ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অস্বীকৃতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন
- আপডেট সময় : ১০:৫৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 295

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফর করছেন, যেখানে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে কথিত পাচার হওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধারের জন্য সমর্থন চাইছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে ড. ইউনূস বলেছেন, যুক্তরাজ্যের উচিত ‘নৈতিকভাবে’ তার সরকারকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে ‘চুরি হওয়া’ অর্থ খুঁজে বের করতে সাহায্য করা। এই বেশিরভাগই বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
তবে ইউনূস বলেছেন, স্টারমার এখনও তার সঙ্গে সাক্ষাতে সম্মত হননি। ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার সরাসরি কোনও কথা হয়নি।’ তবে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে স্টারমার সমর্থন করবেন, এ বিষয়ে তার ‘কোনও সন্দেহ নেই’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে স্টারমারের ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনও পরিকল্পনা নেই। তারা এ বিষয়ে আর কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। তিনি লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে বুধবার (১১ জুন) দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বৈঠক না হওয়ার কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন, কিয়ার স্টারমার এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে নেই। তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। এই তথ্যটি সঠিক ছিল না। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশেই অবস্থান করছেন বলে জানা যায়।
ইউনূসের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ খুঁজে বের করতে সহায়তা করছে। ইউনূস বলেন, তার যুক্তরাজ্য সফরের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটেনের কাছ থেকে ‘আরও উদ্দীপনামূলক সমর্থন’ আদায় করা।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে রয়েছেন। তার দাবি, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা হয়েছে। তিনি সেই অর্থ পুনরুদ্ধার করতে চান।
প্রতিবেদনে ইউনূসের সঙ্গে স্টারমারের বৈঠক প্রত্যাখ্যানের কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
তবে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি তার সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান এবং অবৈধ আর্থিক প্রবাহ মোকাবেলার প্রতিশ্রুতিকে ইঙ্গিত করে। হারিয়ে যাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ পুনরুদ্ধার হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তা উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটাবে। এতে নতুন নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থাও বাড়বে।
ভুল স্বীকার করলেন প্রেসসচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম মঙ্গলবার বলেছিলেন, কিয়ার স্টারমার এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে নেই বলে আমরা শুনেছি। তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। তবে এ বিষয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসসচিব। তিনি বলেন, স্টারমার যুক্তরাজ্যেই আছেন।
এখানে একটি মিসটেক (ভুল) হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) লন্ডনে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই ভুলের কথা স্বীকার করেন। প্রেসসচিব বলেন, গতকাল প্রেস কনফারেন্সে আমি বলেছিলাম, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি বলেছিলেন যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সম্ভবত কানাডায় গিয়েছেন। এটাকে অনেকে মিস ইন্টারপ্রেট করেছেন।
আমি বলেছি সম্ভবত। তারপরও আমার একটা মিসটেক হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা যখন দেখলাম, কারেক্ট (সংশোধন) করেছি। উনি এখানেই (যুক্তরাজ্যেই) আছেন।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটেনে স্পেন্ডিং রিভিউ (ভবিষ্যৎ ব্যয়ের পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ) চলছে। বাজেটের স্পেন্ডিং কিভাবে কী হচ্ছে, সেটা রিভিউ হচ্ছে। এটা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ব্যস্ত।



















