এবার বান্দরবানে এনসিপিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা : দুঃখ প্রকাশ সারজিসের
- আপডেট সময় : ০৭:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
- / 284

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে বান্দরবানে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে একদল শিক্ষার্থী।
‘বান্দরবান ছাত্রসমাজ’ এর ব্যানারে রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে করা এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মূলত পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলার নেতারা।
বান্দরবান প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলার সভাপতি আসিফ ইকবাল বলেন, “৩ জুলাই পঞ্চগড়ের ‘জুলাই পদযাত্রা’ চলাকালে এনসিপি নেতা সারজিস আলম একটি বক্তব্যে বান্দরবানকে ‘শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পাঠানোর জায়গা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এই মন্তব্য শুধু দুঃখজনক নয়, এটি চরম নিন্দনীয়, অবমাননাকর ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য।
“একজন জাতীয় নেতার মুখে এ ধরনের কটূক্তি একটি জেলার মর্যাদাকে হেয় করার পাশাপাশি গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতি রাষ্ট্রীয় বৈষম্য ও অবহেলার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। এই জেলার মর্যাদাকে অপরাধীদের শাস্তির স্থান হিসেবে উল্লেখ করে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষকে অপমান করা হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে এ বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলার সহসভাপতি মাহির ইমতেছার, সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মাহমুদ, ছাত্রনেতা খালিদ বিন নজরুল, আমিনুল ইসলাম।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ সংগঠনটি তিন পার্বত্য জেলার বাঙালিদের অধিকার নিয়ে কাজ করে থাকে।
দুঃখপ্রকাশ করলেন সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা আপনাদের সহযোদ্ধা। আমরা যদি কোনও ভুল করি তাহলে সেই ভুল সংশোধনের মানসিকতা আমাদের সবসময় আছে। কিছু দিন আগে আমারও বান্দরবান নিয়ে অনিচ্ছাকৃত কথা বলেছিলাম। পরক্ষণে আমার মনে হয়েছিল এই কথাটি আমার বলা উচিত হয়নি। আমি ওই বিষয়ে আপনাদের সামনে দুঃখপ্রকাশ করতে চাই।’
রবিবার (২০ জুলাই) রাঙামাটিতে পদযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। দুপুরে একটায় রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমি থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে বনরূপা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামো ও আমলাতন্ত্রে কেউ আপরাধ করলে তাকে উত্তরবঙ্গে না হয় পার্বত্য এলাকায় বদলি করা হয়। এসব অঞ্চলের মানুষ তো ভিন্ন না, তাহলে কেন ওই সব দুর্নীতিবাজকে পানিশমেন্ট (শাস্তি) পোস্টিং দেওয়া হয়। পানিশমেন্ট পোস্টিংয়ের মাধ্যমে কোনও একজন অসৎ অফিসারের সাজা হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি কোনও ভুল করি, তাহলে সেই ভুল সংশোধন করে নেবো। রাজনীতিতে কথার সঙ্গে কথার লড়াই হতে পারে। তবে কথার প্রতিবাদে মঞ্চে আগুন দেওয়া, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা রাজনৈতিক চরিত্র হতে পারে না। এটি ফ্যাসিবাদী চরিত্র। প্রবীণ রাজনীতিবিদরা কথায় কথায় আমাদের সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা বলেন, তাদের কাছ থেকে আমাদের শেখার কিছুই নেই। আগামীর বাংলাদেশে আমরা সম্প্রতির রাজনীতি চাই।’
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ চলাকালে এক বক্তব্যে সারজিস আলম বান্দরবানকে ‘শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পাঠানোর জায়গা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তার ওই বক্তব্যের পর পার্বত্য অঞ্চলের অনেকেই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, রূপাইয়া শ্রেষ্ঠা তংচঙ্গ্যাসহ নাগরিক পার্টি বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
এমসিপি নেতারা এর আগে মার্চ টু গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের এবং কক্সবাজারের চকোরিয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন।


















