‘গণধর্ষণের’ হুমকি ছাত্রকে ঢাবি থেকে সাময়িক বহিষ্কার
- আপডেট সময় : ০১:২৯:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 119
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্র শিবির প্যানেলের জিএস প্রার্থীর প্রার্থীতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট দায়েরকারী ফাহমিদা আলমকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রক্টরিয়াল সত্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডার অনুযায়ী প্রক্টরের এখতিয়ারভুক্ত সর্বোচ্চ শাস্তিই হলো এই বহিষ্কারাদেশ। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী আলী হুসেনের শ্রেণি রোল ৫৪, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২০২০২১২৭৬৮। তিনি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে করা একটি রিট মামলার পর প্রার্থী ফাহমিদা আলম এই হুমকি পান। তিনি হাইকোর্টে রিট করে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা নিয়ে আপত্তি জানান।
রিটে উল্লেখ করা হয়, ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন, এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী হলেন, তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, একই অভিযোগে একাধিক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীতা বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশন।
সোমবার হাইকোর্টে শুনানি শেষে আদালত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালকে ফরহাদের বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
পরে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে যায়। চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করলে নির্বাচনের বাধা দূর হয়।
এই আদেশের পর সোমবার বিকালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলী হুসেন ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “হাইকোর্টের বিপক্ষে এখন আন্দোলন না করে আগে একে গণধর্ষণের পদযাত্রা করা উচিত।”
তিনি আরও লিখেন, “কেউ এসব শব্দচয়ন দেখে সুশীল হইয়েন না, যে একে সাপোর্ট করবে ওপরের কথাটা তার জন্যও প্রযোজ্য।”
এই পোস্ট প্রকাশের পর ছাত্রদলসহ বিভিন্ন বাম সংগঠন অভিযোগ করে যে আলী হুসেন ছাত্রশিবিরের কর্মী।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং ডাকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
এছাড়া, ‘অপরাজেয় ৭১ অদম্য ২৪’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নাইম হাসান হৃদয় সোমবার রাতে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আলী হুসেন তাদের সংগঠনের কেউ নন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ মাহবুব কায়সারকে প্রধান করে এই কমিটিতে আরও দুই সহকারী প্রক্টর—শেহরীন আমিন ভূইয়া ও রেজাউল করিম সোহাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
















