ্ধের শেষ জানতেন না। ইরানের লড়াইয়ের শেষও তিনি জানেন না।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মাইক্রোসফট ভবনের পাশে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি শক্তি প্রয়োগ করে অন্তত ইসরায়েলের পক্ষে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তেলআবিব এটি যতদ্রুত বুঝবে- মধ্যপ্রাচ্যে তত দ্রুত শান্তি ফিরবে। কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে- শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানের পথ ইসরায়েলের কাছে তত সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। আইডিএফ তা বুঝতেও পেরেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার স্পষ্ট করেই বলেছেন, “ইরানে আমাদের লড়াই দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।” বাস্তবতা হচ্ছে বড় শক্তির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ চালানোর মতো বা রাশিয়ার মতো কোনো বড় দেশ নয় ইসরায়েল। আর ইরানও গাজা কিংবা লেবানন নয়। ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করলে ইরান তা শেষ করবে- যে কথা তেহরান দিয়েছিল, তা যদি রাখতেও পারে- অবাক হওয়ার মতো কিছু ঘটবে না।