‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ : বিএনপির মিছিল থেকে যে সব স্লোগান দেওয়া হলো
- আপডেট সময় : ১০:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
- / 313

জামায়াত-শিবিরকে ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়েছে বিএনপির একটি মিছিল থেকে।
পুরান ঢাকায় এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগানের প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা মিছিল করার সময় জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সামনে এনে এই স্লোগান দেন।
বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে কারকাইল মসজিদের সামনে দিয়ে যাওয়া একটি মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয়: ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়।’ এ সময় পথচারীরা কৌতূহলভরে মিছিলের দিকে তাকাচ্ছিলেন।
১৯৯৯ সাল থেকে ২০২২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত জোটবদ্ধ রাজনীতি করেছে বিএনপি ও জামায়াত। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুই দল পরস্পরকে ঘায়েল করতে নানা বক্তব্য দিচ্ছে।
জামায়াত বিএনপির বিরুদ্ধে দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছে, অন্যদিকে বিএনপি জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকা নিয়ে আক্রমণ করছে।
নয়াপল্টনের জমায়েত শেষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রদলের মিছিল থেকে জামায়াতবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। সমাবেশ শেষে বিজয়নগর, প্রেসক্লাব হয়ে শাহবাগ যাওয়ার সময়ও এসব স্লোগান চলতে থাকে। পরে শাহবাগে গিয়ে আলাদা সমাবেশ করে ছাত্র সংগঠনটি।
জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে যে সব স্লোগান দেওয়া হয়
শাহবাগে জমায়েত হওয়া ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও জাাময়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন:
‘রাজাকার-স্বৈরাচার, মিলে মিলে এক কার’;
‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার’;
‘জামাত-শিবির রাজাকার, গুজব ছড়ায় চমৎকার’;
‘গণতন্ত্র হয়নি শেষ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’;
‘এক বোতল-দুই বিচি, জামাত আর এনসিপি’;
‘বাংলাদেশের গিবত গায়, পীর সাহেব চরমোনাই
কেন এই প্রতিবাদ
গত ৯ জুলাই মিটফোর্ড এলাকায় লাল চাঁদ ওপারে ব্যবসায়ী সোহাগকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়ে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন—যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পাঁচজন নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনার পর জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দল বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগ তোলে। সোহাগ হত্যার জন্য তারেক রহমানকে দায়ী করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়। এসব মিছিলে ব্যবহৃত স্লোগানের ভাষা নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা চলছে।
বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো দাবি করছে, তারেকের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগানের জন্য জামায়াত-শিবিরই দায়ী।
‘সরকারের ইন্ধনে গুপ্ত রাজনীতি’
শাহবাগের সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে দেশে ‘গুপ্ত’ রাজনীতি চলমান রয়েছে।”
তিনি বলেন, দেশে ‘মবতন্ত্র’ কায়েমের চেষ্টা করা হলে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে, ছাত্রদল অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে।
ছাত্রদল নেতা আরও বলেন, “কয়েক বছর পর যখন এই সরকারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, মব নিয়ে জাতির সামনে যখন প্রশ্ন আসবে, তখন এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকারকেই বহন করতে হবে।”
এই কর্মসূচিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও থানার ইউনিটের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।


















