ঢাকা ০৯:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

ঢাকায় পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি, ব্যাপক সতর্কতা-তল্লাশি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / 59

ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় শনিবার পুলিশের অবস্থান।

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে পুলিশের অতিরিক্ত অবস্থান জনমনে কৌতূহল ও নানা প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। এটি কোনো বিশেষ নিরাপত্তা প্রস্তুতির অংশ কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ বলছে, এটি তাদের ‘নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার’ আওতায় করা হয়েছে।

শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়তে দেখা যায়। রায়ট গিয়ার, হেলমেট, বডি আর্মারসহ তারা পূর্ণ সরঞ্জামে অবস্থান নেন।

এ সময় সড়কে সন্দেহ হলে পথচারীদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করতে দেখা যায়। সন্দেহজনক যানবাহন থামিয়েও তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকার এক থানার ওসি বলেন, “ডিএমপি হেডকোয়ার্টার থেকে বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আমাদের ডিসপ্লে করার নির্দেশনা রয়েছে। এটি সারা ঢাকাতে সব থানা এলাকাতেই চলছে, এরসঙ্গে অন্যকিছুর সম্পৃক্ততা নেই।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “এটা আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়া; ফোর্স মোবিলাইজেশনের একটা অংশ, যা নিয়মিতই হয়ে থাকে।”

এটি কি কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকির জন্য করা হয়েছে—এ প্রশ্নে তিনি জানান, “না, কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই, এটা আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার অংশ।”

ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়া এক ব্যক্তি বলেন, “আমি মোটরসাইকেলে করে বেশকিছু বইসহ মহাখালীর দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় পুলিশ আমার মোটরসাইকেল থামিয়ে ব্যাগে কী আছে জিজ্ঞাসা করেছে এবং ব্যাগ খুলে বইগুলো দেখেছে।”

সাধারণত কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রস্তুত ও অবস্থান নিতে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তাকে ‘ফোর্স মোবিলাইজেশন’ বলা হয়। এতে রিজার্ভ ফোর্স সক্রিয় করা, জনবল প্রস্তুতি ও সরঞ্জাম মোতায়েন—সবই অন্তর্ভুক্ত থাকে।

সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করছে। ভারত থেকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সম্প্রতি জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বর তারা ‘লকডাউনের’ মতো কর্মসূচি পালন করবেন।

এই পরিস্থিতির সঙ্গে পুলিশের তৎপরতার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা—এ প্রশ্নে কোনো পুলিশ সদস্য স্বীকারোক্তি দেননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “নিয়মিত মিছিলসহ বিভিন্নস্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে আগামী ১৩ নভেম্বর নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সবকিছু মিলিয়ে নিয়মিত তৎপরতার অংশ হিসেবেই পুলিশের এই নিয়মিত তৎপরতা।”

শুক্রবার রাতে ধানমন্ডিতে মশাল মিছিল করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।

এ ঘটনায় মিছিল থেকে সুজিত রঞ্জন সরকার নামে একজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

এর কয়েক ঘণ্টা পর রাত পৌনে ১১টার দিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল চার্চের সামনে একটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে।

গির্জার ফটকের স্টিলের পাতে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়, পরে ভেতর থেকে আরেকটি অবিস্ফোরিত হাতবোমা উদ্ধার করে পুলিশ।

শনিবার সকালে ওই চার্চ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে বেশ কয়েকজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। চার্চের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে এবং কোনো ‘সমস্যা নেই’ বলে জানিয়েছেন রমনা থানার এএসআই নাজমূল হুদা।

এই হামলা সম্পর্কে রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “একটি মোটরসাইকেলে দুইজন এসে ককটেল দুইটি ছুড়ে মারে, এমন প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। তবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

“তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে, কী উদ্দেশ্যে এই হামলা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাকায় পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি, ব্যাপক সতর্কতা-তল্লাশি

আপডেট সময় : ০৯:৩৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে পুলিশের অতিরিক্ত অবস্থান জনমনে কৌতূহল ও নানা প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। এটি কোনো বিশেষ নিরাপত্তা প্রস্তুতির অংশ কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ বলছে, এটি তাদের ‘নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার’ আওতায় করা হয়েছে।

শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়তে দেখা যায়। রায়ট গিয়ার, হেলমেট, বডি আর্মারসহ তারা পূর্ণ সরঞ্জামে অবস্থান নেন।

এ সময় সড়কে সন্দেহ হলে পথচারীদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করতে দেখা যায়। সন্দেহজনক যানবাহন থামিয়েও তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকার এক থানার ওসি বলেন, “ডিএমপি হেডকোয়ার্টার থেকে বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আমাদের ডিসপ্লে করার নির্দেশনা রয়েছে। এটি সারা ঢাকাতে সব থানা এলাকাতেই চলছে, এরসঙ্গে অন্যকিছুর সম্পৃক্ততা নেই।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “এটা আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়া; ফোর্স মোবিলাইজেশনের একটা অংশ, যা নিয়মিতই হয়ে থাকে।”

এটি কি কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকির জন্য করা হয়েছে—এ প্রশ্নে তিনি জানান, “না, কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই, এটা আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার অংশ।”

ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়া এক ব্যক্তি বলেন, “আমি মোটরসাইকেলে করে বেশকিছু বইসহ মহাখালীর দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় পুলিশ আমার মোটরসাইকেল থামিয়ে ব্যাগে কী আছে জিজ্ঞাসা করেছে এবং ব্যাগ খুলে বইগুলো দেখেছে।”

সাধারণত কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রস্তুত ও অবস্থান নিতে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তাকে ‘ফোর্স মোবিলাইজেশন’ বলা হয়। এতে রিজার্ভ ফোর্স সক্রিয় করা, জনবল প্রস্তুতি ও সরঞ্জাম মোতায়েন—সবই অন্তর্ভুক্ত থাকে।

সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করছে। ভারত থেকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সম্প্রতি জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বর তারা ‘লকডাউনের’ মতো কর্মসূচি পালন করবেন।

এই পরিস্থিতির সঙ্গে পুলিশের তৎপরতার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা—এ প্রশ্নে কোনো পুলিশ সদস্য স্বীকারোক্তি দেননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “নিয়মিত মিছিলসহ বিভিন্নস্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে আগামী ১৩ নভেম্বর নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সবকিছু মিলিয়ে নিয়মিত তৎপরতার অংশ হিসেবেই পুলিশের এই নিয়মিত তৎপরতা।”

শুক্রবার রাতে ধানমন্ডিতে মশাল মিছিল করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।

এ ঘটনায় মিছিল থেকে সুজিত রঞ্জন সরকার নামে একজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

এর কয়েক ঘণ্টা পর রাত পৌনে ১১টার দিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল চার্চের সামনে একটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে।

গির্জার ফটকের স্টিলের পাতে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়, পরে ভেতর থেকে আরেকটি অবিস্ফোরিত হাতবোমা উদ্ধার করে পুলিশ।

শনিবার সকালে ওই চার্চ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে বেশ কয়েকজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। চার্চের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে এবং কোনো ‘সমস্যা নেই’ বলে জানিয়েছেন রমনা থানার এএসআই নাজমূল হুদা।

এই হামলা সম্পর্কে রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “একটি মোটরসাইকেলে দুইজন এসে ককটেল দুইটি ছুড়ে মারে, এমন প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। তবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

“তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে, কী উদ্দেশ্যে এই হামলা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”