তারেকের সঙ্গে বৈঠক, ইউনূসকে জামায়াতের তুলোধুনা, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ‘শঙ্কা’
- আপডেট সময় : ০৪:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
- / 271

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দূরত্বের প্রেক্ষাপটে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে রোজার আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠানে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এই বৈঠকের পর নির্বাচন সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
গত ১১ মাস ধরে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসা জামায়াত বলছে, আগামীর নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
শনিবার (১৪ জুন ২০২৫) দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিরসনকল্পে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।”
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এই বৈঠক শেষে দলের প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠান।
এতে বলা হয়, ‘‘জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সরকার প্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সাথে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়।”
প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরে সব দলের সঙ্গে আলোচনা শেষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল বলেও মনে করে দলটি।
কেন ক্ষুব্ধ জামায়াত
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাইতে থাকা বিএনপিকে গত মাসের সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা কোনো আশ্বাস দেননি। ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ইউনূসের অবস্থানের পক্ষে জোরাল অবস্থান নিয়েছিল জামায়াত ও এনসিপি।
ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অবশ্য এপ্রিলের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন ভোটের কথা বলেছিলেন।
তবে শুক্রবার লন্ডনে বৈঠকে তারেক রহমান রোজার আগে নির্বাচনের দাবি জানান। ইউনূস জবাবে ‘হতে পারে’ বলে বক্তব্য রাখেন।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়টি জানান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনে একমত হয়েছেন।
সেদিন জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। দেশকাল নিউজ ডটকমের প্রশ্নে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আমিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘‘সরকার প্রধান কি কিছু বলছে? সেখানে তো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
তবে জামায়াত যে নাখোশ ছিল, সেটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে এরই মধ্যে।
‘নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন ইউনূস’
জামায়াত মনে করে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিএনপির প্রতি প্রধান উপদেষ্টার অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে। তিনি নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
এতে বলা হয়, “তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বিগত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এই ঘোষণার পর লন্ডনে সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি।
“এর মাধ্যমে তিনি একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।”
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে বলেও জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়।



















