ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু

চাকসুর ইতিহাসে ছাত্রশিবিরের দ্বিতীয় জয়

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:২০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / 67

চাকসু ভবন

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি-জিএসসহ ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি পদে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোট গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এখন পর্যন্ত চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র সাতবার—১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৯০ এবং এবার ২০২৫ সালে।

১৯৮১ সালের নির্বাচনে ছাত্রশিবির পেয়েছিল প্রথম জয়। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র কাছে হেরে যায় তারা।

এরপরের দীর্ঘ তিন দশক চাকসু নির্বাচনই হয়নি।

এবারের নির্বাচন

ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের মো. ইব্রাহিম হোসেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্যানেলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।

জিএস পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন সাঈদ বিন হাবিব। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট। ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট।

এ ছাড়া সহ-খেলাধূলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন তামান্না মাহফুজ স্মৃতি; তিনি স্বতন্ত্র ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী ছিলেন।

ভোটার ২৭ হাজার, প্রার্থী ৪১৫ জন

চট্টগ্রাম নগরী থেকে দূরে পাহাড় ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার ৫১৬ ভোটারের মধ্যে ৬৫ শতাংশের ভোট দেওয়ার তথ্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

এবারের চাকসু নির্বাচনে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে ১৩টি প্যানেলে ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ভিপি, জিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৪১৫ জন। এর মধ্যে পুরষ ৩৪৮ এবং নারী ৪৭ জন।

অপরদিকে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের সংসদ নির্বাচনে ২০৬ পদে প্রার্থী ছিলেন ৪৯৩ জন। নয়টি ছাত্র হলে মোট প্রার্থী ৩৫০ জন, পাঁচ ছাত্রী হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১২৩ জন।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চাকসু নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো ছিল স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ভোটারের ছবিসহ নম্বর আর ওএমআর মেশিনে ভোট গণনাও ছিল প্রথম। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদর্শনের ব্যবস্থাও করে প্রশাসন।

আগের বিজয়ী যারা

পাহাড় ঘেরা ক্যাম্পাসে ১৯৬৬ সালে যাত্রা শুরু করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে; আর আগের নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে।

  • ১৯৭০ সালের প্রথম চাকসু নির্বাচনে ভিপি ও জিএস নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের মোহাম্মদ ইব্রাহীম ও আবদুর রব। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে তৎকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন চাকসু জিএস আবদুর রব।
  • ১৯৭২ সালে দ্বিতীয় নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের শামসুজ্জামান হীরা ভিপি এবং জাসদ ছাত্রলীগের মাহমুদুর রহমান মান্না জিএস নির্বাচিত হন।
  • ১৯৭৪ সালে তৃতীয় নির্বাচনে জাসদ ছাত্রলীগের এস এম ফজলুল হক ভিপি এবং গোলাম জিলানী চৌধুরী জিএস নির্বাচিত হন।
  • ১৯৭৯ সালে চতুর্থ নির্বাচনে ভিপি হন জাসদ ছাত্রলীগের মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী এবং জিএস হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের জমির চৌধুরী।
  • ১৯৮১ সালে পঞ্চম নির্বাচনে ভিপি ও জিএস হন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জসিম উদ্দিন সরকার ও আবদুল গাফফার।
  • ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ নির্বাচনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের প্রার্থী জাতীয় ছাত্রলীগের নাজিম উদ্দিন ভিপি নির্বাচিত হন। জিএস হয়েছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আজিম উদ্দিন আহমদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

চাকসুর ইতিহাসে ছাত্রশিবিরের দ্বিতীয় জয়

আপডেট সময় : ০১:২০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি-জিএসসহ ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি পদে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোট গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এখন পর্যন্ত চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র সাতবার—১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৯০ এবং এবার ২০২৫ সালে।

১৯৮১ সালের নির্বাচনে ছাত্রশিবির পেয়েছিল প্রথম জয়। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র কাছে হেরে যায় তারা।

এরপরের দীর্ঘ তিন দশক চাকসু নির্বাচনই হয়নি।

এবারের নির্বাচন

ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের মো. ইব্রাহিম হোসেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্যানেলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।

জিএস পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন সাঈদ বিন হাবিব। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট। ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট।

এ ছাড়া সহ-খেলাধূলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন তামান্না মাহফুজ স্মৃতি; তিনি স্বতন্ত্র ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী ছিলেন।

ভোটার ২৭ হাজার, প্রার্থী ৪১৫ জন

চট্টগ্রাম নগরী থেকে দূরে পাহাড় ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার ৫১৬ ভোটারের মধ্যে ৬৫ শতাংশের ভোট দেওয়ার তথ্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

এবারের চাকসু নির্বাচনে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে ১৩টি প্যানেলে ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ভিপি, জিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৪১৫ জন। এর মধ্যে পুরষ ৩৪৮ এবং নারী ৪৭ জন।

অপরদিকে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের সংসদ নির্বাচনে ২০৬ পদে প্রার্থী ছিলেন ৪৯৩ জন। নয়টি ছাত্র হলে মোট প্রার্থী ৩৫০ জন, পাঁচ ছাত্রী হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১২৩ জন।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চাকসু নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো ছিল স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ভোটারের ছবিসহ নম্বর আর ওএমআর মেশিনে ভোট গণনাও ছিল প্রথম। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদর্শনের ব্যবস্থাও করে প্রশাসন।

আগের বিজয়ী যারা

পাহাড় ঘেরা ক্যাম্পাসে ১৯৬৬ সালে যাত্রা শুরু করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে; আর আগের নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে।

  • ১৯৭০ সালের প্রথম চাকসু নির্বাচনে ভিপি ও জিএস নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের মোহাম্মদ ইব্রাহীম ও আবদুর রব। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে তৎকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন চাকসু জিএস আবদুর রব।
  • ১৯৭২ সালে দ্বিতীয় নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের শামসুজ্জামান হীরা ভিপি এবং জাসদ ছাত্রলীগের মাহমুদুর রহমান মান্না জিএস নির্বাচিত হন।
  • ১৯৭৪ সালে তৃতীয় নির্বাচনে জাসদ ছাত্রলীগের এস এম ফজলুল হক ভিপি এবং গোলাম জিলানী চৌধুরী জিএস নির্বাচিত হন।
  • ১৯৭৯ সালে চতুর্থ নির্বাচনে ভিপি হন জাসদ ছাত্রলীগের মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী এবং জিএস হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের জমির চৌধুরী।
  • ১৯৮১ সালে পঞ্চম নির্বাচনে ভিপি ও জিএস হন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জসিম উদ্দিন সরকার ও আবদুল গাফফার।
  • ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ নির্বাচনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের প্রার্থী জাতীয় ছাত্রলীগের নাজিম উদ্দিন ভিপি নির্বাচিত হন। জিএস হয়েছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আজিম উদ্দিন আহমদ।